Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অরুচি দূর করার উপায়

| প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০২২, ১২:৩২ এএম

প্রাণী এবং খাদ্য দুটি উৎপ্রোতভাবে জড়িত। খাদ্য ছাড়া কোন প্রাণীর বেঁচে থাকার কথা কল্পনা করা যায় না। আমাদের প্রতিদিনই বেঁচে থাকার জন্য খেতে হয়। এই খাওয়ার জন্যই বিশেষত আমাদের প্রানান্তকর চেষ্টা। নিজের ও পরিবারের খাদ্য যোগাড় করতে কত জনের কত রকম পরিশ্রম করতে হয়। আবার এই খাদ্য খেতেই অনেক সময় অরুচি দেখা দেয়। খানা সামনে এলেই খুব কষ্টকর মনে হয়। অথচ পেটে ক্ষুধা আছে খেতে ইচ্ছা নেই। আবার অনেক সময় দেখা যায় ক্ষুধাতো লাগছে না, খেতেও ইচ্ছা করছে না। ফলে আস্তে আস্তে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়। সামনে সুস্বাদু খাবার অন্যরা খাচ্ছে নিজে খেতে পারছেনা, অন্যরা বার বার খেতে তাগাদা দিচ্ছে, কি যে এক বিরক্তিকর অবস্থা।

অরুচি রোগটি সাধারণত অন্য রোগের কারণে হয়ে থাকে। মানসিক অশান্তি, নানা রকম চাপ, গ্যাসট্রিক আলসার ইত্যাদি রোগের কারণে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার অনেক সময় বয়স্কদের ক্ষেত্রে কোন কারন ছাড়াই এই রোগটি দেখা দেয়। এই রোগটি দুর করার সহজ ভেষজগুলো আমরা চিনে নিতে পারি :

১ । নিম: যে অরুচিকে কমানো যায় না, সে অবস্থায় সুজির হালুয়ার সাথে নিম পাতা গুঁড়ো ২৫০-৩০০ মিঃগ্রাঃ মিশিয়ে খেলে কয়েকদিনের মধ্যেই উপকার পাওয়া যায়।
২ । নিসিন্দা: নিসিন্দা পাতা ঘিয়ে ভেজে খেলে পুরানো অরুচি রোগ ভাল হয়ে যায়।
৩ । তেজপাতা: তেজপাতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে কুলি করলে অরুচি ভাল হয়।

৪ । রসুন: রসুনের স্যুপ অরুচি ভাল করতে খুব কার্যকর। ৩-৪ কোয়া রসুন এক কাপ পানিতে সিদ্ধ করে লেবুর রস মিশিয়ে দিনে ২ বার করে পান করলে কয়েকদিনেই অরুচি সেরে যাবে।
৫ । কুল: কুল বায়ু নাশক ও হজম শক্তি বৃদ্ধিকারক। তাই পেটে বায়ু থাকলে ও খেতে অরুচি হলে শুকনো কুল ও গুলমরিচের গুঁড়ার সাথে সৈন্ধব লবণ ও চিনি মিশিয়ে মাঝে মাঝে চেটে খেলে পেটের বায়ু কমবে ও অরুচও ভাল হবে।

৬ । গোল মরিচ: পেটে বায়ু ও খেতে অরুচি হলে শুকনো ফুল ও গোলমরিচের গুঁড়ার সাথে সৈন্ধব লবণ ও চিনি মিশিয়ে মাঝে মাঝে চেটে খেলে পেটের বায়ু কমবে এবং অরুচি দূর হবে।
৭ । অড়হড়: অরুচি যত পুরনোই হোক না কেন অড়হড় ডালের জুস অল্প আদা ও মরিচ বাটা দিয়ে সাঁতলে তার সাথে পরিমান মত লবণ মিমিয়ে বার বার একটু একটু করে খেতে হবে।

৮ । আপেল : আপেল ফল খেলেও অরুচি দূর হয়।
৯ । তেলাকুচা: সর্দি কাশি বা শ্লেষ্মা বিকারে মুখে অরুচি হলে তেলাকুচার পাতা একটু সিদ্ধ করে পানিটা ফেলে দিয়ে অল্প ঘি দিয়ে শাকের মত রান্না করে খেলে অরুচি ভাল হয়ে যায়।
১০ । পিপুল: আহারে অরুচি ও সাথে দাস্ত অপরিস্কার হলে ৪-৫ চামচ কুলে খাড়ার রস একটু গরম করে তার সাথে ২৫০ মিঃগ্রাঃ পিপুল গুঁড়া মিশিয়ে এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া যাবে।

১১ । হেলেঞ্চা: মুখে অরুচি, জিবে স্তর পড়ে আছে, এ অবস্থায় হেলেঞ্চা শাকের ২ চামচ রস গরম করে কয়েকদিন খেলে উপকার হয়।
১২ । বেতোশাক: বেতো শাক সাধারনত শীতকালিন একটি সুস্বাদু শাক। এটি জমিতে এমনিতেই জন্মায়। বর্তমানে চাষও করা হয়। এই শাকটি খেলে রুচি ফিরে আসে।
১৩ । খেঁসারির ডাল: খেঁসারির ডাল গরম পানিতে ভিজিয়ে খেলে পিত্তের আধিক্যের কারণ জনিত অরুচি ভাল হয়।

১৪ । পেয়ারা: ডাঁসা পেয়ারা ভাতে সিদ্ধ করে চটকে ছেঁকে বীজ বাদ দিয়ে ২-৩ চামচ মাত্রায় নিয়ে সেটাকে সামান্য লবণ ও চিনি মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
১৫ । ধনে: ধনে ভেঁজে মিহি গুঁড়ো করে ১-২ গ্রাম মাত্রায় অল্প লবন ও মরিচের সাথে মিশিয়ে খেলে অরুচি চলে যায়।
১৬ । করলা: পিত্ত বিকারে অরুচি হলে করলার রস এক চামচ করে প্রতিদিন দুবেলা খেলে উপকার পাওয়া যায়।


১৭ । আমড়া: যে কোন স্বাদের খাবার ই হোক কোনটাই মজা লাগে না। সবকিছুতেই অরুচি অথচ ক্ষুধায় পেট জ্বলে যায়। এ অবস্থায় আমড়া গাছের মাঝের অংশের ছালের রস ১ চামচ মাত্রায় আধ কাপ পানিতে মিশিয়ে এক টিপ লবন ও চিনি মিশিয়ে সরবতের মত খেলে উপকার পাওয়া যায়।

১৮ । চিচিংগা: চিচিংগা সিদ্ধ করে অল্প লবণ মিশিয়ে ও মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে খেলে উপকার হয়।
১৯ । কমলা: প্রতিদিন ১-২ টি কমলা খেলে অরুচি দুর হয়ে যায়।
২০ । গাজর: ২০-২৫ গ্রাম গাজর কুচি কুচি করে ৪-৫ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেকে গাজর কুচগুলো খেতে হবে।
২১ । লবঙ্গ: ১-৪ গ্রাম মাত্রায় লবঙ্গ অল্প ভেজে গুঁড়ো করে ১-২ গ্রাম নিয়ে অল্প লবণ মরিচের সাথে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।

মুন্সি আব্দুল কাদির



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অরুচি দূর করার উপায়
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ