Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কর্মী পাঠাবে না ইন্দোনেশিয়া

চতুর্মুখী প্রতিবন্ধকতায় হুমকিতে মালয়েশিয়ার পাম ওয়েল শিল্প

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০২২, ১২:০৭ এএম

করোনা মহামারীর দাপটে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, শ্রমিক শোষণ করে শ্রম আদায় ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও শ্রমিক সঙ্কট প্রকট আকার ধারণসহ চতুর্মুখী প্রতিবন্ধকতার কারণে মালয়েশিয়ার পাম শিল্পের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভোজ্য পাম তেল উৎপাদনকারী দেশ মালয়েশিয়া। দেশটির অর্থনীতির দ্বিতীয় অর্থ যোগানদাতা পাম তেল শিল্প। এই পাম তেল শিল্পের সিংহভাগ কর্মী ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের। মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়া সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা মালয়েশিয়ায় পাম তেল শিল্পে আর কোনো কর্মী পাঠাবে না। দেশটিতে পাম তেল উৎপাদন বিগত সময়ের তুলনায় সর্বনিম্ন প্রায় তিন ভাগের মধ্যে এক ভাগে নেমে গেছে। খবরে বলা হয়, প্রতিবেশী দেশ ইন্দোনেশিয়ার এ সিদ্ধান্তে মালয়েশিয়ার পামওয়েল বাগানে কর্মীশ‚ন্যতা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা ফিকে হয়ে গেল। কর্মীর অভাবে চাহিদা মতো পামওয়েল উৎপাদনের শঙ্কাও বাড়লো। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর পামওয়েল উৎপাদনকারী দেশটিতে প্রায় ১ লাখ কর্মী প্রয়োজন। মঙ্গলবার ১৬৪ জন কর্মী নিয়ে একটি চ্যার্টার্ড বিমান ইন্দোনেশিয়া থেকে মালয়েশিয়া পৌঁছানোর কথা থাকলেও পরে তা বাতিল করা হয়। মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার বিশেষ দূত বলেন, কর্মীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এজেন্সিগুলো এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আপাতত কোনো কর্মী ইন্দোনেশিয়া থেকে মালয়েশিয়া আসবে না। তবে এখানে কোন ভুল বোঝাবুঝি থাকতে পারে, মেডিকেলে ফিট হলে সবাই ভিসা পাবে বলে নিশ্চয়তা দেন ইন্দোনেশিয়ার এ দূত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অচলাবস্থা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে মালয়েশিয়ার ঐতিহ্যের ধারক পাম শিল্প তার অস্তিত্ব বিলীন হবে। দর কষাকষিতে মগ্ন কলিং ভিসা বন্ধ তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে। এর মাঝে করোনা মহামারীর ক্ষতি এবং সমানতালে চলছে দেশটিতে শ্রমিক নির্যাতন ও অব্যবস্থাপনা। শ্রমিক নির্যাতনে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ার ছয়টি কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যারা আমেরিকায় পণ্য রফতানি করে। যুক্তরাষ্ট্র যথাযথ তদন্ত করে এর সত্যতা পেয়ে নিষেধাজ্ঞা দিলেও মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান শ্রমিক নির্যাতনের কথা বার বার অস্বীকার করছেন। এম সারাভানান পাল্টা জবাবে বলেছেন, আপনারা হাতে-নাতে এমন কোনো প্রমাণ দেখান তারপর আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব। কলিং ভিসার সিন্ডিকেট নিয়ে তীব্র সমালোচনার পর এম সারাভানান এমন মন্তব্যের কড়া সমালোচনার মুখে পড়েন। একটি রাজ্যের মন্ত্রী সারাভানানের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কেন তদন্ত করে হাতে-নাতে প্রমাণ দিতে হবে? কারণ আমাদের সমস্যা এখানেই তাই যথাযথ তদন্ত করে আমাদেরকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। ইন্দোনেশিয়া কী কারণে হঠাৎ শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করল তা জানা না গেলেও মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তাদের সাথে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটা স্পষ্ট যে ত্রæটিপূর্ণ শ্রমিক নিয়োগ নীতিমালা, জোর করে শ্রম আদায়, এসব ঝুঁকিপূর্ণ কাজে অপ্রতুল মজুরি, অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয়, নিরাপদ আবাসন নিশ্চিতকরণে নিয়োগকর্তার চরম গাফিলতিসহ সব মিলিয়ে অসংখ্য জটিলতার কোনো সুষ্ঠু সমাধান না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত। তবে মালয়েশিয়া তার প্রয়োজনীয়তার নিরিখে ইন্দোনেশিয়া থেকে কর্মী আনতে বাধ্য হবে এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। এম সারাভানানের স্বীকৃত ২৫ ও ২৫০ সিন্ডিকেটে শ্রমিক মালয়েশিয়ায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত যে আত্মঘাতী হবে সরকার ও জনগণ বুঝে গেছেন। কারণ সিন্ডিকেটে কর্মী নিয়োগের আগে যেমন প্রত্যেক কর্মীর কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা বাধ্যতামূলক আদায় করা হতো। স্ট্রেইট টাইমস।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইন্দোনেশিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ