পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলাম ও মুসলমানদের ওপর আঘাত হানা হলে বিশ্বের ২০০ কোটি মুসলমান এর দাঁত ভাঙা জবাব দিবে। আল্লাহ অবশ্যই রাসূলের দুশমনদের অচিরেই শায়েস্তা করবেন। গতকাল জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম এসব কথা বলেন। নগরীর মসজিদগুলোতে জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে ভারতে মহানবী (সা.) শানে বেয়াদবির প্রতিবাদে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরেন পেশ ইমাম খতিবরা।
ঢাকার লালমাটিয়া মসজিদে বায়তুল হারামের খতিব মাওলানা কাজী আবু হোরায়রা গতকাল জুমার বয়ানে বলেন, রাসূল (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা ও মহব্বত ঈমানের অঙ্গ। রাসূল (সা.) এর ওপর কোনো অবমাননা বা তাকে কটাক্ষ করা হলে যদি কোনো মুসলমান নীরব থাকে বা তার মনে ব্যথা লাগে না, তাহলে সে নিজেকে মুসলিম দাবি করতে পারে না। কারণ কাফির মুশরিকদের অনেকেই আল্লাহকে বিশ্বাস করে। কিন্তু নবীজিকে বিশ্বাস না করার কারণে তারা মুমিন বা মুসলিম নয়। এ জন্যই নবীজির প্রতি প্রেম ও ভালোবাসা ঈমানের অঙ্গ। এক কথায় নবীর ভালোবাসা ছাড়া ঈমানের দাবি গ্রাহ্য হয় না। তাহলে ভারতের ব্রাম্মন্যবাদী সরকারের মুখপাত্র আমার পেয়ারা নবী বিশ্বনবী (সা.) কে এত ন্যাক্কারজনকভাবে কথা বলল; কিন্তু আমাদের সরকার এবং আমাদের দেশের ভারতপ্রেমীরা একটা প্রতিবাদ দেয়ারও আগ্রহ নেই অথবা বন্ধুত্ব নষ্ট হওয়ার ভয়ে কোনো কথা বলছে না। আমরা ভারতের মোদি সরকারকে জানিয়ে দিতে চাইÑ ইসলাম ও মুসলমানদের ওপর আঘাত হানা হলে বিশ্বের ২০০ কোটি মুসলমানের দাঁত ভাঙা জবাব দিবে। আল্লাহ অবশ্যই রাসূলের দুশমনদের অচিরেই শায়েস্তা করবেন। আল্লাহ সবাইকে দ্বীনের ছহি বুঝ দান করুন। আমিন।
মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী বাইতুল মামুর জামে মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী বলেন, রাসূল (সা.) ছিলেন সর্বোত্তম আদর্শের অধিকারী। তার আদর্শ অনুসরণের জন্য বিশ্ববাসীর প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহতায়ালা। আল্লাহ এরশাদ করেন, তোমরা আল্লাহ এবং তার রাসূলের অনুসরণ করো, তাহলে তোমরা অবশ্যই রহমতপ্রাপ্ত হবে। (সূরা আল-ইমরান, আয়াত নং-১৩২)। অন্যত্র তিনি আরো বলেন, তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। (সূরা আহযাব, আয়াত নং-২১।
খতিব বলেন, নবী (সা.) উত্তম চরিত্রের ওপর কোনো কুলাঙ্গারের কালিমা লেপন বিশ্ব মুসলিম কিছুতেই বরদাশত করতে পারে না। তিনি সকলকে ধৈর্যের সাথে রাসূল (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহর দুশমন রাসূলের অবমাননাকারী কুলাঙ্গারদের দাঁত ভাঙা জবাব দেয়ার প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকার শেওড়াপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি সিফাতুল্লাহ রহমানি বলেন, কোরআনে কারিমে অনেক জায়গায় হজের গুরুত্ব ও ফজিলত সুস্পষ্ট ভাষায় বর্ণনা করেছে। অর্থ : ‘আর মানুষের ওপর আল্লাহর অধিকার, যে ব্যক্তি তার ঘর পর্যন্ত আসার সামর্থ্য রাখে, সে যেন হজ করতে আসে।’ (সূরা আলে ইমরান-৯৭)। ইসলাম এ ইবাদতের প্রতি কি পরিমাণ গুরুত্বারোপ করেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিম্নোক্ত বাণী দ্বারা তা অনুমান করা যায়। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তিকে সুস্পষ্ট কোনো প্রয়োজন, কোনো জালেম বাদশাহ বা কোনো ব্যাধি হজে যেতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি, এতদসত্ত্বেও সে হজ না করে মারা গেলে, তাহলে তার ইচ্ছা সে ইহুদি হয়ে মরুক বা খ্রিস্টান হয়ে।’ (সুনানুদ দারেমি, ১৭১৯)। আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন। আমিন।
ঢাকার মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী বলেন, নবী রাসূলরা সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। মানবসভ্যতার উন্নয়ন ও বিকাশে তারা অসামান্য অবদান রেখেছেন। পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে নবী ও রাসূলদের সমালোচনা ও বিদ্রুপকারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) কে নিয়ে বিদ্রুপকারীদের হুঁশিয়ার করে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘বিদ্রুপকারীদের বিরুদ্ধে আমিই আপনার জন্য যথেষ্ট।’ (সূরা হিজর-৯৫)। অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারীর প্রতি আল্লাহর অভিশাপের কথা বলা হয়েছে। এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আপনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারীই নির্বংশ।’ (সূরা কাউসার-৩)। ইসলামী শরীয়তে নবী-রাসূলদের সমালোচনা ও সম্মানহানি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কোনো ব্যক্তি নবী রাসূলগণকে সমালোচনার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করলে ইসলামী দণ্ডবিধি মতে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তবে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেবে ইসলামী রাষ্ট্রের আদালত এবং তা বাস্তবায়ন করবে রাষ্ট্র বা তার প্রতিনিধি। মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের আমল করার তৌফিক দান করেনÑ আমীন।
গুলিস্থানস্থ ফুলবাড়িয়া রেলওয়ে জামে মসজিদের খতিব আল্লামা মুহিউদ্দীন রাব্বানী বলেন, উম্মতে মুহাম্মাদের আবশ্যিক কর্তব্য হলো রাহমাতুল্লিল আলামীন (সা.) এর প্রতি যথাযোগ্য সম্মানপ্রদর্শন করা। একই সাথে প্রত্যেক নবীর প্রতি সম্মানপ্রদর্শনও অপরিহার্য। কোনো নবী সম্পর্কে সামান্যতম তাচ্ছিল্য ও অবমাননাসুলভ আচরণ প্রকাশ পাওয়া ইসলাম থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার জন্য যথেষ্ট। এ প্রসঙ্গে আল কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা নবীর কণ্ঠস্বরের ওপর তোমাদের কণ্ঠস্বর উঁচু করো না এবং নিজেদের মধ্যে কথোপকথনের ন্যায় রাসূলের সাথে উচ্চস্বরে কথা বলো না। কারণ এতে তোমাদের অজ্ঞাতসারে তোমাদের নেক আমলগুলো নিষ্ফল হয়ে যাবে। (সূরা হুজরাত : আয়াত ২)। আল্লাহর বান্দাদের ওপর আল্লাহর নবী খাতামুন্নাবিয়ীন হজরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনেক হক রয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে রাসূলুল্লাহ (সা.) কে অবমানা মারাত্মক অপরাধ। ভারতে যারা মহানবী (সা.) শানে বেয়াদবি করেছে, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে রহমতিয়া জামে মসজিদে খতিব মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন বলেন, সকল নাস্তিক মুরতাদ ও মহানবী (সা.) এর অবমাননাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির লক্ষে আন্তর্জাতিক আইন পাসের দাবিতে সারাবিশ্বের মুসলমানদের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পরতে হবে। বাতিলের ভয়ভীতি ও হুংকারের পরোয়া না করে আল্লাহ ও রাসূলের ইজ্জত রক্ষায় মহান আল্লাহতায়ালার ওপর ভরসা করে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ভারতে মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটূক্তির ঘটনায় মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। যতদিন পর্যন্ত মহানবী (সা.)-এর অবমাননাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আইন পাস করা না হবে, ততদিন পর্যন্ত ঈমানের তাগিদেই মুসলমানদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। মুসলিম পিছু হটার জাতি নয়, হয় শহীদ না হয় গাজী, দু’টোর কোনো একটি পথ আমাদের বেছে নিতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।