গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে জীবনযাত্রার ব্যয়ভার মেটানো সম্ভব হচ্ছে না জানিয়ে রাজধানীর মিরপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে পোশাক শ্রমিকরা। গতকাল শনিবার সকাল ১১টার দিকে মিরপুর ১৩ নম্বরে কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সড়কে নেমে আসেন। তাদের দাবি, হয় বেতন বাড়াতে হবে, নয়তো নিত্যপণ্যের দাম কমাতে হবে। এসময় বিজিবির একটি গাড়িতে ও পুলিশের দুটি মোটরসাইকেল আগুন দেয়া হয়।
সারজ নামে এক পোশাক কারখানার শ্রমিক নাজমা আক্তার বলেন,একটি ডিমের দাম ১৫ টাকা, কিভাবে বাঁচব? মালিককে বলেছি বেতন বাড়াতে, কিন্তু বেতন বাড়াচ্ছে না। তাহলে কী করব আমরা? তাই বাধ্য হয়েই রাস্তায় নেমেছি। এপেক্স, এমবিএম, সারজ, ভিশন, আইডিএস, কলকা, ঝুকি, ডিমক্স কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক রাস্তায় নামলে রাস্তার দুপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় ভোগান্তীতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
এদিকে, বিকাল সাড়ে তিনটার সময়ও মিরপুর ১৩, ১৪ ও ১০ নম্বর গোলচত্বরে শ্রমিকদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এছাড়া মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে রজনীগন্ধা টাওয়ার পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করে রাখেন পোশাক শ্রমিকরা। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে বিকেল ৩টার পর থেকে রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান নেন মৌসুমী গার্মেন্টস, তামান্না গার্মেন্টস, হামিমসহ আরও কয়েকটি গার্মেন্টসের শ্রমিকরা।
তামান্না গার্মেন্টসের ¤্রমিক সালমা খাতুন বলেন, আমরা বহুবার অফিসের স্যারদের অনেক ভাবে বুঝিয়েছি- চাল, ডাল, তেলের দাম ও ঘরভাড়া বেড়ে যাওয়ায় পরিবার নিয়ে চলতে পারছি না। আমাদের বেতন কিছু বাড়িয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু তারা আমাদের কথা মানতে রাজি না। ন্যায্য পাওনা না পাওয়ার কারণে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। তিনি আরও বলেন, এর আগেও একদিন রাস্তায় নেমেছিলাম। সেদিন আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এখন পর্যন্ত কাজ হয়নি। তাই আবার এ এলাকার সব গার্মেন্টসের শ্রমিক একসঙ্গে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।
বৃহস্পতিবারও একই দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল জানিয়ে কলকা পোশাক কারখানার শ্রমিক ফয়সাল বলেন,একজন হেলপারের নূন্যতম বেতন ৮ হাজার টাকা, এই টাকায় কি চলা যায়? কাফরুল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামরুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।
এদিকে শনিবার বিকেলে সাড়ে ৫টার দিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামের সামনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির গাড়ি ভাঙচুর করে পোশাক শ্রমিকরা। এসময় পুলিশের দুটি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ শ্রমকিরা। মিরপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. মাহবুব এতথ্য জানান। ভাঙচুরের সময় গাড়িতে কোনো বিজিবি সদস্য ছিলেন না বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে পল্লবী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. আসাদ বলেন, সকাল থেকে বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। দুপুরের পর আরও কিছু কারখানার শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন। পরে বিকেলে অবরোধ শেষে যাওয়ার সময় তারা বিজিবির একটি ফাঁকা বাসে ভাঙচুর চালান। পুলিশের দুটি মোটরসাইকেলেও আগুন দেন তারা। এ ঘটনায় কতজনকে আটক করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তবে সে সংখ্যাটা এখনই বলা যাচ্ছে না।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, বিকালে কাফরুল থানা পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এখন সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।