২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
লাউ গাছের আগা, ডগা, ফল সবই খাওয়া যায়, যা অত্যন্ত পুষ্টিকর। আসলে লাউ আমাদের সবার নিকট অত্যন্ত প্রিয় সবজি। লাউ নানা রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে বিরাট ভূমিকা পালন করে। লাউ শুধু শীতকালে নয় সারা বছরই পাওয়া যায়। লাউ এর আদি নিবাস আফ্রিকা। পরে তা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। লাউয়ের ইংরেজি নাম গুয়াড। একটি বৃহৎ লতানো বীরুৎ শক্ত জাতীয় উদ্ভিদ। লাউয়ে ভিটামিন বি সি শর্করা ও খাদ্য শক্তি পাওয়া যায়। পাতায় এ সি ক্যালসিয়াম প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। বীজে থাকে ৪৫% ফ্যাট অ্যাসিড, প্রোটিন, অ্যামাইনো অ্যাসিড ইত্যাদি। বীজের তেল মাথাব্যথা দূর করে এবং লাউ তরকারি হিসেবে খাওয়া হয়।
পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী লাউ গাছের পাতায় খাদ্য উপাদান হলোঃ প্রোটিন ২.৩ গ্রাম, শর্করা ৬.১ গ্রাম, চর্বি ০.৭ গ্রাম , ক্যালসিয়াম ৮০ গ্রাম, ক্যারোটিন ১৮৭ মাইক্রো গ্রাম, ভিটামিন সি ৯০ মিলিগ্রাম, খাদ্যশক্তি ৩৯ কিলোক্যালরি। ১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী লাউয়ে খাদ্য উপাদান হলো ঃ জলীয় অংশ ৮৩.১ গ্রাম, প্রোটিন ১.১ গ্রাম, শর্করা ১৫.১ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৬ গ্রাম, লৌহ ০.৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৪ মিলিগ্রাম , খাদ্যশক্তি ৬৬ কিলোক্যালরি, খনিজ পদার্থ ০.৫ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ২.৫ গ্রাম, ফরফরাস ১০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি,০.০৩ মিলিগ্রাম, বি ২.০১ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.০২ মিলিগ্রাম তাছাড়া ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, ওমেগা ৬, ফ্যাটি এসিড আছে। ভিটামিন ‘এ’-র অভাবে শিশুদের ‘রাতকানা’ রোগ হয়। অবশেষে অন্ধ হয়ে যায়। তা ছাড়া চামড়া শুষ্ক , খসখসে ও মুখের উজ্জ্বলতা কমে যায়। দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি কমে যায়। ক্যালসিয়ামের অভাবে হাড় ও দাঁতের সমস্যা দেখা দেয়। রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে । তাছাড়া পেশি সংকোচন, হৃদস্পন্দন, রক্ত সঞ্চালনসহ শরীরের বেশ গুরুত্বপূর্ণ কাজে ক্যালসিয়াম সাহায্য করে। ক্যালসিয়ামের অভাবে ‘টিটেনি ’ নামক এক ধরনের রোগ হয়। এ রোগে মাংসপেশিতে সংকোচন, কম্পন হয়, ফলে সারা শরীরে ব্যথা শুরুহয়। দ্রুত চিকিৎসা না নিলে মৃত্যুও হতে পারে। তাছাড়া লাউয়ের নানা ঔষধি গুণাগুণও রয়েছে।
যারা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভোগেন তারা নিয়মিত লাউয়ের তরকারি খেলে উপকার পাবেন। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলারা প্রায়ই কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে আক্রান্ত হন। তারা লাউয়ের তরকারি খেয়ে উপকার পেতে পারেন। এক্ষেত্রে লাউ গাছের পাতায় শাক খুবই উপকারী। ১. যাদের খাবার খুব কম হজম হয় বা অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকে তাদের জন্য লাউ খুবই ভালো খাদ্য। ২. নিয়মিত খেলে কর্ম শক্তি বাড়ে। ৩. যাদের শরীর গরম, বা মাথা গরম থাকে তারা লাউ খান উপকার পাবেন। ৪. শরীরে পুষ্টিও পাবেন। যারা হার্টের সমস্যায় আক্রান্ত তারা নিয়মিত লাউ খান উপকার পাবেন। ৫. লাউ খেলে শরীরের চামড়ার আর্দ্রতা বজায় রাখে। ফলে শীতকালে চমড়ার টান টান ভাব কমে যায়। ৬. যারা হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন তারা নিয়মিত লাউ খান উপকার পাবেন। ৭. কানের ব্যথা লাউ গাছের নরম রস দিলে উপকার পাওয়া যায়। ৮. লাউ গাছের পাতার রসের সাথে চিনি মিশিয়ে খেলে জন্ডিস রোগে উপকার হয়। রাতে যাদের ঘুম কম হয় তারা রাতে লাউয়ের তরকারি খেলে রাত জাগার প্রবণতা কমে যায়, ঘুম আসে। ৯. যাদের সব সময় মাথা গরম থাকে তারা লাউয়ের বীজ বেটে মাথার তালুতে রাখলে বা বরম দিলে উপকার পাবেন। ১০.শরীরে তাপমাত্রা অত্যন্ত বেড়ে গেল বা জ্বর হলে লাউয়ের শাঁস নরম করে কপালে কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখলে খুবই উপকার পাওয়া যায়। তাপ শোষিত হয়ে যায়। ১১. খাওয়াতে অরুচি দেখা দিলে লাউ এর সবজি বা লাউয়ের খোসার ভাজা খান সমস্যা কমে যাবে। তাছাড়া লাউ পিত্ত, কফ দূর করে , বীর্য বর্ধিত ও পুষ্ট করে। এত উপকারী লাউ গাছ বাড়ির আশেপাশে লাগায়ি যত্ন নিন। পরিবারের তরকারি সমস্যা সমাধান হবে। সকলের পুষ্টি চাহিদাও পূরণ হবে।
আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক-কলামিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।