পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
দেশের নতুন ঐতিহাসিক এক মাইলফলক দিন ছিল গত ২১ মার্চ। এদিন বিদ্যুতের সুবিধাভোগী শতভাগ হয়েছে। পাহাড়-পর্বত, চরাঞ্চল, উপকূল, দ্বীপ তথা দেশের সর্বত্রই বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছেছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। এছাড়া, এদিন দেশের সবচেয়ে বড় অর্থাৎ ১,৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এর উৎপাদন শুরু হয়েছে অনেক আগেই। ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারিতে প্রথম ইউনিট ও ২৬ আগস্টে দ্বিতীয় ইউনিট। এটি আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্র, যা দেশের প্রথম, দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয়, এশিয়ায় সপ্তম ও বিশ্বের ১৩তম। সর্বাধুনিক এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দূষণ প্রক্রিয়ায় বিশ্ব ব্যাংকের যেসব প্যারামিটার রয়েছে, সেসব সূচকের অনেক নিচে অবস্থান করছে এ কেন্দ্র। এর দূষণ একটি ইট ভাটার চেয়েও কম। কেন্দ্রটি চীন ও বাংলাদেশের অর্ধেক করে মালিকানাধীন। এর নির্মাণ ব্যয়ের ৮০% অর্থায়ন করেছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। বাকী অর্থ দেশের। প্রকল্পের ব্যয় ও মেয়াদ বাড়েনি, বরং সাশ্রয় হয়েছে, যা এ দেশে এক ব্যতিক্রম। এটির নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৪৭ কোটি মার্কিন ডলার, ব্যয় হয়েছে ২৩০ কোটি ডলার। নির্মাণের সময় ধরা হয়েছিল চার বছর। শেষ হয়েছে এক মাস আগেই। এই কেন্দ্রে বছরে ৪০ লাখ মে.টন করে কয়লা ব্যবহার হবে, যার শতভাগই আমদানিকৃত। রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণও দেশের এক ঐতিহাসিক ঘটনা, যার উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা ২০২৪ সাল থেকে।
সরকারি ও বিভিন্ন তথ্য মতে, দেশে ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে বিদ্যুতের উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৪,৯৪২ মেগাওয়াট, যা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসে দাঁড়িয়েছে ২৫,৫১৪ মেগাওয়াটে (ক্যাপটিভ, নবায়নযোগ্য ও ভারতের আমদানিসহ)। স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হচ্ছে ১৯,৬২৬ মেগাওয়াট। ফলে মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ২২০ কিলোওয়াট আওয়ার থেকে ৫৬০ কিলোওয়াট আওয়ারে উন্নীত হয়েছে। একই সময়ে সঞ্চালন লাইন বেড়েছে ৫,২১৩ কিলোমিটার, বিতরণ লাইন বেড়েছে ৩.৬১ লাখ কিলোমিটার। নতুন করে বিদ্যুৎসংযোগ হয়েছে ৩.১৩ কোটি গ্রাহকের। বর্তমানে বিদ্যুতের মোট গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩.৫ কোটি। এখন গড়ে প্রতিদিন বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় ১২ হাজার মেগাওয়াট। আরও ১৩ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। সরকারের লক্ষ্য-২০৪০ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। বর্তমানে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পরিমাণ ১,১৬০ মেগাওয়াট। সিস্টেম লস কমেছে ৫.৮৫%। ৪৬.৭৭ লাখ প্রি-পেইড/স্মার্ট মিটার এবং ৬০ লাখ সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ইউনিট প্রতি ব্যয় হচ্ছে- ডিজেলে প্রায় ৩০ টাকা, ফার্নেস তেলে ১৪ টাকা, কয়লায় ৭৮ টাকা ও গ্যাসে ৪ টাকার মতো। গড় ব্যয় ৮.৫০ টাকার মতো। তথ্য মতে, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুতের মূল্য হবে বেলারুশ ও হাঙ্গেরির পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়েও কম। ইউনিট প্রতি মূল্য বেলারুশে ৮.৩ সেন্ট ও হাঙ্গেরিতে ৭.২৮ সেন্ট। অপরদিকে, বিআইডিএস’র প্রতিবেদন মতে, দেশের বিচ্ছিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎসুবিধা গেলেও ১৫% মানুষ সংযোগ নিতে সক্ষম নয়। বাংলাদেশে ১০ লাখ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে তার প্রভাব সামষ্টিক অর্থনীতিতেও পড়ে। এতে অর্থনীতিতে বাড়তি যোগ হয় প্রায় ৪.৬০ কোটি থেকে ১০.৭০ কোটি টাকা। বিইআরসি’র তথ্য মতে, গত ১১ বছরে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে ১০ বার। তাতে মোট দাম বেড়েছে পাইকারি পর্যায়ে ১১৮% ও খুচরা পর্যায়ে ৮৯.৬৩%। তবুও বিদ্যুৎ খাতে বিপুল ঘাটতি রয়েছে। শুধুমাত্র গত বছরই ১১ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি হয়েছে। এই ঘাটতি কমানোর জন্য পুনরায় দাম বাড়ানোর প্রস্তাব জমা পড়েছে বিইআরসিতে। ক্যাব বলেছে, পরিকল্পনা ও সমন্বয়হীনতার অভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে হাজার হাজার কোটি টাকার ভাড়া দিতে হচ্ছে।অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেছেন, ‘ব্যবসায়ীদের চাপে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অত্যধিক মূল্যে বিদ্যুৎ কেনা হচ্ছে। এতে দেশের অর্থনীতির সর্বনাশ হচ্ছে’!
আধুনিক বিশ্বে বিদ্যুৎ অপরিহার্য। কারণ, সব কিছুর সাথেই বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট। তাই বিশ্বের প্রতিটি দেশই চাহিদা মাফিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। আমাদের বর্তমান সরকারও ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদনে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। তাতে সফলতা উৎপাদন। তথা ৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই এ জন্য সরকার ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে, এ ক্ষেত্রে এমন কিছু ভুল সিদ্ধান্ত রয়েছে। যার অন্যতম হচ্ছে, কম ব্যয় সম্বলিত সরকারিভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে গুরুত্ব না দিয়ে (প্লান্ট বন্ধ রেখে ও সংস্কার না করে) অধিক ব্যয় সম্বলিত বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ক্রয়ের দিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া। এর মধ্যে সর্বাধিক মূল্যের রেন্টাল ও কুইক রেন্টালও রয়েছে। এছাড়া, যেভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, সেভাবে সঞ্চালন ও বিতরণের দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে সরবরাহে ঘাটতি থাকছে অনেক। বর্তমানে বিদ্যুতের দৈনিক চাহিদা ১৫ হাজার মেগাওয়াট। উৎপাদন হচ্ছে ৯ হাজার মেগাওয়াটের মতো।এর অতিরিক্ত সরবরাহ করার সক্ষমতা নেই। ফলে উৎপাদন সক্ষমতার ৬০% প্লান্ট বসে রাখতে হচ্ছে, যা বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক। পাওয়ার সেলের সাবেক ডিজি রহমতউল্লাহ বিবিসিতে বলেন, আমাদের সরবরাহ লাইন হয়েছে সাত আট হাজার মেগাওয়াটের। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা আছে, কিন্তু সেটা মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে না। উৎপাদনের বিষয়গুলো বেশ লোভনীয়, লাভজনক। তাই সবাই এগুলো বানাতে চায়। রাজনৈতিকভাবে যারা শক্তিশালী, তারাই এগুলোর কন্ট্রাক্ট নেয়। কিন্তু ট্রান্সমিশন আর ডিস্ট্রিবিউশনে সেই আগ্রহটা নেই। বিদ্যুতের খরচের ক্ষেত্রে উৎপাদনে ৪০%, সঞ্চালনে ৪০% আর সরবরাহে ২০% খরচ হয়। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিমও বলেন, বিদ্যুতের উৎপাদনক্ষমতা বাড়াতে পারলেও সঞ্চালন ব্যবস্থা সেভাবে উন্নত করা যায়নি। সঞ্চালন ব্যবস্থা এগিয়ে নিতে হলে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে, বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
যা’হোক, পাওয়ার প্লান্ট বসিয়ে রাখার কারণে চুক্তি মোতাবেক ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে বছরে ৯ হাজার কোটি টাকার অধিক করে। ফলে বিদ্যুৎ খাতের লোকসান হচ্ছে ব্যাপক, যা কমানোর জন্য বার বার মূল্য বাড়ানো হয়েছে। অপরদিকে, বিদ্যুতের সরবরাহ ঘাটতিতে প্রতিদিনই অনেক লোড শেডিং ও লো ভোল্টেজ হচ্ছে, যা গ্রামাঞ্চলে বেশি। ফলে মানুষের গড় বিদ্যুৎপ্রাপ্তি বা ভোগ হচ্ছে নগণ্য। দৈনিক উৎপাদনকে ১৮ কোটি মানুষ দিয়ে ভাগ করলেই এর প্রমাণ পাওয়া যাবে। তাতে যে রেজাল্ট পাওয়া যাবে, তা এ অঞ্চলের মধ্যে সর্বনিম্ন হবে নিঃসন্দেহে! এতে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তবুও এ অবস্থা ২০২৮ সাল পর্যন্ত চলবে বলে গত ডিসেম্বরে বিদ্যুৎবিভাগ জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিকে। অন্যদিকে, বর্তমানের বিদ্যুতের সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন অতি পুরাতন। তাই বেশিরভাগ ভাঙ্গাচুরা ও জোড়াতালির। উপরন্তু এসব ভূ-উপরিস্থ।বহু স্থানে খুঁটিও রয়েছে রাস্তার মাঝখানে। সর্বোপরি খুঁটিতে বিভিন্ন সেবা খাতের তার লাগানোর ফলে খুঁটিগুলোর অবস্থা হয়েছে মাকড়সার জালের মতো। তাই প্রায়ই নানা দুর্ঘটনা ঘটে। এই তারগুলো ভূগর্ভস্থ করার কাজ শুরু করা হয়েছে। কিন্তু এটা সম্পন্ন হবে কবে তা বলা কঠিন। এছাড়া, দেশে উন্নত মানের বিপুল পরিমাণে আবিষ্কৃত কয়লা মজুদ আছে। কিন্তু তা উত্তোলন না করে বিদেশ থেকে আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এতে দেশের বিপুল বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় হচ্ছে। স্মরণীয় যে, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রেই বছরে ৪০ লাখ মে.টন কয়লা প্রয়োজন। তাহলে বাকী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য মোট কত মে.টন কয়লা প্রয়োজন তা সহজেই অনুমেয়! দ্বিতীয়ত ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধকে কেন্দ্র করে কয়লার বৈশ্বিক মূল্য টন প্রতি ১০০ মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ৩০০ মার্কিন ডলার হয়েছে। ভবিষ্যতে মূল্য আরো বাড়বে। এদিকে, স্থানীয় গ্যাসের দামের চেয়ে আমদানিকৃত এলএনজির দাম ২৪ গুণ বেশি। তবুও সরকার এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎ প্লান্ট নির্মাণের দিকে গুরুত্ব দিয়েছে। তাও বিপুল ভর্তুকি দিয়ে। যেমন প্রতি কিউবিক মিটার এলএনজি ৩১.৫৬ টাকায় আমদানি করে তা স্থানীয় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ৪.৪৫ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে প্রতি কিউবিক মিটারে ২৭.০৮ টাকা। ফলে প্রতি বছর বিশাল অঙ্কের ভর্তুকি প্রদান করতে হচ্ছে এই খাতে। এই ভর্তুকির পরিমাণ আরো বাড়বে। কারণ, বৈশ্বিক বাজারে এলএনজির মূল্য বেড়েই চলেছে। অপরদিকে, বায়ুমণ্ডলের উঞ্চতা কমানোর জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সে জন্য গ্লাসগো জলবায়ু (কপ-২৬) সম্মেলনে বিভিন্ন দেশ জীবাশ্ম জ্বালানি ত্যাগ করার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে। আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও কয়লাবিদ্যুতে অর্থায়ন বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। এ দেশেরও বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনায় মোট উৎপাদনের ১০% নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৩%!
বিদ্যুৎ খাতের কিছু ভুল তথ্যও রয়েছে। যেমন: বলা হচ্ছে, ২০০৯ সালে ৪,৯৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা হয়েছে ২৫,৫১৪ মেগাওয়াট। কিন্তু বর্তমানেরটা হয়েছে ক্যাপটিভ পাওয়ার, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ভারত থেকে আমদানিকৃত বিদ্যুৎ যুক্ত করে। যার মোট পরিমাণ ৫ হাজার মেগাওয়াটের অধিক। কিন্তু এসব সরকারের উৎপাদন সক্ষমতার সাথে যুক্ত নয়।
বিদ্যুৎ অপরিহার্য। তাই সারাদেশে নিরবচ্ছিন্নভাবে সার্বক্ষণিক চাহিদা মাফিক সরবরাহ করতে হবে সকলের কাছে। সে জন্য প্রয়োজনীয় সঞ্চালন ও সরবরাহ ব্যবস্থা আধুনিক ও দীর্ঘকালীন স্থায়িত্বশীল করতে হবে। বৈশ্বিক চাহিদার বিষয়টিও বিবেচ্য। সেটা হচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি। এটা দেশে যত বাড়বে ততই মঙ্গল। দেশে সূর্যালোক ও বায়ুর অভাব নেই। জৈব বিদ্যুৎ করারও যথেষ্ট উপকরণ রয়েছে। উপরন্তু দেশের বিশাল সমুদ্র এলাকায় অনেক ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করার সুযোগ রয়েছে। চীন ও রাশিয়ায় এ ধরনের কেন্দ্র করা হয়েছে। তাই এ ক্ষেত্রে উদ্যোগ নেওয়া দরকার। সর্বোপরি নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে সার্বক্ষণিক সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। এসব সরকারিভাবেই করতে হবে বেশি। পাশাপাশি এসব ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকেও উদ্বুদ্ধ ও প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। দেশের আবিষ্কৃত গ্যাসকে খুব দ্রুত কাজে লাগাতে হবে। নতুন গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের দিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে অনেক সহায়ক হবে। চাহিদা মাফিক দক্ষ লোক তৈরি, দুর্নীতি ও অপচয় রোধ এবং সর্বত্রই বিদ্যুৎসাশ্রয়ী বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করা জরুরি। রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বাতিলের আকাক্সক্ষা সমগ্র দেশবাসীর। দেশের সব কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে পায়রার মতো পরিবেশ বান্ধব করা এবং সব কেন্দ্রে দেশীয় কয়লা ব্যবহার করা বেশি কল্যাণকর। ভুটান ও নেপালের পানিবিদ্যুতে বিনিয়োগ করে দেশে আনা অনেক লাভজনক। বিদ্যুতের মূল্য কমিয়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে হবে। সে জন্য সরকারিভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি ও ক্রয় এবং কম ব্যয় সম্বলিত বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে। উপরন্তু যাদের বিদ্যুৎ ক্রয়ের সামর্থ্য নেই, তাদের সামর্থ্যবান হওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।