বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ মোকাবিলায় বরগুনা জেলায় ৬২৯টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ৮ হাজার ৪৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যেই উপকূলীয় মাছ ধরার ট্রলার গুলো নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টির কারণে রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
টানা বর্ষণে বোরোসহ রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তাই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগেই মাঠে থাকা ৮০ শতাংশ পরিপক্ক বোরো ধান কাটার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। মুগ ডালসহ অন্যান্য পরিপক্ক রবি ফসল দ্রুত ঘরে তুলতে হবে। এ ব্যাপারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মাইকিং করে কৃষকের কাছে তথ্য পৌঁছাতে বলেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কার্যালয় থেকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রাথমিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত বাড়লে জেলা প্রশাসন দুর্যোগবিষয়ক সভা করে প্রস্তুতি নেবে। বরগুনায় ৬২৯টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এগুলোতে দুই লাখ ৫০ হাজার মানুষের পাশাপাশি কয়েক লাখ গবাদি পশুও রাখা যাবে।
বরগুনা সদর উপেজলা বড় লবনগোলা গ্রামের কৃষক মো. মোসলেম আলী মল্লিক বলেন, ৪০ শতক জমিতে এ বছর মুগ ডাল আবাদ করেছি। এভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে সবকিছু নষ্ট হয়ে যাবে।’
রায়ের তবক গ্রামের তরমুজ চাষি মজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘চার একর জমিতে তরমুজ আবাদ করেছিলাম। বিক্রি প্রায় শেষের দিকে। মাঠে এখনও অনেক তরমুজ রয়ে গেছে। টানা বর্ষণ হলে মাঠের তরমুজ পচে যাবে।’
ঢলুয়া এলাকার কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, ‘মাঠে পাকা ধান। আর কয়েকদিন পরই ধান কেটে ঘরে উঠাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সকাল থেকেই টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টি দীর্ঘস্থায়ী হলে আমাদের ভোগান্তির শেষ থাকবে না। সবকিছু শেষ হয়ে যাবে।’
বরগুনা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলার দুই হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। টানা বর্ষণ হলে কৃষকদের ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে। তবে তাদের পাকা বোরো ধান কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে কিছুটা হলেও ক্ষয়ক্ষতি কমবে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান সোমবার জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। সংকেত বাড়লেই জরুরি সভা ডেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে জেলায় মোট ৬২৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির বরগুনার টিম লিডার জাকির হোসেন মিরাজ জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ৮ হাজার ৪৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন। ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি হলেই তারা কার্যক্রম শুরু করবেন।
সোমবার ভোররাত থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র প্রভাবে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে বরগুনায়। শুরু হয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। কোথাও কোথাও বইছে দমকা হাওয়া। অশনির প্রভাবে টানা বর্ষণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
বরগুনা জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) উপপরিচালক আবদুল লতিফ জানিয়েছেন, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় অশনি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
সোমবার (৯ মে) সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’। ধীরে ধীরে এটি উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।