Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল : বেশীরভাগ ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুপমেন্ট বিকলসহ জনবল সংকটে চিকিৎসা সেবা বিপর্যস্ত

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০২২, ১০:০৮ এএম

দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান, শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিতে ভর্তিকৃত রোগীদের রোগ নির্নয়ে নানামুখি সীমাবদ্ধতায় চিকিৎসা কার্যক্রম যথেষ্ঠ ব্যাহত হলেও তা থেকে উত্তরণে তেমন কোন উদোগ নেই। ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুপমেন্ট ও জনবল সংকটও এ হাসপাতালের সুষ্ঠু কার্যক্রম পরিচালন-এ সব চেয়ে বড় অন্তরায় হয়ে আছে। এখনো ১ হাজার শয্যার হাসপাতলটি চলছে ৫শ শয্যার জনবল দিয়ে। কিন্তু দৈনিক গড়ে ১৮শ রোগী চিকিৎসাধীন থাকলেও ৫শ শয্যার জন্য অনুমোদিত জনবলেরও প্রায় ৩৫ ভাগ এখনো শূণ্য।
চিকিৎসক থেকে শুরু করে রেডিওলজিস্ট, রেডিওথেরাপিস্ট ও ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট-এর অনেক পদ দীর্ঘদিন ধরে শূণ্য থাকায় হাসপাতালটিতে ভর্তিকৃত রোগীদের রোগ নির্ণয়ে চিকিৎসকদেরও দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিশেষকরে গরীব ও অসহায় রোগীরা বাইরে থেকে ক্লিনিক্যাল পরিক্ষা সহ এক্স-রে করাতে না পাড়লে দিনের দিন হাসপাতালের বেড বা মেঝেতে অবস্থান করতে গিয়ে আরো কাতর হয়ে পড়ছেন।
বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটির প্যাথলজি বিভাগে ৪ জন ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট পদের বিপরিতে কর্মরত আছেন দু জন। ১০ জন টেকনিশিয়ানের ৪ জনই রাজশাহী, ঢাকা ও বরিশালের অন্য হাসপাতালে পেশনে নিযুক্ত থাকায় বিশাল এ হাসপাতালটিতে রোগ নির্ণয় কার্যক্রমে যথেষ্ঠ বিপত্তি সৃষ্টি হচ্ছে। এ হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪শ রোগীর রক্ত সহ বিভিন্ন নমুনা পরিক্ষার জন্য গ্রহন করতে হয়। কিন্তু ১জন সিনিয়র ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট ও দুজন ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট-এর পক্ষে সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত কাজ করেও এ বিপুল সংখ্যক নমুনা পরিক্ষা অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
হাসপাতালটির রেডিও এ্যন্ড ইমেজিং বিভাগে ১৫টি এক্স-রে মেশিনের ১৩টি বিকল। সচল দুটি এক্স-রে মেশিনের সাহায্যে হাসপাতালের ইনডোর ও আউট ডোরের চাহিদার ১০ভাগ রোগীরও এক্স-রে করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে সিংহভাগ রোগীকেই হাসপাতালের বাইরে এক্স-রে করাতে হচ্ছে । ৪টি পর্টেবল এক্স-রে মেশিনের দুটি শিশু বিভাগ ও হৃদরোগ বিভাগে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। এখানেও রেডিওলজিস্ট থেকে শুরু করে অন্যসব পদেও জনবল সংকট ব্যপক। হাসপাতালটির রেডিওলজি, জেনারেল রেডিওলজি ও নিউরো রেডিওলজি বিভাগে অধ্যাপকের পদও শূণ্য। দুজন সহযোগী অধ্যাপকের মধ্যে একজন দায়িত্বে থাকলেও ৩জন সহকারী অধ্যপকের বিপরিতে কর্মরত একজন।
এ হাসপাতালে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র ‘কোবাল্ট-৬০’ মেশিনটিও গত প্রায় ৫ বছর ধরে বিকল। ফলে ক্যান্সারের মত জটিল রোগীদের রেডিয়েশন দেয়ার জন্য অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে ঢাকা বা অন্যত্র ছুটতে হচ্ছে। এ হাসপাতালে স্থাপিত এমআরআই এবং সিটি স্ক্যান মেশিন দুটিও বিকল দীর্ঘদিন ধরে।
এমনকি দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত এ হাসপাতালে মাত্র ৮টি আল্ট্রাসোনো মেশিন থাকলেও তার ৭টিই বিকল। অথচ মেডিসিন, গ্যাস্ট্রোলিভার, গ্যাস্ট্রো এ্যান্টোরলজি, ইউরোলজি সহ পরিপাকতন্ত্রেরও বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে আল্ট্রাসোনোর কোন বিকল্প নেই। অর্থোপেডিক বিভাগের ‘সিআর মেশিন’টিও বিকল হয়ে আছে। দীর্ঘদিনের পুরনো মেশিনটি কয়েক দফায় মেরামত করা হলেও এখন তা আর কার্যকর নেই।
এসব ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল আলম জানান, এসব মেশিন মেরামতে কয়েকবার ঢাকা থেকে টিম আসলেও তেমন কোন কাজ হয়নি। এখনো প্রকৌশলীরা কাজ করছেন। চেষ্টা চলছে বিকল ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুইপন্টেগুলো সচল করার। আমরা বারবারই বিষয়টি নিয়ে ঢাকায় লিখছি। এখনো ইতিবাচক ফল না হলেও নতুন মেশিন সংগ্রহ হলেই বরিশালে আসবে বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অনিয়ম

২৩ এপ্রিল, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ