মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণকে ঘিরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও রাশিয়ার মধ্যে যে অচলাবস্থা চলছে তার সবশেষ পর্যায়ে গ্যাস সরবরাহ নিয়ে তৈরি হয়েছে সঙ্কট। জার্মানির অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, ঘাটতি মোকাবেলার জন্য দেশটিতে যে জরুরিকালীন গ্যাস পরিকল্পনা রয়েছে তা সক্রিয় করতে ‘সতর্ক সঙ্কেত’ জারি করেছে দেশটি।
নিম্ন গ্যাস প্রবাহ এই সপ্তাহে সতর্কতা জাগিয়েছে যে, রাশিয়ান সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে জার্মানি মন্দায় পড়তে পারে। বৃহস্পতিবার এসএন্ডপি গ্লোবালের ফ্ল্যাশ পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স (পিএমআই) দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে অর্থনীতির গতি হারাতে দেখায়। রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ কমে আসায় কারখানা সচল রাখতে ও অর্থনৈতিক ক্ষতি কমাতে জার্মানিজুড়ে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানকে এখন বিকল্পের খোঁজে প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করতে হয়েছে। কোন কারখানার উৎপাদন আগে কমাতে হবে তা নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে রাসায়নিক জায়ান্ট বিএএসএফকে; প্রতিদ্বন্দ্বী ল্যাংসেসও হয়তো কয়লাচালিত কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধে দেরি করবে।
কয়েকদিন আগে গ্যাজপ্রম রাশিয়া থেকে জার্মানিতে যাওয়া নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইন দিয়ে গ্যাসের প্রবাহ ৬০ শতাংশ কমিয়ে দেয়ায় প্রোক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বলের সরবরাহকারী খেলহাইম ফাইবার লাখ লাখ ডলার খরচ করে তাদের গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটি তেলে চালানোর উপযুক্ত করার কথা ভাবছে। ৮৬ বছরের পুরনো বাভারিয়াভিত্তিক এ কোম্পানি জীবাণুমুক্তকরণ সামগ্রী ও পরিস্রাবনে ব্যবহৃত হয় এমস রাসায়নিক তন্তু সরবরাহ করে আসছে। তাদের গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র তেলে চালানোর উপযুক্ত করতে অন্তত ২১ লাখ ডলার লাগবে; এজন্য রাজ্যের কাছে অর্থ সাহায্যও চেয়েছে তারা।
আবার বিকল্প জ্বালানির মাধ্যমে পণ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে চাইলে খরচ অনেক বেশি বেড়ে যাবে, যাতে কারখানা বন্ধ এবং শত শত মানুষ চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে, বলেছে কোম্পানিটি। জার্মানির অর্থ মন্ত্রী রবার্ট হাবেক বলেছেন, ইইউর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার পাল্টা জবাব দিতে রাশিয়া গ্যাসকে ‘অস্ত্র’ হিসাবে ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, ‘স্পষ্টতই পুতিনের কৌশল হল একটা নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করা, মূল্য বৃদ্ধির দিকে ঠেলে দেয়া এবং সমাজে একটা বিভক্তি সৃষ্টি করা।’
জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হলে বা গ্যাসের চাহিদা খুব বেড়ে গেলে তা মোকাবেলার জন্য দেশটিতে তিন স্তরের একটি আপদকালীন পরিকল্পনা রয়েছে। জার্মানি এখন সেই পরিকল্পনার দ্বিতীয় স্তর কার্যকর করেছে। গ্যাস মজুদ করার কেন্দ্রগুলোতে গ্যাস ভর্তি করার প্রচেষ্টার জন্য জার্মান সরকার এখন ১৫ বিলিয়ন ইউরো (১৩ বিলিয়ন পাউন্ড) ঋণ দেবে।
জার্মানির অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। তারা বলছে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন দিয়ে এখন স্বাভাবিক মাত্রার মাত্র ৪০ শতাংশ গ্যাস আসছে এবং এই মাত্রা অব্যাহত থাকলে আগামি শীতে প্রয়োজনীয় মজুদের ৯০ শতাংশ নিশ্চিত করতে জার্মানিকে বেগ পেতে হবে। সরবরাহে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঘাটতি দেখা দিলে এবং বাজারের চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট গ্যাস না থাকলে, জরুরি পরিকল্পনার তৃতীয় স্তরে রাষ্ট্রকে হস্তক্ষেপ করতে হবে। এর অর্থ হবে সরবরাহ রেশন করে দেয়া।
কিন্তু শীত মরশুমে গ্যাসের দাম বেড়ে গেলে শিল্প খাতগুলো চাহিদা কমাতে বা নিজেরাই রেশন ব্যবস্থা চালু করতে চাইবে এমন সম্ভাবনা খুবই বেশি, কারণ মজুদ গ্যাস ছেড়ে দেয়া তখন অর্থকরী হবে না। সূত্র: ডেইলি সাবাহ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।