Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা

জিনাত রহমান | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৫ এএম

পুষ্টিকর খাবার বলতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ছয়টি গ্রুপের খাবারের সমন্বয়কে বোঝায়। খাবারের এ ছয়টি গ্রুপ হলো: শর্করা, আমিষ, ভিটামিন, খনিজ, পানি ও চর্বি। বাংলাদেশের বাস্তবতায় মানুষ এখনও চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত পরিমাণ ভাত ও অপর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান সম্বলিত খাদ্যের উপর নির্ভরশীল। ফলে, অন্য যে পুষ্টিকর খাবারগুলো। যেমন শাক-সবজি, মাছ-মাংস, ডিম-দুধ-ডাল, তা খাওয়ার ব্যাপারে খুব একটা জোর দেয়া হয় না।

সঠিক খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারে মানুষের সচেতনতার অভাব পুষ্টিহীনতার প্রধান কারণ বলে গবেষণায় চিহ্নিত করা হয়েছে। অনেকে মাছ-মাংস, শাক-সবজি ফলমূলের মতো পুষ্টিকর খাবার অর্থের অভাবে কিনতে পারছে না। অথচ দেশীয় এবং সহজলভ্য অনেক খাবার উচ্চ পুষ্টিমান সম্পন্ন। আবার অনেকের এসব খাবার কেনার ক্ষমতা থাকার পরও সচেতনতার অভাবে তারা জানেন না, কোন খাবার কী পরিমাণে খেতে হয়। গড়ে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের দিনে ২১০০ কিলোক্যালোরির প্রয়োজন। তাই দেখা যায়, মানুষ তিন/চার বেলা পেট ভরে খাচ্ছে ঠিকই, প্রয়োজনীয় ক্যালরিও পূরণ করছে, কিন্তু এতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পূরণ হচ্ছে না। পেট পুরে শর্করা খেলেও সেখানে যদি অন্যান্য পুষ্টি উপাদান না থাকে, তাহলে সেটাও পুষ্টিহীনতা। এছাড়া খাদ্যে ভেজালের আতঙ্কে অনেকে জেনে বুঝেও পুষ্টিকর খাবার এড়িয়ে চলে। আবার যে উপায়ে রান্না করা হয়, তার কারণে খাবারের পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়ে যায়।

আমাদের দেশে দারিদ্র্যসীমার নীচে যে জনগোষ্ঠী রয়েছে, তারাই মূলত পুষ্টিহীনতায় ভোগে বেশি। তবে ক্রয়ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও সচেতনতার অভাবে পুষ্টিহীনতায় ভুগছে, এমন একটি বড় জনগোষ্ঠীও রয়েছে এ কাতারে। পুষ্টিবিদদের মতে, একেক বয়সে পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা একেক রকম। এরমধ্যে বয়ঃসন্ধিকাল এবং গর্ভ ধারণের সময় নারীদের পুষ্টির চাহিদা তুলনামূলক বেশি থাকে। বাংলাদেশে মা-শিশুর পুষ্টির দিকটি যেভাবে নজরে রাখা হয়, বয়ঃসন্ধিকালীন ছেলে-মেয়ের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর বিষয়টি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যথাযথ গুরুত্ব পায় না। এছাড়া প্রবীণ জনগোষ্ঠীর পুষ্টির দিকটিও অবহেলিত থাকে বলে গবেষণায় জানা গেছে। এছাড়াও কম বয়সী মেয়েদের নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূল লিঙ্গভিত্তিক সমস্যায় পড়তে হয়, যা তাদের অপুষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নিয়মকানুন এবং প্রথা, বাল্যবিয়ে, কমবয়সে গর্ভধারণ ইত্যাদি কারণে মেয়েদের অপুষ্টির সম্মুখীন হতে হয়।

পুষ্টিহীনতা দূর করতে গবেষণায় মূলত তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। প্রথমত, নানাবিধ পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার পাওয়ার সুযোগ বাড়ানো। আমিষের ঘাটতি পূরণে বড় মাছের উৎপাদন বাড়ানো হলেও এর চেয়ে বেশি পুষ্টিকর ছোট মাছের উৎপাদন বাড়ানোর প্রতিও আমাদের আগ্রহী এবং সচেতন হওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি এ ধরণের সহজলভ্য পুষ্টিকর খাবার সব শ্রেণীর মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা প্রয়োজন। সমাজের সকল স্তরে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গঠনের জন্য এমনভাবে প্রচারণা চালানো উচিত যেন এ বিষয়ে সবাই সচেতন হয় এবং কমমূল্যে সহজলভ্য বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্যের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়। এজন্য ব্যক্তি পর্যায়ে অভ্যাস পরিবর্তনের পাশাপাশি সামাজিক পরিবর্তনেরও প্রয়োজন।

বাংলাদেশের খাদ্যনীতি, কৃষিনীতিতে খাদ্য উৎপাদনে যতো জোর দেয়া হয়েছে, সে তুলনায় খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ঘাটতি থেকে গেছে। তাই সচেতনতা বৃদ্ধিতে ব্যক্তি পর্যায়ে অভ্যাস পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক পরিবর্তন দরকার। এছাড়া কন্যাশিশু ও নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে তাদের পুষ্টিজনিত অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো এবং এর মাধ্যমে উন্নত মানব সম্পদ হিসেবে তাদের তৈরি করার ওপরও গবেষণায় জোর দেয়া প্রয়োজন, যদিও এ বিষয়ে আগের তুলনায় অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে কাজ হচ্ছে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা তাদের খাবারে বেশি শাকসবজি, ফল, বাদাম, শস্য, মাছ, অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড জাতীয় খাদ্য ও মাছের তেলের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করেছে, তাদের (কন্ট্রোল গ্রুপ) মধ্যে বিষণ্নতা কমে গেছে। আবার জন্ম থেকে আট বছর বয়স সময়ে কম পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ খাদ্য, বেশি সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড, পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্যগ্রহণ শৈশব ও কৈশোরকালে দুর্বল মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত। অপুষ্টির সাথে সাথে অতিপুষ্টির কারণেও শারীরিক সমস্যা তৈরি হয়। আমরা জানি স্থূলতার পেছনে একাধিক কারণ আছে, অসম খাদ্যাভ্যাসের কারণে স্থূলতা হতে পারে। স্থূলতা ও মানসিক স্বাস্থ্যের মধ্যে একটি জটিল সম্পর্ক আছে।

পুষ্টিকর স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে। ব্রেনের প্রোটিন ও এনজাইম নিউরো ট্রান্সমিটার হিসেবে কাজ করে, কিছু হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্নায়ুতন্ত্র ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। খাদ্য অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে; যা অন্ত্রের ভেতরের অবস্থাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ফলে অন্ত্রের প্রদাহ কমে যায়। প্রদাহ চিন্তাধারা ও মেজাজের ওপর প্রভাব ফেলে। পরিপাকতন্ত্রে সেরোটিনিন উৎপন্ন হয়। খাদ্য সেরোটিনিন মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সেরোটিনিন মস্তিষ্কের স্নায়ুকে সংযোগকারী একটি নিউরোট্রান্সমিটার, যা মেজাজ, আনন্দ, চিন্তা, ঘুম প্রভৃতি প্রভাবিত করে। কিছু কিছু খাদ্য আমাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আবার খাদ্যে জিঙ্ক কম থাকলে তা বিষণ্নতার কারণ হয়। জিঙ্ক আমাদের স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে। দই, মাছ, গরুর মাংস, ডিম, দুধ, পনির, মিষ্টিকুমড়ার বিচি, মাশরুম, তিল, চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, পালংশাক ইত্যাদি জিঙ্কের ভালো উৎস।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আমাদের মুড নিয়ন্ত্রণ করে। পাশাপাশি এটি চিন্তা করতে ও চিন্তাকে উন্নত করতে সাহায্য করে। ওমেগা-৩ হলো অসম্পৃক্ত ফ্যাট, যা মূলত মাছের তেলে পাওয়া যায়। তবে সামুদ্রিক মাছে বেশি পাওয়া যায়। ইলিশ, টুনা, স্যামন, সার্ডিন মাছ ছাড়াও কিছু খাবারে ওমেগা-৩ পাওয়া যায়। আবার, আখরোট, চিয়াসিড, তিসির তেল, সয়াবিন, সবুজ পাতাওয়ালা সবজিতেও ওমেগা-৩ পাওয়া যায়। প্রতিদিন চাহিদামতো ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাদ্য মস্তিষ্কের রক্তপ্রবাহের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে ও প্রদাহ কমায়।

অ্যান্টি অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাদ্য ক্লান্তি দূর করতে, প্রাণোচ্ছলতা বজায় রাখতে, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি, ই, বিটা ক্যারোটিন, কাঠবাদাম, গ্রিন টি, লাল আটা, বাদাম প্রভৃতি স্মৃতিশক্তিজনিত সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

বি-১২ ভিটামিনের অভাবে অবসাদ, ক্লান্তি, বিরক্তি, মানসিক চাপ, হতাশার মতো সমস্যা হয়। বিস্মৃতি বা ভুলে যাওয়া ভিটামিন বি-১২ ঘাটতির কারণে হয়ে থাকে, বিশেষ করে বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি থাকে। তাই স্মৃতিশক্তিকে উন্নত করতে ভিটামিন-১২ সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন। দুধ, ডিম, পনির, কম চর্বিযুক্ত দইয়ে ভিটামিন-১২ পাওয়া যায়।

ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় রাখা প্রয়োজন। এটি অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, কোলাজেন কলার নমনীয়তা রক্ষা করে দ্রুত ঘা শুকায়। ভিটামিন-সি বিষণ্নতা কমাতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটারের চলাচল ও তথ্য আদান-প্রদানে ভূমিকা রাখে। এটি সেরোটিনিন তৈরির কাজেও লাগে। আমাদের আবেগ, মেজাজ, ব্যথা-বেদনা ও অনুভূতি নিয়ন্ত্রণে সেরোটিনিনের ভূমিকা রয়েছে। অন্ত্রে আয়রন শোষণে এটি কাজ করে। লেবু ও লেবুজাতীয় ফল ভিটামিন-সি এর অন্যতম প্রধান উৎস। কমলা, আমলকী, জাম্বুরা, মাল্টা, বরই, কাঁচা মরিচ, জাম, আঙুর, পেঁপে, সবুজ শাকসবজি প্রভৃতিতে ভিটামিন সি পাওয়া যায়।

আয়রনের অভাবে অ্যানিমিয়া হয়ে থাকে। আর এ কারণে বিষণ্নতা তৈরি হতে পারে। হিমোগ্লোবিনের অভাবে শরীরে যেমন নানা রকম সমস্যা তৈরি হয়, ঠিক একইভাবে মনোযোগে সমস্যা হয়। কোনো কিছুতে মনোযোগ দেওয়া যায় না। গরু বা খাসির কলিজা, গরুর মাংস, ডিম, ছোলা, আটা, শিমের বিচি, গুড়, খেজুর, কিশমিশ, কলা, জাম, আমড়া, তরমুজ, মেথি, পুঁইশাক, ছোলা শাক, কালো কচুশাক, পালংশাক প্রভৃতি খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে এই ঘাটতি দূর করা যায়।

শস্যদানায় থাকে আঁশ, নানা ধরনের ভিটামিন ও খনিজ। লাল আটা, লাল চাল দিয়ে তৈরি খাদ্য উপকারী। দানা শস্য পরিশোধন করা হলে এর পুষ্টিগুণ অনেকটা কমে যায়। দানা শস্য থেকে গ্লুকোজ পাওয়া যায়। গ্লুকোজ সরাসরি মস্তিষ্কে ব্যবহৃত হয়। লো জিআই-সমৃদ্ধ খাবারগুলো রক্তে ধীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করে দিনভর মানসিকভাবে সচেতন থাকতে সাহায্য করে। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বা জিআই অথবা লো-জিআই হচ্ছে খাদ্য গ্রহণের ২ ঘণ্টার মধ্যে রক্তের গ্লুকোজের মোট মাত্রা বৃদ্ধিকে বোঝায়। জিআই নির্ভর করে খাদ্যে অবস্থিত কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট ও খাদ্যের আঁশের ওপর। গ্লুকোজের জিআই ১০০, মাছ ও মাংসের জিআই শূন্য, ডাল, দুধ, সবজি ও বেশিরভাগ ফলের জিআই কম। বাদামি চাল, আস্ত গম মধ্যম জিআই-সমৃদ্ধ খাদ্য।
খাবার সুষম রাখতে আমাদের প্রতিদিনের খাবারে শস্য-জাতীয় খাবার যেমন চাল-আটা-ভুট্টা; প্রোটিন জাতীয় খাবার, যেমন মাছ-মাংস-ডিম-ডাল চাহিদা অনুযায়ী রাখা প্রয়োজন। দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাদ্য বয়সভেদে পরিমিত পরিমাণে বা চাহিদা অনুযায়ী, শাকসবজি ও ফলমূল পর্যাপ্ত পরিমাণে ও তেল ও চর্বি জাতীয় খাদ্য বয়সভেদে প্রয়োজন অনুযায়ী গ্রহণ করা প্রয়োজন। অপুষ্টি বা অতিপুষ্টি দুটিই শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই বয়স, লিঙ্গ, কাজের ধরনের ওপর ভিত্তি করে দৈনিক ক্যালরি গ্রহণ করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে সবার আগে প্রয়োজন আমাদের সচেতনতা।

লেখক: ফ্রিল্যান্স রাইটার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা
আরও পড়ুন
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->