Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্বব্যাপী মৃত্যুদণ্ড বাড়ছে উদ্বেগজনকভাবে : অ্যামনেস্টি

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ মে, ২০২২, ৩:৫৬ পিএম

২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুদণ্ড উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। একই সঙ্গে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ শতাংশ। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ২০২১ সালে বিশ্বের ১৮টি দেশে অন্তত ৫৭৯টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে এবং অন্তত ২ হাজার ৫২ জনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়েছে। এই সংখ্যা ২০২০ সালের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। ইরান ২০১৭ সাল থেকে রেকর্ডসংখ্যক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। দেশটিতে গত চার বছরে ৩১৪ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
সউদী আরবেও মৃত্যুদণ্ড বাড়ছে বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি। দেশটিতে ২০২০ সাল থেকে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। অন্যদিকে মিয়ানমারে ৯০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
অ্যামনেস্টি বলেছে, বাংলাদেশ, ভারত, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, মিশর ও পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ডের হার বাড়তে দেখা গেছে। গত বছর বিশ্বের ৫৬ দেশে বিচারকেরা অন্তত ২ হাজার ৫২টি মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
অ্যামনেস্টির প্রধান অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, ‘২০২০ সালে (করোনা মহামারির কারণে) মৃত্যুদণ্ডের হার কমানোর সুযোগ ছিল, কিন্তু তার পরিবর্তে অনেক দেশ মৃত্যুদণ্ডকেই অপরাধ সমাধানের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছে। দেশগুলো মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারের প্রতি অবহেলা দেখিয়েছে।’
সারা বিশ্বের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের এ তালিকায় চীন, উত্তর কোরিয়া ও ভিয়েতনামকে যুক্ত করা হয়নি বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি। তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, এসব দেশেও হাজার হাজার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে বলে বিশ্বাস করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
মিয়ানমার, যেখানে দেশটির সেনাবাহিনী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করে নেয়। সেখানে সামরিক আইনের অধীনে মৃত্যুদণ্ড উদ্বেজনক হারে বেড়েছে। বিদ্যমান সামরিক ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে মামলা পরিচালনা এবং আপিল করার অধিকার ছাড়াই দেওয়া হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড। দেশটিতে ৯০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এবং আসামিদের হাজিরও করা হয়নি মামলার রায়ের সময়।
ক্রমবর্ধমান সংখ্যা সত্ত্বেও, অ্যামনেস্টি বলছে যে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার প্রবণতা রহিত করার পক্ষেই রয়েছে। গত বছর মাত্র ১৮টি দেশ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে বলে জানা গেছে। যা রেকর্ড রাখা শুরু করার পর থেকে এটি সর্বনিম্ন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৮৮ সালের পর থেকে মৃত্যুদণ্ড সর্বনিম্নে নেমে আসে। দেশটির ফেডারেল প্রশাসন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ওপর একটি অস্থায়ী স্থগিতাদেশ জারি করে সে সময়। ভার্জিনিয়া দেশটির ২৩তম রাজ্যে যেখানে মৃত্যুদণ্ড সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা হয়েছে।
বেশ কয়েকটি দেশ মৃত্যুদণ্ডের ব্যবহার রহিত করতে বা এর ব্যবহার সীমিত করার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে। গত জুলাই মাসে, সিয়েরা লিওনের পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে একটি বিল পাসের জন্য ভোট দেয় মৃত্যুদণ্ড সম্পূর্ণভাবে বাতিল করার জন্য। একই ধরনের আইন কাজাখস্তানে গত ডিসেম্বরে পাস হয়।
মালয়েশিয়াও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ওপরে স্থগিতাদেশ অব্যাহত রেখেছে এবং দেশটির সরকার বলছে যে তারা এ বছরের শেষ দিকে মৃত্যুদণ্ড ব্যবহারের বিষয়ে আইনী পরিবর্তন প্রস্তুত করবে। দেশটিতে বেশিরভাগ মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় মাদক সংক্রান্ত মামলায়। সূত্র: আল-জাজিরা



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অ্যামনেস্টি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ