বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আজ সকাল ১০টায় ফেনীর ফুলগাজীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরনের পূর্বঘোষিত প্রোগ্রাম ছিল। কিন্তু আজ সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ঢাকা থেকে ফেনীর মহিপালে এসে পৌঁছলে তাদেরকে পুলিশ বাঁধা দেয়। পরে তারা ফুলগাজীতে ত্রাণ বিতরণ প্রোগ্রাম স্থগিত করে ফেনী শহরের ইসলামপুর রোডস্থ জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক ও খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবদুস সালাম,ফেনী-২ আসনের সাবেক সাংসদ ও খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন ভিপি,চট্রগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম,সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার, হারুনুর রশীদ ভিপি হারুন, গ্রাম সরকার বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহম্মেদ,ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব,আবু তালেব, ফেনী জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহার,যুগ্ম-আহবায়ক প্রফেসর এম এ খালেক,এয়াকুব নবী,আলাউদ্দিন গঠন,আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারীসহ যবদল,ছাত্রদল,স্বেচ্ছাসেবকদল,কৃষকদল,মহিলা দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক আবদুস সালাম বলেন, সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনী এলাকায় আমরা ত্রাণ দিতে যাবো, সে ত্রাণ বিতরণী প্রোগ্রামে আওয়ামীলীগ ক্যাডাররা ও পুলিশ সম্মিলিতভাবে আমাদেরকে বাঁধা দিচ্ছে যেন আমরা সেখানে না যেতে পারি। আওয়ামীলীগ তারা নিজেরাও সাহায্য করবেনা আমাদেরকেও সাহায্য করতে দিবে না। বাংলাদেশে বন্যা হয়েছে এটা তারা কাউকে জানাতে চায় না। এ বিষয়ে জানালে তারা মনে করছে পদ্মা সেতু নিয়ে যেভাবে ডাক ঢোল পিটিয়েছে সেটা স্লান হয়ে যাবে। তিনি বলেন অবৈধ প্রধানমন্ত্রী নিজেই হেলিকপ্টার নিয়ে ঘুরেন, উপর থেকে দেখেন বন্যার পানি কোথায়। নিজে কোনো দূর্যোগপূর্ণ এলাকায় যাননি কোথায় কোনো জায়গায় অসহায় মানুষের হাতে রিলিপ তুলে দেননি। আজকে বিএনপিকে কেনো বাঁধা দেওয়া হলো। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। আমরা বিএনপি ভোটে বিশ্বাস করি,সেই কারণে আজকে জনগণের মাঝে হাজির হয়েছিলাম যাতে জনগণকে আমরা কিছুটা হলেও সাহস দিতে পারবো। সাংবাদিক বন্ধুগণ আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে বলতে চাই, আজকে রাষ্ট্রীয় ত্রাণ ভান্ডার সব লুট করছে আওয়ামীলীগ। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের কারনে যত টাকা খরচ করলো এ টাকাটা যদি বানভাসি মানুষকে দিতো তাহলে মানুষ কিছুটা হলেও শান্তি পেতো। আবদুস সালাম বলেন, ফেনীতে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা দেওয়া হয়েছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সেখানে যায়নি। সেখানে শুধু পুলিশ নয় আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা করছে। আমাদের ভিপি জয়নাল সাহেবের বাড়ির সামনে গতকাল থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিএনপিকে আবার তারা জেলখানায় পাঠিয়ে খালি মাঠে নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু এবার আর সেই সুযোগ দিবেনা বিএনপি। জনগণ আজকে ঐক্যবদ্ধ, সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ। ভোটের মাধ্যমে জনগণ তার রায় দিবে। আওয়ামীলীগ স্বাধীনতার পরেও ভোট কারচুপি করেছে, আওয়ামীলীগ কোনো একটা নির্বাচনেও কারচুপি ছাড়া জয়লাভ করতে পারেনি। আওয়ামীলীগ ভয় পাইছে, তাদেরকে বিদায় নিতে হবে। জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য। তাই সেই লড়াইয়ে বিএনপি,যুবদল,ছাত্রদল,স্বেচ্চাসেবকদল,শ্রমিকদল,কৃষকদল মহিলাদল সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নেমে আসার আহবান জানান। তিনি বানভাসি মা বোনদের কাছে যেতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন এবং পরবর্তীতে বানভাসিদের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির পক্ষ থেকে বন্যার্তদের জন্য প্যাকিং করা ত্রাণসামগ্রী পরবর্তীতে বন্যাদূর্গত এলাকার মানুষজনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য জেলা বিএনপিকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনের পর নেতৃবৃন্দ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এবং গতকাল ফুলগাজী উপজেলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর আওয়ামীলীগের হামলা,ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচিতে যেতে বাঁধা প্রদান ও প্রশাসন কতৃক ১৪৪ ধারা জারির প্রতিবাদে আগামীকাল ফেনী জেলার সকল থানায় ও পৌরসভায় এবং ৪ জুলাই জেলা বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
উল্লেখ্য,ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আজ ফেনীর ফুলগাজীতে বন্যাদুর্গত এলাকায় অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের দিন ধায্য ছিল। এ উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলা বিএনপি একটি প্রস্তুতি সভা করছিলেন। সেখানে উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা তাদের সভাস্থলে অতর্কিত হামলা চালায়। এঘটনায় অন্তত বিএনপির ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়। উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসন থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।