পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। সিলেটে আবারও কয়েকটি নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। একই সঙ্গে বাড়ছে উত্তরাঞ্চলের নদনদীর পানি। গতকাল সুরমা নদীর সবগুলো পয়েন্টে পানি কয়েক ইঞ্চি বেড়ে গেছে। বেড়েছে কুশিয়ারা ও লোভা নদীর পানিও। উত্তরাঞ্চলে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
গত সপ্তাহে দুর্গত এলাকায় পানি কমতে শুরু করলে বানভাসিদের চোখে মুখে কিছুটার আশার আলো দেখা দিয়েছিল। আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে অনেকে কাদামাখা ভিটেতেই ফিরে যেতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু নতুন করে আবারও পানি বাড়তে শুরু করায় বানভাসিদের দুশ্চিন্তা আবার বেড়ে গেছে। তাদের দুর্ভোগ আরো বেড়ে গেছে। দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্য সঙ্কট তীব্র হচ্ছে। অনেক দুর্গত এলাকায় কোন ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, মধ্যনগর ও শাল্লা উপজেলার অনেক পানি নিমজ্জিত গ্রামে এখনো ত্রাণ পৌঁছায়নি বলে ওই এলাকার বন্যার্তদের অভিযোগ। গাইবান্দা, কুড়িগ্রাম, রংপুর এসব জেলার বন্যাকবলিত মানুষও ত্রাণ পাচ্ছে না। সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনায়ও পর্যপ্ত ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে না। এসব এলাকার ত্রাণ শিবিরে হাজার হাজার মানুষ ত্রাণের অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছে। প্রশাসন এবং সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কিছু কিছুু এলাকায় ত্রাণ দেওয়া হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। নৌযান দেখলেই মানুষ ত্রাণের আশায় ছুটে যাচ্ছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবে ডায়রিয়াসহ নানান রোগ দেখা দিচ্ছে। কিন্তু মানুষ কোনো চিকিৎসা পাচ্ছে না। বন্যার কারণে দেশে ৪ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উত্তরবঙ্গের ১৭টি জেলার ৮৩টি উপজেলায় অবস্থিত। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান সংস্কার ও মেরামতে প্রায় ১০০ কোটি টাকার মতো লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত বন্যায় দেশের পাঁচ বিভাগের ৮৩টি উপজেলায় ৪ হাজার ১২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জে ১ হাজার ৪৭৫টি, মৌলভীবাজারে ১২৪, হবিগঞ্জে ৩৭০ ও সিলেটের ৮৮৬টি বিদ্যালয়। ১ হাজার ৭৯৮টি বিদ্যালয়কে তৈরি করা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে। এছাড়া প্লাবিত হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুরে ২৭টি, নেত্রকোনায় ৫৭৮, শেরপুরে ১৮ ও ময়মনসিংহের ৫৭টি বিদ্যালয়। রংপুর বিভাগে লালমনিরহাটে ১৪টি, কুড়িগ্রামে ২৯৪, গাইবান্ধায় ১১১, নীলফামারীতে ১১ ও রংপুরে একটি বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে। অন্যদিকে বন্যায় ডুবেছে ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ ও মানিকগঞ্জে ১৭২টি এবং চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী ও খাগড়াছড়িতে সাতটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ভারি বৃষ্টিতে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির ফের অবনতি হতে পারে। একই সঙ্গে বাড়ছে উত্তরাঞ্চলের নদনদীর পানি। দেশের ছয়টি নদীর পানি সাতটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এরই মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এবং উজানে দেশের বাইরের অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। ফলে, গঙ্গা-পদ্মা ও কুশিয়ারা ছাড়া দেশের সব প্রধান নদনদীর পানি বাড়ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালায় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের (জলপাইগুঁড়ি, সিকিম) বিভিন্ন স্থানে ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এতে ওই সময়ে মূলত দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদনদীÑ যেমন তিস্তা, আপার আত্রাই, ধরলা, দুধকুমার, আপার করতোয়া, টাঙন, পুনর্ভবা ও কুলিখ এগুলোর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
এ দিকে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সিলেট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বর্তমানে বিপৎসীমার ০ দশমিক ৮৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি বইছে। কুশিয়ারা নদীর আমলশিদ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কানাইঘাট দিয়ে বয়ে যাওয়া লোভা নদীর পানি বাড়ছে।
সিলেট ব্যুরো জানায়, ফের বাড়ছে সিলেট অঞ্চলের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি। এখনো ভয়াবহ বন্যায় এখন বিপর্যস্ত গোটা সিলেটজুড়ে। জুনের মধ্যভাগে আসা বন্যার পানি এখনও পুরোপুরি নামেনি। তবে নদনদীর পানি কিছুটা কমায় মানুষের মধ্যে স্বস্তি ছিল খানিকটা। সেই স্বস্তি উবে যেতে বসেছে। গত কয়েকদিন ধরে সিলেটের বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও এখনো অনেক এলাকা পানিবন্দি। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তথ্যমতে, চলতি সপ্তাহে হালকা ও ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকলেও বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই, তবে আতঙ্ক বিরাজ করছে বানভাসি মানুষের মধ্যে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত সিলেটে মুষলধারে বৃষ্টি হয়। সিলেটের পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশরী এ কে এম নিলয় ইনকিলাব জানান, বৃষ্টি হলেও পানি বাড়ার শঙ্কা নেই। তবে ভারতে বৃষ্টি হলে সিলেটে পাহাড়ি ঢল নামতে পারে। ফলে ফের বন্যার অবনতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। সিলেটের আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমেদ চৌধুরী জানান, চলতি সপ্তাহে সিলেটে হালকা থেকে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও অনেক এলাকা এখনো পানিবন্দি রয়েছে। এর মধ্যে আবারও গত মঙ্গলবার রাতের বৃষ্টিতে পানি বেড়েছে। ফলে ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।
সুনামগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, ভারতের মেঘালয় চেরাপুঞ্জিতে ও ভারি বৃষ্টিপাতে সুনামগঞ্জে বাড়ছে নদনদীর পানি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং গেল ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি আরো ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে গিয়েছে। এরই মধ্যে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল এলাকা দিয়ে পানি প্রবেশ শুরু করেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড তথ্য মতে, ভারতে যদি ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত তাকে তাহলে আবারও বন্যার শঙ্কা রয়েছে। এদিকে সুনামগঞ্জে নিম্নাঞ্চল এলাকা নবীনগর, কাজির পয়েন্ট এছাড়া সুনামগঞ্জের ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার নিম্নাঞ্চল এলাকা দিয়ে পানি প্রবেশ করা শুরু করেছে, তবে ওই সকল এলাকায় এখন দ্বিতীয় দফা বন্যার পানি নামেনি তার মধ্যে আবারও পানি আসায় বিপাকে রয়েছেন ওইসব এলাকার বানভাসি মানুষরা। নবীনগর এলাকার মাহবুব আহমেদ জানান, পানি আবারও বাড়ছে, গতকাল রাতে এখানে অনেক বৃষ্টি হয়েছে, তবে এখনও আমাদের ঘরের পানিই ভালো করে শুকায়নি, তার মধ্যে আবার পানি এমনি ভবাবহ বন্যায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। আবারও যদি পানি আসে, তাহলে কেমন করে জীবনযাপন করব। পাউবো’র তথ্য মতে, সদর উপজেলায় গেল ২৪ ঘণ্টায় ১৯৬ মিলিমিটার, তাহিরপুরের ৩২ মিলিমিটার, দিরাই উপজেলায় ৭ মিলিমিটার ও ছাতক উপজেলায় ১৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যার মধ্যে সুনামগঞ্জের ছাতক পয়েন্ট দিয়ে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, সুনামগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে। এক সপ্তাহে জেলায় ৪৪৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ ছাড়া ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগ মোকাবিলায় জেলায় ১২৩টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।
নীলফামারী জেলা সংবাদদাতা জানান, জেলাতে ফের ভারতের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠে গেছে। গতকাল দুপুরে ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৬২ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ২ সেন্টিমিটার ওপরে। এর আগে সকাল ৯টায় নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার সংযোগস্থলে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি ছুঁই ছুঁই পর্যায়ে। তখন পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছিল ৫২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার। পানি কমতে থাকলেও গতকাল দুপুর থেকে বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পানির চাপ মোকাবিলায় ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
কুড়িগ্রামে জেলা সংবাদদাতা জানান, কুড়িগ্রামে ফের বাড়ছে নদনদীর পানি, ভাঙন আতঙ্কে রাত কাটছে নির্ঘুম জিওব্যাগ ফেলেও তিস্তার ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। ফলে নির্ঘুম রাত কাটছে তিস্তাপাড়ের মানুষদের। গত ১৫ দিনে শুধু কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় ৪২টি বাড়ি তিস্তা নদীতে বিলীন হয়েছে। এছাড়া একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক বিলীনের পথে। শুধু তিস্তার ভাঙনে নয়, ধরলা-ব্রহ্মপুত্র-দুধকুমারের করাল গ্রাসে পতিত হচ্ছে আবাদি জমিসহ ঘর-বাড়ি। ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে নদনদী তীরবর্তী এলাকার মানুষজন। গতকাল সকালে পাউবো’র তথ্য মতে, গত ১২ ঘণ্টায় ধরলার পানি ৩৪ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ১৫ সেন্টিমিটার ও তিস্তার পানি ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতে বৃষ্টিপাতের কারণেই এসব নদনদীর পানি বাড়ছে।
লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা জানান, আবারো অবনতি হয়েছে গতকাল সকাল থেকে তিস্তার পানি ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলার পানিও জেলার কুলাঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবৃদ্ধির কারণে জেলার শতাধিক চরের মানুষ পরিবার-পরিজন ও গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, উঁচু রাস্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের উপর। পানি বাড়ার সাথে সাথে দেখা দিয়েছে তীব্রভাঙন। ১৪ দিন আগের বন্যার জের কাটতে না কাটতেই আবারও বন্যা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। খাদ্য ও নিরাপদ পানি সংকট ও পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা অবনতিসহ স্বাভাবিক চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পানিবন্দি এসব মানুষ। নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হয়ে পড়েছে। পশুপাখি ও গবাদিপশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন এসব বানভাসি মানুষ। গরু ছাগলের খাদ্যসংকটসহ নিরাপদ স্থানে রাখতেও ভোগান্তিতে পড়ছেন তারা। গত ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট জেলায় ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়াও আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তরাঞ্চলের তিস্তা ও ধরলা পাড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির পূর্বাভাস দিয়েছে বন্যা তথ্যকেন্দ্র।
জামালপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, জামালপুরের সরিষাবাড়ির পিংনা উত্তরপাড়া এলাকায় যমুনা নদীর বাম তীর রক্ষা বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে মহাসড়কসহ বসতভিটা। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভাঙন আরও তীব্র হতে পারে জানান স্থানীয়রা। উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের পিংনা উত্তরপাড়া এলাকায় নদীর তীর রক্ষা বাঁধের প্রায় ২০ মিটারে ধস দেখা দিয়েছে। বন্যার পানি কমতে শুরু করায় বানভাসিদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বাঁধ ধসে আতঙ্কে আছেন স্থানীয়রা।
নিকলী (কিশোরগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, উপজেলার হাওর অঞ্চল সিংপুর ইউনিয়নে ডুবি শরিয়ত উল্লাহ দাখিল মাদরাসা বন্যার পানিতে তলিযে গেছে। প্রতিষ্ঠানের ভেতরে পানি প্রবেশ করেছে । শ্রেণি কক্ষে প্রায় দুই ফুট পরিমাণ পানি। বন্যার শুরুতেই এ মাদরসায় পানি উঠে। বর্তমানে মাদরাসার পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বন্যার প্রথম দিকে এই গ্রামের বাড়িঘরে পানিতে প্লাবিত হয়। বর্তমানে উপজেলার ৩৯ প্রাম প্লাবিত। ৩০০ পরিবারের ভিটেমাটি পানির নিচে। এই অবস্থায় কেউ কেউ গরু-বাছুর নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রিত হয়েছেন। নিকলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু হাসান ইনকিলাবকে জানান, বন্যাদুর্গতদের সবারই খাবার অভাব। নিকলী উপজেলায় এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে ৩০ মেট্রিক টন চাল, ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার শুকনো খাবার বন্যাদুর্গত এলাকায় প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও নগদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছে। এসব স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।