Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সীতাকুণ্ডের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন চায় বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোর বিস্ফোরণ ঘটনার তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন চান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, কী ভয়াবহ? মানুষের বডি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, একেবারে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গেছে চেনা যাচ্ছে না। নিহতদের পরিবারগুলোকে ক্ষতিপুরণ দেয়া এবং আহতদের সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি। একইসাথে এই ঘটনার জন্য অবিলম্বে একটা নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করা উচিত। এর জন্য যারা দায়ী তাদের খুঁজে বের করা দরকার। গতকাল সোমবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন।

কেমন তদন্ত কমিশন চান জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, নিরপেক্ষ কমিশন বলতে- দলনিরপেক্ষ এবং সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক নেই যারা বিশেষজ্ঞ আছেন, সত্যিকার অর্থে বিষয়গুলো যারা বুঝেন তাদেরকে দিয়ে তদন্ত করা। সীতাকুণ্ডে ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, উদ্ধার কাজে নিয়োজিত একজন আর্মি অফিসারের কথা টেলিভিশনে শুনছিলাম- তিনি বলছিলেন যে, তাদের কাছে প্রয়োজনীয় উপকরণ নেই। আজকে আমি এই জায়গায় প্রশ্ন করতে চাই- এই সরকার তাহলে কী করছে? তথাকথিত অবকাঠামো নির্মানের নামে নিজেদের পকেট ভারী করা, দুর্নীতির করা-এটাই তাদের মূল লক্ষ্য। জনগণের কল্যাণের জন্য, সেফটি-সিকিউরিটির জন্য, মানুষকে ভালো রাখার জন্য এই সরকারের কোনো দায়বন্ধতা নেই। এই সরকার যেহেতু নির্বাচিত সরকার না সেই কারণে তাদের জবাবদিহিতা নেই।

সীতাকুণ্ডের বিস্ফোরণে দেশের পোষাকশিল্পে অথবা অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি অর্থনীতির সাবেক এই শিক্ষক বলেন, অবশ্যই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অলরেডি এই নিয়ে কথা-বার্তা শুরু হয়েছে। কারণ যেসব ঘটনা ইতোমধ্যে তাজরীন ফ্যাক্টরি বা অন্যান্য ফ্যাক্টরীগুলো এবং রানা প্লাজার ঘটনার ব্যাপারে গার্মেন্টস যেভাবে একটা নেগেটিভ অবস্থায় এসেছিলো। এটা পরবর্তিকালে যারা বায়ারস ছিলো বা বিদেশীরা বাংলাদেশের সঙ্গে কেনাকাটা করে তাদের সহযোগিতায় আমাদের গার্মেন্টস প্রডিউসার ও মালিকদের আগ্রহের কারণে সেই ব্যাপারটা অনেকটা কাটিয়ে এসেছে। কিন্তু নিরাপত্তার ব্যাপারটা এখন পর্যন্ত সেইভাবে আসেনি। এই ধরনের অগ্নিকাণ্ডগুলো ঘটছে সেইগুলো নিয়ন্ত্রণ করার মতো প্রয়োজনীয় লোকবল, উপকরণ নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই ঘটনার পর জাতীয় শোক ঘোষণা করা উচিত ছিলো। অন্যান্য যেকোনো সভ্য দেশ হলে তাই করতো। আসলে এই সরকারের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। ওরা জনগণের পালস বুঝে না, জনগণ কি চাচ্ছে, কি আশা করছে- সেগুলো নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা নেই। তারা মনে করে আমরা বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় টিকে আছি, বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় থাকবো। সেই কারনে দুঃসময়ে মানুষ যখন একটু সাত্বনা আশা করে তখন তারা গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করে জনগণের ওপর আরেকটা বোঝা চাপিয়ে দেয়। তাদের একটাই লক্ষ্য এদেশকে লুট করা।

মির্জা ফখরুল বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ছে কেনো? বাড়লো সম্পূর্ণভাবে তাদের দুর্নীতির কারণে। এক হচ্ছে তাদের ম্যানেজমেন্টট, তাদের অযোগ্যতা- এটা তাদের ব্যর্থতা। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গ্যাসের দাম আগের জায়গায় ফিরে যেতে হবে। প্রত্যেকটি ইউটিলিটি সার্ভিস পানি, গ্যাস, বিদ্যুতের মূল্য জনগণের সহনশীলতার মধ্যে রাখার জন্য আমরা আবেদন জানাচ্ছি।

গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে শিল্প-কলকারখানায় উৎপাদিত প্রত্যেকটা পণ্যের মূল্য আবার বাড়বে। এমনিতে একটা মূল্যস্ফীতি নিয়ে হিমসিম খাচ্ছে মানুষ। আমরা শুধু নয়, সকল অর্থনীতিবিদরা বলছেন যে, এটা একটা মেজর ক্রাইসিস। এটা যদি না হেন্ডেল না করা যায় তাহলে আমাদের সামনে সমূহবিপদ। প্রায় সব অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এরমধ্যে সিপিডিও বলেছে। তারপরেও সেই অবস্থা চিন্তা করলো না তারা। তারা আবার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিলো।

তিনি বলেন, প্রতিদিন মানুষ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। একজন রিকশাওয়ালার একটা বনরুটি খেতে ১৫ টাকা লাগে। তার সাথে এক কাপ চা। তার মানে তার মিনিমাম ২৫ টাকা লাগে একটা খাদ্যদ্রব্যের জন্য। এটা তারা (সরকার) বুঝতে চায় না। তারা ( সরকার) শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বাস করে, ১৫ বছরের ক্ষমতায় থাকার যে একটা আনন্দ-সুখ, সেটাকে তারা সুখময় জীবন-যাপন করছেন। সাধারণ মানুষের যে কষ্ট তা তারা বুঝতে চান না। আমি তো বলি, তারা আসুক এই দুপুরে রোদ্রের মধ্যে সাধারণ মানুষের সাথে গাছের তলায় গিয়ে দোকানে চা খায়, বনরুটি নেয় তখন কী অবস্থা দাঁড়ায় দেখুক। কিন্তু তাদের মনে তা যাবে না। কারণ জনগণ থেকে তারা সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ