পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সারাদেশে যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আজ মঙ্গলবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। জাতীয় ঈদগাহসহ সারাদেশের ঈদগাহ ও মসজিদগুলোতে পেশ ইমাম ও খতিবরা ঈদ জামাত পূর্ব বয়ানে মাহে রমজান এবং পরবর্তী এগারো মাসের আমল সর্ম্পকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরেন। সারাদেশের ঈদগাহ ও মসজিদগুলোর ঈদ জামাতে মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। এদিকে, সোমবার মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত করেছে। ঈদে নানা রঙে-ঢঙে সেজেছে ছোট্ট শিশুরা। সোমবার সকালে মধ্যপ্রাচ্যের সউদী আরবে যথাযথ মর্যাদায় মসজিদুল হারাম শরিফে ঈদের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। এরপরই একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও কুশল বিনিময় করেন বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মুসল্লিরা। ঈদ জামাত শেষে পেশ ইমাম ও খতিবরা মোনাজাতে বলেন, সারা বিশ্বের মুসলিম মুমিনদের জীবনে ঈদুল ফিতর বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও প্রকৃত সফলতা। তারা দেশ জাতির উন্নতি সমৃদ্ধি এবং মুসলিম উম্মাহর শান্তি কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন। মোনাজাতে আল্লাহর নৈকট্য ও ক্ষমা লাভের আশায় মুসল্লিদের মাঝে কান্নার রোল পড়ে যায়। আল্লাহ হুম্মাহ আমিন আল্লাহ হুম্মাহ আমিন ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠে ঈদগাহর ময়দান।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের নামাজ পূর্ব বয়ানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব ও গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা মুফতি রুহুল আমিন বলেন, দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর মুসলমানের মাঝে হাজির ঈদুল ফিতর। যাঁরা রমজান মাসে সিয়াম সাধনা, সমস্ত প্রকারের আহকামাত পালন এবং ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে নিজেদের পরিশুদ্ধ করে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায়ের জন্য ঈদগাহে হাজির হয়েছে তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমার পুরস্কার রয়েছে। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ‘ঈদুল ফিতরের দিন সকালে আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদের পাঠিয়ে দেন। তারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েন এবং গলিপথের মুখে দাঁড়িয়ে আওয়াজ করে ঘোষণা দিতে থাকেন, হে উম্মতে মোহাম্মদি! তোমরা তোমাদের দয়াময় রবের প্রতি মনোনিবেশন করো। অফুরন্ত ভান্ডার থেকে তিনি তোমাদের দান করবেন। বড় বড় গোনাহ মাফ করে দেবেন।’ এরপর লোকজন যখন নামাজের স্থানে পৌঁছে, আল্লাহ তায়ালা তখন ফেরেশতাদের সম্বোধন করে বলেন, ‘ওই মজদুরদের কী বিনিময় হতে পারে, যারা তাদের কাজ সম্পন্ন করেছেন?' ফেরেশতারা বলেন, তাদের বিনিময় হচ্ছে পূর্ণরুপে পাওনা তাকে দিয়ে দেওয়া। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা সাক্ষী থাকো, বিনিময়ে আমি তাদের আমার সন্তুষ্টি ও ক্ষমা দান করলাম এবং তাদের গোনাহগুলো নেকির দ্বারা পরিবর্তন করে দিলাম।’ খতিব আরো বলেন, ঈদ মানেই মুমিনের জন্য আনন্দ, খুশির উচ্ছ্বাস। রাসুল সা. যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করে এলেন, দেখলেন সেখানকার ইহুদি ধর্মের লোকেরা দুই দিন উৎসব পালন করেন। সে সময় রাসুল সা. ইসলামে দুটি ঈদের ঘোষণা দিলেন। তবে মুসলমানের ঈদ নিছকই ঈদ নয়, ইবাদতও বটে। মুসলমানের সামগ্রিক কাজই যে ইবাদতের অন্তর্ভূক্ত এর উৎকৃষ্ট প্রমাণ এই ঈদ। এজন্য মুসলমানদের তাদের ধর্মীয় উৎসবগুলো পালন করতে হয় ধর্মীয় আঙ্গিকে। লাগামহীন আনন্দ-ফুর্তিতে মেতে ইসলামের চেতনা ও আদর্শকে ভুলে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
ঈদের দিনের অন্যতম আমল সাদকাতুর ফিতর আদায় করা। ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বেই সাদকাতুল ফিতর আদায় করতে হয়। সদকাতুল ফিতর রোজার ত্রুটি বিচ্যুতির পরিপূর্নতা করে। সদকাতুল ফিতরে মাধ্যমে যেমন রোজার ত্রুটিগুলো পরিপূর্ণতা পায় তেমনি গরীব দুখিদের মাঝে এটা বন্টনের মাধ্যমে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগী হয়। ফিতরার মাধ্যমে অসহায় মানুষের সহায়তার ব্যবস্থা করে ইসলাম এক অনন্য নজীর স্থাপন করেছে। খতিব বলেন, ঈদ পরবর্তী শাওয়ালে ৬ রোজা রাখার ফজিলত ও মর্যাদা অপরিসীম । এ রোজাগুলো পালনে বছরজুড়ে রোজার সাওয়াব পাওয়ার সুখবর দিয়েছেন বিশ্বনবি সা.। হজরত আবু আইয়ুব আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোজা রাখলো এবং শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা রাখলো, এটি (শাওয়ালের ৬ রোজা) তার জন্য সারা বছর রোজা রাখার সমতুল্য।’ (মুসলিম)
আল্লাহ তায়ালা আমাদের আমল করার তৌফিক দিন। আমীন। ঢাকার ডেমরার ঐতিহাসিক দারুন নাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসা মসজিদের খতিব মুফতি মো.মনিরুল ইসলাম ঈদ জামাতের বয়ানে বলেন, উম্মতে মোহাম্মদির পূর্ব পূরুষদের জন্যও রোজাকে ফরজ করা হয়েছিল। রোজার হাকিকাত অর্জিত হয়েছে কী না হিসাব করতে হবে। বেশি বেশি তওবাহ করতে হবে। দুনিয়াবি কোনো জিনিসের জন্য আখেরাতকে বরবাদ করা যাবে না। দ্বীনকে সব সময়ে প্রাধান্য দিতে হবে। খতিব বলেন, রমজান মাসের আমলগুলো বাকি ১১ মাস চালু রাখতে হবে। তাহাজ্জুত পড়া, গরিব অসহায়কে দান খয়রাত প্রদান অব্যাহত রাখতে হবে। গিবত, মিথ্যা বলা এবং ধোকাবাজি পরিহার করতে হবে। নামাজ আদায়ে অলসতা করা যাবে না। সন্তানদের জন্য শুধু গাড়ি বাড়ি তৈরি করলে হবে না দ্বীনি শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে সন্তানকে সম্পদে পরিণত করতে হবে। তা’হলেই ইহকাল ও পরকালে কল্যাণ বয়ে আনবে। তিনি বলেন, যে রমজান মাসের রোজা রাখলো আর শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা রাখবে সে পুরো এক বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবেন। আল্লাহ সবাইকে বেশি বেশি নেক আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
ঢাকার শেওড়াপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি সিফাতুল্লাহ রহমানি আজ ঈদুল ফিতরের খুৎবার বয়ানে বলেন, ঈদুল ফিতর মুসলিম জাতির জন্য একটি ইবাদতমূলক জাতীয় উৎসব। এর আনন্দ খুশি সব কিছুই ইসলামী শরীয়তের সীমানার ভিতর থেকেই করতে হবে। গান বাজনা অথবা অশ্লীল কোনো কাজ প্রদর্শনের মাধ্যমে আনন্দ খুশি প্রকাশ করা যাবে না। কেননা রোজার মতো একটি মহান ফরজ হুকুম পালনের পর এই জাতীয় উৎসবের অনুমতি দেয়া হয়েছে। রোজা তো একটি ইবাদত। যার মাধ্যমে মানুষেরা অন্যায় অপরাধ থেকে বেঁচে থাকার জন্য অনুশীলন করেছে। মৃত্যু পর্যন্ত গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার সংকল্প করেছে। এখন যদি এক মাস রোজা রাখার পর গুনাহ দ্বারা আনন্দ উৎসব শুরু করা হয়। তাহলে রোজা রাখার উদ্দেশ্য প্রতিফলিত হবে না। ঈদুল ফিতর বিশেষ কোনো দিবস বা বিশেষ কোনো ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত কোনো উৎসব নয়। মহান আল্লাহ ইচ্ছা করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম দিন, হিজরতের দিন, বদরের যুদ্ধ বিজয়ের দিন অথবা সকল বিজয়ের দিনকে ঈদের দিন ঘোষণা করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। কেন করেননি? এ দিনগুলোর সাথে বিশেষ কোনো ইবাদতের সম্পর্ক নেই। তবে রমজান মাসের রোজা পালনের পর ঈদ দান করেছেন। সুতরাং আমাদের মুসলমানদের ইসলামের গন্ডির ভেতর থেকেই ঈদ আনন্দ উৎসব করতে হবে। তবেই এ রোজা ও সিয়াম সাধনা আমাদের পরিবার সমাজ ও দেশের জন্য স্বার্থক হবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে। অশান্তি, বিশৃঙ্খলা দূর হবে। মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী আজ পবিত্র ঈদুল ফিতরের খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বিতীয় হিজরীতে প্রথম ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। একই হিজরীর শাবান মাসে রমজানের রোজা ফরজ হয় এবং সদকায়ে ফিতর, ঈদুল আযহার নামাজ ও কোরবানি ওয়াজিব হয়। ঈদ আরবি শব্দ। যার অর্থ আনন্দ, উৎসব, পুনরাগমন, পুনরাবৃত্তি ইত্যাদি। প্রতি বছর ধারাবাহিকভাবে ঈদের পুনরাগমন হয় বলে ইহাকে ঈদ বলা হয়। হাদীসের আলোকে বুঝা যায়, মুসলমানের ঈদ আনন্দ হতে হবে শরীয়ত নির্দেশিত পন্থায়। যাতে গোনাহের লেশমাত্র থাকবে না। ভিন্ন সংস্কৃতির আবহে নাচ-গান, হৈ হুল্লোড় করা মুসলমানের ঈদ আনন্দের উপকরণ হতে পারে না। এগুলো নিছক নফসানি ও শয়তানি কাজ যা কোন অবস্থাতেই একজন মুমিন করতে পারে না। ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ এই শাওয়াল মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখি। এ রোজার ফজিলত অনেক।
তিনি আরও বলেন, আজ 'আল্লাহু আকবার' এর প্রেরণায় উজ্জীবিত হওয়ার দিন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদেরকে কল্যাণকর বিধান দিয়ে তা পালন করার তৌফিক যে দিয়েছেন, সেজন্য আল্লাহর শোকরগোযারী করে তাঁর মহত্ব ও বড়ত্ব বর্ণনা করাই হল ঈদুল ফিতরের অন্যতম তাৎপর্য। ঈদুল ফিতর উদযাপনের পুরো বিষয়টিই ‘আল্লাহু আকবার’ এর চেতনা ও মর্মবাণীকে প্রকাশিত করে। এজন্য মৌখিকভাবেও ‘আল্লাহু আকবার’ বলা এদিনের একটি বিশেষ আমল। খতিব বলেন, আসুন, এই দিনে আমরা আল্লাহু আকবারের প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে সকল মিথ্যা ‘ইলাহ’র দাসত্ব পরিত্যাগ করে এক আল্লাহর পূর্ণ আনুগত্যে সমর্পিত হই। এই দিনে আনন্দ উপভোগের সময় আমরা যেন আমাদের পার্শ্ববর্তী গরীব অসহায় মানুষের কথা ভুলে না যাই। তাদের মুখেও যেন একটুখানি আনন্দের হাসি ফুটে সে ব্যাপারে যতœবান হই ও ফিকির করি। আল্লাহ আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করেন, আমীন। গুলিস্তানস্থ ফুলবাড়িয়া রেলওয়ে জামে মসজিদের খতীব, তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা মুহিউদ্দীন রাব্বানী ঈদের খুৎবায় বলেন, যে সব আনুষ্ঠানিক উৎসব মুসলমানদের অস্তিত্বের জানান দেয় ‘ঈদ’ তার অন্যতম। ‘ঈদ’ শব্দটি আরবি। যা আওদ থেকে উৎকলিত। এর শাব্দিক অর্থ ঘুরে ঘুরে আসা, প্রত্যাবর্তন করা। প্রচলিত অর্থে ঈদ মানে আনন্দ বা খুশি। মুসলমানদের জাতীয় সাংস্কৃতিক চেতনার প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে ঈদ। বছরে পালিত হয় ঈদুল্ ফিতর ও ঈদুল আযহা নামে দু’টি উৎসব । শাওয়ালের বাঁকা চাঁদ বয়ে আনে মুমিন মুসলমানের আনন্দ ও উৎসবের ঈদ। অর্থাৎ দীর্ঘ একমাস পবিত্র সিয়াম সাধনার পর আসে ‘ঈদুল ফিতর’। আমাদের জাতীয় কবি নজরুলের ভাষায় বলা যায় ‘রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশির ঈদ।’’ নানা দিক দিয়ে ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য অপরিসীম। এ ব্যাপারে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘‘যখন ঈদুল ফিতরের দিন আসে, তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যারা রোজা পালন করেছে; তাদের সম্পর্কে ফিরিশতাদের নিকট গৌরব করে বলেন- ‘‘ হে আমার ফিরিশতাগণ, তোমরা বলতো! যে শ্রমিক তার কাজ পুরোপুরি সম্পাদন করে তার প্রাপ্য কি হওয়া উচিত? উত্তরে ফিরিশতাগণ বললেন, হে মাবুদ! পুরোপুরি পারিশ্রমিকই তার প্রাপ্য। ফিরিশতাগণ, আমার বান্দা-বান্দীগণ তাদের প্রতি নির্দেশিত ফরজ আদায় করেছে, এমনকি দোয়া করতে করতে ঈদের (ওয়াজিব) নামাজের জন্য বের হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় আমার মহিমা, গরিমা, উচ্চ মর্যাদা ও উচ্চাসনের শপথ, আমি অবশ্যই তাদের প্রার্থনায় সাড়া দেব। এরপর নিজ বান্দাগণকে লক্ষ্য করে আল্লাহ পাক ঘোষণা দেন; তোমরা ফিরে যাও, ‘‘আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম এবং তোমাদের সাধারণ পাপরাশিকে পুণ্যে পরিণত করে দিলাম। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তখন তারা ক্ষমা প্রাপ্ত অবস্থায় (বাড়িতে) প্রত্যাবর্তন করে।’’ (আততারগীব ওয়াত তারহীব)।
ঢাকার মিরপুর ১১নং বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব শায়খ আবু সালেহ মোহাম্মদ উল্লাহ আজ ঈদুল ফিতরের খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, দীর্ঘ একটি মাস সিয়াম সাধনার পরে আজ আমরা ঈদের নামাজের জন্য একত্রিত হয়েছি। আজকের ঈদের খুশি মূলত কাদের জন্য? আমি যদি একটি উদাহরণ দেই তাহলে আমরা সকলেই উপলব্ধি করতে পারব খুশিটি মূলত তাদের জন্য? কোন এক মামলায় যদি দুই জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয় এরপরে মামলার শুনানিতে একজনের মুক্তি আর অপর জনের ফাঁসি হয় তাহলে এই সংবাদটি কি উভয়ের জন্য খুশির সংবাদ? অবশ্যই না। এটি মুক্তিপ্রাপ্তের জন্য যেমন খুশির ঠিক তেমনি ফাঁসির আসামির জন্য ততটা দুঃখের। অনুরূপ রাসূলুল্লাহ বলেছেন, রমজান যারা পরিপূর্ণ সিয়াম সাধনা করবে ঈদের রাত্রেই আল্লাহ পাক তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন। অপরদিকে যারা রমজান পাওয়ার পরেও যে তার গুনাহ গুলো সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মাফ করাতে পারল না সে ধ্বংস হয়ে যাক। তাহলে বুঝে আসে আজকের দিনটি যারা সিয়াম সাধনা করেছে তাদের জন্য যতটা খুশির যারা সিয়াম সাধনা করে নাই তাদের জন্য ততটা দুঃখের। এজন্য আজকে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হব জীবনে সামনে যতবার রমাজান পাব পরিপূর্ণ সিয়াম সাধনা করে ঈদের নামাজ পড়তে আসার চেষ্টা করবো। বিগত রমজান থেকে আমরা অনেক কিছু শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি। খতিব বলেন, অনুরূপ একদিন আমার জীবনটাও এভাবেই দেখতে দেখতে শেষ হয়ে যাবে। আমি যদি আমার জীবনকে আল্লাহর বিধান পালনের মাধ্যমে অতিবাহিত করি তাহলে মৃত্যু পরবর্তী সময়টা ঈদের মতো কাটবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ সবাইকে নেক আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।