মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বৃহস্পতিবার জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরির রায়কে বাদ দিয়ে শনিবার বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবে ভোট দেয়ার নির্দেশ দেয় পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। এ সিদ্ধান্তের কয়েক ঘণ্টা পর প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন যে, তিনি মন্ত্রিসভার বৈঠকের সভাপতিত্ব করার পর শুক্রবার (আজ) জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন।
ইমরান খান মাইক্রোব্লগিং ওয়েবসাইট টুইটারে লিখেছেন, তিনি পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর সংসদীয় দলের একটি বৈঠকও ডেকেছিলেন। তিনি আরও বলেন, শেষ বল পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন। ‘আমি আগামীকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকের পাশাপাশি আমাদের সংসদীয় দলের বৈঠক ডেকেছি; এবং আগামীকাল সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেব। আমাদের জাতির কাছে আমার বার্তা হল আমি সবসময়ই আছি এবং শেষ বল পর্যন্ত পাকিস্তানের হয়ে লড়াই চালিয়ে যাব,’ ইমরান টুইট করেছেন।
আজ শুক্রবার মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন ইমরান খান। এই সঙ্গে তিনি নিজ দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) পার্লামেন্টারি কমিটির সদস্যদের সঙ্গেও পৃথক বৈঠক করবেন। এ ছাড়া আজ তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। গতকাল টুইটে এসব কথা নিজেই জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
মন্ত্রিসভার বৈঠক করার সিদ্ধান্তটি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের মাধ্যমে পুনরুজ্জীবিত হওয়ার পরে এসেছে যা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করার জন্য ডেপুটি স্পিকারের রায় এবং প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে প্রেসিডেন্ট পরবর্তীতে জাতীয় পরিষদ (এনএ) ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। পাঁচ বিচারক সর্বসম্মতিক্রমে এর বিপক্ষে ৫-০ ভোট দিয়েছেন।
গতকাল রাতেই পার্লামেন্ট পুনর্বহাল করেছেন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। পাঁচ দিনের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এ রায় দেন। এর ফলে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ওপরও ভোটাভুটি হবে। এ জন্য আগামীকাল শনিবার দিন ধার্য করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত আরও বলেছেন, অনাস্থা প্রস্তাবের সুরাহা না করা অবধি পার্লামেন্টের অধিবেশন মুলতবি করা যাবে না। এর আগে গত ৩ এপ্রিল ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধী দলগুলোর অনাস্থা প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। এর পরপরই প্রধানমন্ত্রী ইমরানের পরামর্শে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।
এ প্রক্রিয়াকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন বিরোধীরা। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্ট অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের দিনই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নোটিশ দেন। গতকাল পার্লামেন্ট পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে সর্বোচ্চ আদালত বলেন, ‘পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দেয়ার কোনো এখতিয়ার নেই প্রধানমন্ত্রীর। এ–সংক্রান্ত সব সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করা হলো।’
ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকা না থাকা নিয়ে চরম রাজনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলা করছে পাকিস্তান। ইমরানের দাবি, তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষ ও বিদেশিরা এক হয়ে ষড়যন্ত্র করছে। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন ইমরানসহ অনেকেই। এমনকি রাশিয়া অভিযোগ করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ‘অবাধ্য’ প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে শাস্তি দিতে চেয়েছে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ইমরান খানের বিরোধীদের অর্থায়ন করে অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে তার সরকার পতনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর ১৯৪৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের কোনো নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী তার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। জেনারেলরা নানা অজুহাতে রাষ্ট্রের শাসনভার নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছেন। তাই বিশ্লেষকেরা বলছেন, আগামীকাল শনিবার পাকিস্তানের ইতিহাসে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এদিন নির্ধারিত হবে ইমরান খানের ভাগ্য। হয় তিনি বিদায় নেবেন, নয়তো তার ইতিহাস গড়ে পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার পথ সুগম হবে। সূত্র: ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।