Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ পরিশোধে সুবিধা চান ব্যবসায়ীরা

বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ পরিশোধের বিশেষ সুবিধা চেয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এই সুবিধা চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। জসিম উদ্দিন বলেন, কোভিড-পরবর্তী ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। সার্বিক প্রভাবে রপ্তানির কাঁচামালের দাম বাড়ায় খরচও বেড়েছে। অনেকে অর্ডার দিয়ে ডিসকাউন্টের কথা বলছেন। এ জন্য এফবিসিসিআইয়ের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাদের ঋণ পরিশোধের বিশেষ সুবিধাটি চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেয়া হোক। যাতে কেউ খেলাপি না হয়। তিনি বলেন, আমাদের দেশের ব্যাংকগুলোতে যেন দীর্ঘমেয়াদি ঋণের একটি বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে আমরা সেই অনুরোধ জানিয়েছি। কারণ ব্যবসার জন্য দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন খুবই জরুরি।

দীর্ঘমেয়াদি ঋণের জন্য আমাদের আলাদা কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। সামনে এলডিসি উত্তরণ। এ জন্য বড় বড় শিল্প-কারখানা করা দরকার। কিন্তু নরমাল ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে শোধ করা অনেক কঠিন হয়ে যায়। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ করেছি কোনো একটা ব্যাংক থেকে দীর্ঘমেয়াদি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল সহায়তা দেয়ার জন্য।
তিনি বলেন, আমরা রেমিট্যান্স প্রণোদনা আরও বাড়ানোর কথা জানিয়েছি। একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা দেশের বাইরে থেকে রেমিট্যান্স পাঠাবেন। তাকে কিছু সু্যােগ-সুবিধা দিলে তিনি উৎসাহিত হবেন, যদিও সিআইপিসহ সব সুবিধা তাকে দেওয়া হচ্ছে। তবে সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। এ বিষয়টি সরকারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। পরবর্তীতে সব দিক বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এফবিসিসিআই রফতানি উন্নয়ন তহবিল সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার করার প্রস্তাব দিয়েছে। সভা শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, এফবিসিসিআইয়ের বিষয়গুলো আমরা বিবেচনা করে দেখব। তবে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত জানানো যাচ্ছে না।

এর আগে ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকার্স সভা থেকে জানানো হয়, সবার জন্য সুবিধা আর বাড়বে না। ২০২১ সালে একজন ঋণগ্রহিতার যে পরিমাণ পরিশোধ করার কথা, শুধু সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তারা ১৫ শতাংশ পরিশোধ করলে আর খেলাপি হবেন না। এর আগে সব ঋণের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ শোধ করে ঋণ নিয়মিত করার সুবিধা ছিল।

ঘোষণাটি ব্যবসায়ীদের জন্য ছিল এক বড় ধাক্কা। এর কারণ, কিস্তি না দিলে খেলাপির তালিকায় নাম উঠলে আমদানি-রফতানিতে নানা ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হয়, নতুন ঋণও পাওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ী নেতারা বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর ফজলে কবিরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ হলে সাধারণ ছুটিতে ব্যবসা-বাণিজ্যে অচলাবস্থা দেখা দেয়। সে সময় ঋণ নিয়ে ব্যবসায়ী উদ্যোগ শুরু করা মানুষদের জন্য নীতিসহায়তা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সিদ্ধান্ত হয়, ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তি জমা না দিলেও কেউ খেলাপির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবেন না। পরে এই মেয়াদ বাড়ানো হয় ধাপে ধাপে। তবে ঢালাও সুবিধা ধীরে ধীরে কমায় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কিস্তির কোনো অংশ জমা না দিয়েও খেলাপিমুক্ত থাকার সুযোগ থাকলেও ২০২১ সালে সেটা কমানো হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঋণ পরিশোধ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ