Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারত গম রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত বদলাবে, আশা যুক্তরাষ্ট্রের

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০২২, ৩:২২ পিএম

আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভারতের সরকার গম রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে বলে আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জাতিসংঘ প্রতিনিধি লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড সোমবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই আশাবাদ জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের নিরপত্তা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বর্তমান মেয়াদে জাতিসংঘের অত্যন্ত ক্ষমতাধর এই পরিষদের অস্থায়ী সদস্য ভারত।
নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ফরেন প্রেস সেন্টার ভবনে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে গ্রিনফিল্ড বলেন, ‘আমরা (গম রপ্তানি বিষয়ে) ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত জানতে পেরেছি। বর্তমান পরিস্থিতে আমরা খাদ্যপণ্যের রপ্তানির প্রবাহ আব্যাহত রাখতে বিভিন্ন দেশকে উৎসাহ দিচ্ছি; কারণ আমরা মনে করি, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে যে খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে—কোনো দেশ যদি রপ্তানি বিষয়ক বিধিনিষেধ দেয়, সেই সংকট আরও তীব্র হবে এবং মানবিক বিপর্যয় আরও বাড়বে।’
গত ১৩ মে আন্তর্জাতিক বাজারে গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। ওই দিন এক বিবৃতিতে দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক কর্তৃপক্ষ ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেডের (ডিজিএফটি) পক্ষ থেকে বলা হয়, অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতেই এ পদক্ষেপ নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
গম উৎপাদনে বিশ্বের দেশসমূহের মধ্যে শীর্ষে আছে চীন, তারপরই ভারতের অবস্থান। তবে উৎপাদনে দ্বিতীয় শীর্ষ স্থানে থাকলেও গম রপ্তানিতে বেশ পিছিয়ে আছে দেশটি; বিশ্ববাজারে গমের মোট রপ্তানির মাত্র ১২ শতাংশ ভারতের।
গম রপ্তানিতে পিছিয়ে থাকার প্রধান কারণ দেশটির অভ্যন্তরীণ চাহিদা। নিজেদের বাজারের চাহিদা মেটানোর পর রপ্তানি করার জন্য গম তেমন অবশিষ্ট থাকে না ভারতের।
বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা— প্রতিবেশী এই তিনটি রাষ্ট্রেই মূলত গম রপ্তানি করে ভারত। এই তিন রাষ্ট্রের মধ্যে মধ্যে বাংলাদেশ ভারতীয় গমের সবচেয়ে বড় ক্রেতা।
২০২১-২২ অর্থবছরে মোট ৭০ লাখ টন গম রপ্তানি করেছে ভারত, যা দেশটির ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ পরিমাণ গম রপ্তানির রেকর্ড। সেই গমের ৫০ শতাংশই কিনেছে বাংলাদেশ।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকে ‘বৈশ্বিক সংকট’ হিসেবে উল্লেক করে লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বলেন, ‘বিশ্বে যে পরিমাণ খাদ্যশস্যে মজুত আছে, তা পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের খাদ্যাভাব দূর করার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু তারপরও প্রতিদিন আমরা দেখছি যে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ অনাহারে আছে। তাদের অধিকাংশেরই দিনে দুই বেলা খাবারে নিশ্চয়তা নেই।’
‘ইথিওপিয়া, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, সোমালিয়া আর ইয়েমেন এই মানবিক বিপর্যয়ের কয়েকটি উদাহারণ; এবং বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন এমন উদাহারণ সৃষ্টির প্রক্রিয়া চলছে। কারণ, যুদ্ধবাজরা মানুষের ক্ষুধাকে তাদের যুদ্ধের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করছে।’
বিশ্বজুড়ে চলমান এই খাদ্যসংকট সমাধানে জাতিসংঘের দায়িত্ব রয়েছে বলে বিশ্বাস করেন গ্রিনফিল্ড। সেই সূত্রে ভারতের সাম্প্রতিক এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে দেশটির সঙ্গে আলোচনা করার আশ্বাসও দেন তিনি।
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘যেহেতু খাদ্যপণ্যের সংকট একটি বৈশ্বিক সমস্যা, তাই এখানে জাতিসংঘের দায়িত্বশীল হওয়ার সুযোগ রয়েছে। ভারত নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য এবং আশা করছি পরিষদের অধিবেশনে এ ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে আমাদের। সূত্র: এনডিটিভি



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত-যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ