বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
এ টি এম রফিক/আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : খুলনার আযমখান সরকারি কমার্স কলেজে ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্রী রিমা খাতুনের যাবতীয় খরচ চলে আশিতিপর নানা মোসলেম গাজীর ভিক্ষার অর্থে। তাতে মনোকষ্ট নেই তার। শুধু শিক্ষাজীবন শেষে একটি চাকরির প্রত্যাশায় খুলনা সার্কিট হাউসে এসেছে নানার হাত ধরে। পিতৃহারা রিমা খাতুনের অসুস্থ্য মায়ের চিকিৎসা চলে ভিক্ষার টাকায়। জেলা প্রশাসকের তত্ত¡াবধানে ভিক্ষুকমুক্তকরণ, ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসন সংস্থা খুলনায় থাকা-খাওয়া ও পড়াশুনার খরচ নিতে আসা রিমা খাতুনের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বৃদ্ধ নানা ও অসুস্থ্য মায়ের সেবা করতে একটি সম্মানজনক চাকরি-ই প্রত্যাশা তার। শুধু রিমা খাতুন নয়। কথা হয় জেলা প্রশাসন থেকে চায়ের দোকানের উপকরণপ্রাপ্ত আমিরণ নেছার সাথে। তিনি বলেন, ‘ভিক্ষা একটা অসম্মানজনক কাজ। জীবনে আর ভিক্ষা করবো না।’ বৃদ্ধ লাল মিয়ার প্রাপ্ত ভ্যানটি চালাবেন তার ভাইপো মাসুম বিল্লাহ। তিনি অঙ্গীকার করেছেন, ভ্যান চালিয়ে উপার্জিত অর্থ দিয়ে বৃদ্ধ চাচার যাবতীয় খরচ নির্বাহের।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো: আব্দুস সামাদ বলেন, খুলনা সার্কিট হাউসে শুক্রবার দুপুরে দাওয়াত করেছিলাম মহানগরীর ৬৪৩ জন ভিক্ষুকে। তাদের দুপুরের খাবারে বিরিয়ানী, পুনর্বাসনের উপকরণ, নগদ অর্থ ও চিকিৎসাসহ ওষুধ দেয়া হয়েছে। সকলেই হাত তুলে জীবনে আর কোনোদিন ভিক্ষা না করার অঙ্গীকার করেছেন। সহায়তা পেয়ে আবার যেনো ভিক্ষাবৃত্তিতে ফিরে না আসে, এ জন্য প্রতিটি জেলা প্রশাসন দফতরে একটি করে মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। পুনর্বাসন সুবিধা পাওয়ার পরও কেউ ভিক্ষাবৃত্তি করলে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করবে।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার জুম্মার নামাজের পরেই এই পবিত্র কাজের সূচনা করা হলো। প্রথম পর্যায়ে খুলনা জেলায় এক হাজার ২১৪, সাতক্ষীরায় ৩ হাজার ৬১, বাগেরহাটে এক হাজার ২৯০, নড়াইলে ৭৯৮, যশোরে ২ হাজার ১৭৯, ঝিনাইদহে ২ হাজার ৩০৬, মাগুরায় এক হাজার ৩৪৫, কুষ্টিয়ায় ২ হাজার ৩২৫, চুয়াডাঙ্গায় এক হাজার ২০৮ ও মেহেরপুর জেলায় ৬৮৩জনকে ডিসেম্বরের মধ্যে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে পুনর্বাসন করা হবে। বাকিদের দ্বিতীয় দফায় আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে সহায়তা ও পুনর্বাসন করা হবে। যে সব ভিক্ষুকের পরিবার-পরিজন নেই, তাদের সমাজসেবা অধিদফতরের পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সক্ষম ভিক্ষুকদের কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছরের জানুয়ারিতে খুলনা বিভাগের সব ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় আসবে এবং দেশের ১ম বিভাগ হিসেবে খুলনা ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণার পরিকল্পনার আশাবাদ ব্যক্ত করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো: আব্দুস সামাদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।