Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমারের বিপন্ন রোহিঙ্গাদের আরো নৌকা ফেরত পাঠানো হয়েছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযানের মুখে বিপন্ন রোহিঙ্গাদের আরো নৌকা বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠিয়েছে। টেকনাফে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষাবাহিনী বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদ বিবিসিকে বলছেন, গতকাল ভোর ৪টা থেকে ৬টার মধ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী নাফ নদীতে যাত্রী বোঝাই সাতটা নৌকা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। কিন্তু সীমান্তের চারটি পয়েন্টে এদের আটক করা হয় এবং নৌকাগুলোকে ফেরত পাঠানো হয় বলে তিনি জানান। নৌকাগুলোতে শতাধিক রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষ ছিল বলে সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন।
অবশ্য টেকনাফের স্থানীয় বাসিন্দারা জানাছেন, বিজিবির কঠোর প্রহরা সত্ত্বেও সীমান্তপথে প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ওদিকে অর্থের বিনিময়ে অবৈধ পথে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাচারের দায়ে টেকনাফের ভ্রাম্যমাণ আদালত আটজন দালালকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দিয়েছে।
টেকনাফ থানার ওসি আব্দুল মজিদ একথা নিশ্চিত করেছেন। গত বুধবারও একই অভিযোগে কক্সবাজারের উখিয়াতে তিনজন দালালের সাজা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের প্রতি সরকারের কঠোর মনোভাব সত্ত্বেও সীমান্তের ওপারে চরম সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে পড়া মানুষদের প্রতি বাংলাদেশীদের সহানুভূতি দৃশ্যত বাড়ছে।
তবে মিয়ানমারের সরকার রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের দাবি বরাবরই ‘অতিরঞ্জিত’ বলে বর্ণনা করে থাকে।
বর্মী সরকারের একজন মুখপাত্র য থে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আসলে রাখাইনে যা ঘটছে, তা বিছিন্ন ঘটনা। মিয়ানমার থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা অভিযোগ করছেন, রাখাইন প্রদেশে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী খুন এবং ব্যাপক নির্যাতন চালাচ্ছে। সীমান্ত এলাকা ঘুরে এসে বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা আকবর হোসেন কুতুপালং এলাকায় মজিনা খাতুন নামে একজন রোহিঙ্গা নারীর সাথে কথা বলেছেন, যিনি অভিযোগ করছেন যে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করেছে।
মজিনা খাতুন জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা বাড়িঘরে আগুন দিচ্ছে। পুরুষদের ধরে ধরে হয় গুলি করা হচ্ছে, নয়তো গলা কেটে ফেলা হচ্ছে। তার মতো আরো বহু নারী এখন স্বামীহারা। তারা আমাদের বাচ্চাদের আগুনে ছুড়ে ফেলছে। প্রাণ বাঁচাতে রাতের অন্ধকারে আমরা তাই সীমান্ত অতিক্রম করে এখানে এসেছি।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে উদ্বেগ জানাতে গত বুধবার ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত মিও মিন্ট থানকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। রাখাইন প্রদেশে সশস্ত্র বাহিনীর অব্যাহত অভিযানের কারণে পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি এবং বাংলাদেশের ওপর তার প্রভাব নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিপাক্ষিক এবং কনসুলার বিষয়ক সচিব কামরুল আহসান তার কাছে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জনাব আহসান মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, রাখাইন প্রদেশ থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘনে বিপর্যস্ত মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষীরা তাদের প্রতিহত করার সবরকম চেষ্টা করলেও হাজার হাজার মরিয়া মানুষ সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তাদের মধ্যে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রয়েছে এবং সীমান্ত এলাকায় আরো কয়েক হাজার শরণার্থী ঢোকার অপেক্ষায় রয়েছে বলে তাদের কাছে খবর রয়েছে। সূত্র : বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ