Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভালো গ্রাহককে ঋণ পরিশোধে সময় দিন

এই মুহূর্তে বড় চ্যালেঞ্জ যথাসময়ে ব্যাংক ঋণ আদায় করা -এস কে সুর

প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : ভালো গ্রাহকও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মূলধন হারায়। সেই সময়ে ওই গ্রাহকের পক্ষে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা সম্ভব হয় না। যে কারণে সেই গ্রাহকের নাম খেলাপিভুক্ত হয়ে যায়। ফলে তার কাছ থেকে মামলা করেও ঋণ আদায় করা সম্ভব হয় না। এ ধরনের গ্রাহককে ঋণ পরিশোধ করার জন্য কিছু দিন সময় দেয়া প্রয়োজন। গতকাল ‘ইমপ্লিকেশন অব লোন রিসিডিউলিং অ্যান্ড রাইট-অফ অন দ্য পারফরমেন্স অব ব্যাংকস’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।  
বিআইবিএম-এর মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালিদ, বিআইবিএম-এর প্রফেসর ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি, পূবালী ব্যাংকের সাবেক এমডি হেলাল আহমেদ চৌধুরী, জনতা ব্যাংকের এমডি মো. আব্দুস সালাম, প্রাইম ব্যাংকের এমডি আহমেদ কামাল খান চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
বিআইবিএম’র প্রফেসর এস এ চৌধুরী সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, এ মুহূর্তে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো যথাসময়ে ব্যাংকঋণ আদায় করা। কোন ব্যাংক যখন যথাসময়ে শর্ত অনুযায়ী গ্রাহকের কাছ থেকে ঋণ আদায় করতে ব্যর্থ হয়, তখন সে গ্রাহকের ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ দিতে ব্যাংকগুলো ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ দেয়। অপরদিকে ব্যাংকগুলো ব্যালেন্স শীট ও তাদের অংশীদারদের ব্যাংকের ভালো অবস্থান দেখানোর উদ্দেশে মন্দ ঋণ কমানোর জন্য কৌশলে ঋণ অবলোপনের আবেদন করে। কিন্তু বাস্তবতা এই যে, ঋণ পুনর্গঠন ও অবলোপন হলো খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার একটি সাময়িক কৌশল। ব্যাংকগুলোর এ কৌশলের কারণে পুরো ব্যাংকিং খাতে বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে ভালো গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, মন্দ গ্রাহকরা ছাড় পেয়ে যাচ্ছে। সে সাথে খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকগুলোর মূলধন খারাপের দিকে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০১৫ সালের ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, পুরো ব্যাংকিং খাতের বিতরণকৃত ঋণের ৪ দশমিক ৫ শতাংশই পুনঃতফসিল করা হয়েছে। যেটি মোট খেলাপি ঋণের ৫ শতাংশ এবং সমস্যাগ্রস্ত ঋণের ২৮ শতাংশ। ২০১৪ সালের তুলনায় পুনঃতফসিলকৃত ঋণের পরিমাণ ২০১৫ সালে ৫০ শতাংশ বেড়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। খেলাপি ঋণ কমাতে আগ্রাসী ব্যাংকিং থেকে বিরত থাকার জন্য তিনি ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, এতদিন বড় ঋণগ্রহীতা বেশি খেলাপি হলেও এখন দেখা যাচ্ছে এসএমই ঋণে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে।
এটি ব্যাংকিং খাতের জন্য অশানি সংকেত। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হচ্ছে, আমাদের ব্যাংকাররা বড় ঋণ দিয়েও আদায় করতে পারে না আবার ছোট ঋণ দিয়েও আদায় করতে পারে না। তিনি বলেন, আইনি ফাঁক-ফোকড়ের কারণে ঋণ খেলাপিরা পার পেয়ে যাচ্ছে। অনেক সময়ই খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য জামানতকৃত সম্পদ নিলামে তুললে কোর্টের আদেশে তা স্থগিত হয়ে যাচ্ছে। মামলা দায়ের করে খেলাপির কাছ থেকে ব্যাংকের ঋণ আদায় করার কষ্টসাধ্য। এজন্য মামলা দায়ের না করে সমঝোতার ভিত্তিতে আদালতের বাইরে বিরোধ মীমাংসার জন্য তিনি ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ব্যাংকাররা মামলাবাজ নয়। ব্যাংকারদের কাজ ঋণ বিতরণ ও আদায় করা। কিন্তু সমাজে এখন ব্যাংকারদের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা তৈরী হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভালো গ্রাহককে ঋণ পরিশোধে সময় দিন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ