পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রুপরেখা প্রণয়নে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন দলের স্থায়ী কমিটির এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসাথে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সাথে বৈঠকের মাধ্যমে আলোচনা শুরুও করেছেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, স্থায়ী কমিটির সভায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার এই আলোচনা শুরু হচ্ছে। আমরা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কথা বলব। তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রুপরেখা চূড়ান্ত করবো। প্রথম দিন মঙ্গলবার বিকেলে নাগরিক ঐক্যের সাথে সংলাপে বসে বিএনপি। নাগরিক ঐক্যের তোপখানা রোড়ে কার্যালয়ে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা কী ২০ দলীয় জোটের সাথে হবে না অন্যান্য দলের সাথেও হবে- এরকম প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সকলের সঙ্গেই হবে, অল দ্যা পলিটিক্যাল পার্টিসের সঙ্গে। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কথা তো বলতে হবে। অবশ্যই। তাদের সাথে কথা না বললে কেমন করে হবে। সকলের সঙ্গেই তো কথা বলতে হবে।
২০ দলীয় জোট থাকবে কিনা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০ দলীয় জোট তো আমরা এখন পর্যন্ত বিলুপ্ত করিনি। এই জোটের কী হবে সেটা এই আলোচনার মধ্য দিয়ে ফাইনালাইজড করবো।
সংলাপের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, আলোচনার মূল্য উদ্দেশ্য হচ্ছে- গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং এই ফ্যাসিবাদী সরকার যারা মানুষের সমস্ত অধিকার, ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং আজকে অর্থনীতি, দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠান ধবংস করে ফেলেছে সেই সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফিরিয়ে আনা, জনগণের অধিকার, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি বলেন, আমাদের মূল দাবিগুলো হচ্ছে- প্রথমত: দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সমস্ত রাজবন্দিদের মুক্তির দাবি, দ্বিতীয়ত: সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, তৃতীয়: সংসদ বাতিল করতে হবে এবং তারপরে পুনর্গঠিত নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংসদ এবং সরকার গঠন হবে। এগুলো হচ্ছে আমাদের পক্ষ থেকে দাবিগুলো থাকবে। এখন অন্যান্যগুলোর সঙ্গে এই আলোচনা করব এবং তাদের অন্যান্য দাবি নিয়ে একক দাবিনামা তৈরি করা হবে। একক দাবির প্রেক্ষিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু করবো।
এই একক ঐক্যের জোটের কী নামকরণ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা একে জোট বলছি না, অন্য কোনো কিছু বলছি না। আলোচনা করার মধ্য দিয়ে ফরমেট নির্ধারিত হবে।
২৬ মে সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি:
স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২৬ মে ঢাকা ছাড়া সকল মহানগর ও জেলা সদরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো যৌথভাবে বিভোক্ষ সমাবেশ করবে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসসহ দেশে সিনিয়র সিনিজেনদের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসম্মানজনক বক্তব্যের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ হবে বলে জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বন্যায় দূর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্থায়ী কমিটির সভায় দুর্গত এলাকায় সরকারি ত্রাণ তৎপরতার একেবারেই অপ্রতুল হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। একদিকে যখন বন্যা দূর্গত মানুষের ত্রাণের জন্য আহজারি করছে সেই সময়ে জনৈক মন্ত্রীর ত্রাণ বিতরণের সময় সাহায্য প্রার্থী হাজার মানুষের ওপর পুলিশি লাঠিচার্জের ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। বন্যার্তদের উপরে এই আক্রমণ আওয়ামী লীগের স্বভাবজাত অমানবিক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রতিফলন। সিলেটের বন্যা উপদ্রুত এলাকায় বিএনপির পক্ষ থেকে দূর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং ত্রাণ কার্যপরিচালনার জন্য স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বৃহত্তর সিলেট জেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সকল নেতা-কর্মীদের বন্যা দূর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব। গত ২৩ মে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়।
মির্জা ফখরুল-মান্না বৈঠক:
ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রুপরেখা প্রণয়নে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বিএনপির সংলাপ শুরুর প্রথম দিনে গতকাল বিকালে বিএনপি মহাসচিব তোপখানা রোডে নাগরিক ঐক্যের কার্যালয়ে আসেন। কার্যালয়ের পাশে শিশু কল্যাণ পরিষদ ভবনের সম্মেলন কক্ষে নাগরিক ঐক্যের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিএনপি মহাসচিব। বিকাল ৫টা থেকে দেড় ঘন্টা এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম ও নির্বাহী কমিটির সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন।
নাগরিক ঐক্যের নেতৃত্ব দেন দলটির সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নান। প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির উপদেষ্টা এস এম আকরাম, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাখখারুল ইসলাম নবাব, জিল্লুর চৌধুরী দিপু, জাহেদ উর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা আবু জাহেদ মোহাম্মদ সারওয়ার, আনিসুর রহমান খসরু, মাহবুব মুকুল, মঞ্জুর কাদের, এসএমএ কবির হাসান, আবু তালেব দেওয়ান, মুহিদুজ্জামান মুহিদ, আবদুর রাজ্জাক রাজা প্রমূখ।
বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে কার্যকর আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা একটা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য এই আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছি। উদ্দেশ্যে একটাই এটাকে একটা যৌক্তিক পরিণতির দিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমরা আশা করছি এই আলোচনার রেশ ধরে বাকী দলগুলোর সাথেও আলোচনা ফলোপ্রসু হবে। আমরা অন্যান্য দলগুলোর সাথেও কথা বলব। অতি দ্রুত আলাপ-আলোচনা তাদের সাথে শেষ করে আমরা আশা করছি যে, আমরা একটা যৌথভাবে আন্দোলনের সূচনা করতে পারবো এবং আমরা আশা করি খুব শিগগিরই আমরা এই কাজটা করতে পারবো।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই বৈঠক আনুষ্ঠানিক হলেও অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ে আমাদের সাথে বিএনপির কথা হয়েছে। আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য যেসব কাজ করা দরকার সবগুলো না হলেও মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে আজকের সভায় আমরা আলোচনা করেছি। এই মৌলিক বিষয়গুলোর একটা হচ্ছে এই সরকারের অধীনে একটা সুষ্ঠু, ভালো, গ্রহনযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। এটা এদেশের সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দল বলেছে। এরই ভিত্তিতে এই সরকার চলে যাওয়ার পরে পরবর্তি নির্বাচন ও সরকার প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত যারা দায়িত্বে থাকবেন তাকে যে নামে ডাকি আমরা- একটা গ্রহনযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করবেন এই দাবির ভিত্তিতে আমরা বিজয় পর্যন্ত লড়াই করব এই চিন্তায় কাজ করছিলাম-আজকে বৈঠকের প্রথমে আমরা সেই কথার পুনর্ব্যক্ত করেছি।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।