Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বামদলগুলো বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে একমত

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি

রফিক মুহাম্মদ | প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার বিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি ও কৌশল প্রায় চূড়ান্ত করেছে বিরোধী দলগুলো। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায়ে সমমনা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ‘যুগপৎ’ কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামার বিষয়ে একমত হয়েছে। ঈদের পর পরই বিরোধী সব রাজনৈতিক দল সরকার পতনের এক দফা দাবি নিয়ে আান্দোলন শুরু করবে।

এবার বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে কোন জোট থাকবে না। বিএনপি, জামায়াত, এলডিপিসহ অন্যান্য দলগুলো একই দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করবে। তেমনি বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা, নাগরিক ঐক্য, গণফোরামসহ সমমনা অন্যান্য দলগুলোও একই দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করবে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটি জানা গেছে।
নেতারা জানিয়েছেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে কোনও কর্মসূচি পালন করা হবে না। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রধানদল বিএনপি জোটের শরিকদের সাথে পৃথক আলোচনা করেছে। জোটের শরিকরাও এ ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেছে।
সরকার বিরোধী আন্দোলন বেগবান করতে রাজপথের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি একটি সর্বদলীয় জোট গঠনের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। যে সব দল এ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় তাদের সবাইকে নিয়ে এক মঞ্চে আন্দোলন শুরুর প্রক্রিয়ায় তারা অগ্রসর হচ্ছিল। এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতারা পৃথকভাবে সব দলের নেতাদের সাথে আলোচনাও করেছে। এ বিষয়ে ২০ দলীয় জোটের শরিকদলগুলো এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকরা একমত হলেও জামাতের সাথে জোটবদ্ধ হয়ে একমঞ্চে আন্দোলনের ব্যাপারে বামদলগুলো আপত্তি জানায়। মূলত বামপন্থি দলগুলোর আপত্তির কারণেই সরকার বিরোধী সব দল জোটবদ্ধ এক মঞ্চে আসছে না। তবে একই ইস্যুতে তারা সবাই যুগপৎ আন্দোলনে রাজপথে নামতে সম্মত হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, সরকার বিরোধী আন্দোলন আমাদের চলমান রয়েছে। এ আন্দোলন জোটবদ্ধ নাকি একই দাবিতে যুগপৎ হবে সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমরা সরকার বিরোধী সব দলকে নিয়ে আন্দোলনকে সফলতার দিকে নিয়ে যেতে চাই। সরকারের পতন ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে যারা একমত তাদের সবাইকে নিয়ে ঈদের পর আন্দোলন শুরু হবে। এরপর আন্দোলনের গতিপথই বলে দেবে সবাই একমঞ্চে আসবে কি না।
বিএনপির দলীয়সূত্রে জানা যায়, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জোট সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ২০ দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে এ বিষয়টি নিয়ে পর্যায় ক্রমে আলোচনা করছেন। ইতোমধ্যে তারা এলডিপি, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি সঙ্গে আগামী আন্দোলন সংগ্রামের বিষয় আলোচনা করেছেন। এতে জোটগত কর্মসূচি না দেওয়ার বিষয়টি আলোচনা হয়েছে।
এ ছাড়া ২০ দলীয় জোটের বাইরে সরকার বিরোধী বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিএনপির নীতিনির্ধারকদের আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বাম গণতান্ত্রিক মোর্চার নেতারা জোট নয় যুগপৎ আন্দোলনের পক্ষে তাদের মতামত দিয়েছেন। বিএনপিও এ ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেছে। আন্দোলনের শুরুতেই ডান-বাম, মধ্যপন্থি এবং ইসলামপন্থি দলগুলোকে একমঞ্চে আনার ক্ষেত্রে যেসব জটিলতা রয়েছে, ‘যুগপৎ’ কর্মসূচি হলে তা থাকবে না, বলে জানিয়েছে ঐক্যে আগ্রহী বাম দলগুলো।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এ ব্যাপারে ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমান সরকার ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে সবাইকে এক কাতারে দাঁড় করিয়েছে। তাই ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে অন্তত বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই রাজনৈতিক ঐক্যমত দরকার। ‘বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্র্বতী সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন এসব বিষয়ে যারা একমত তারা বামও হতে পারেন ডানও হতে পারেন। কিন্তু এই কমন ইস্যতে একমঞ্চে আসতে না পারলেও যুগপৎ আন্দোলন অবশ্যই হতে পারে।
বাম জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, একটি নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন এসব কমন দাবিতে যারা একমত তারা সবাই হয়তো এক মঞ্চে আসতে নাও পারেন, কিন্তু যুগপৎ আন্দোলনে সবাই রজপথে থাকতে পারেন। তাই যুগপৎ কর্মসূচির বিষয়টি অবশ্যই ইতিবাচক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ