Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মারাত্মক দূষণে বিশ্বজুড়ে তৈরি হচ্ছে সঙ্কটপূর্ণ অঞ্চল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০২২, ১২:০৮ এএম

বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ছে দূষণ। কিছু কিছু অঞ্চলে এ দূষণের প্রভাব মারাত্মক হচ্ছে। মৃত্যুর মুখে পড়ছে লাখ লাখ মানুষ। এ অবস্থায় জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ বিশ্বজুড়ে দূষণের সংকটপূর্ণ অঞ্চল তৈরি হওয়া নিয়ে সতর্ক করেছেন। এ অঞ্চলগুলোয় কয়েক লাখ মানুষ স্ট্রোক, ক্যান্সার, শ্বাসকষ্ট ও হ‚দরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান। জাতিসংঘের মানবাধিকার ও পরিবেশবিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক ডেভিড বয়েড বলেন, সারা বিশ্বেই সংকটপূর্ণ অঞ্চল তৈরি হচ্ছে। উত্তরে, দক্ষিণে, পূর্বে, পশ্চিমে, ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোয় এ অঞ্চল তৈরি হচ্ছে। সেখানকার মানুষ ক্যান্সার, হ‚দরোগ, শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতা, স্ট্রোক ও প্রজনন স্বাস্থ্য সমস্যাসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছে। পাশাপাশি অঞ্চলগুলোয় বসবাসের সঙ্গে যুক্ত অবিশ্বাস্য মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে লোকজন নিজেদের শোষিত ও কলঙ্কিত বোধ করে। এগুলো তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন বয়েড। তিনি বলেন, তাদের জীবনের অধিকার, স্বাস্থ্যের অধিকার এবং একটি পরিষ্কার, স্বাস্থ্যকর ও টেকসই পরিবেশের অধিকার রয়েছে। আপনি এ ভয়ংকর পরিবেশগত অবস্থার সঙ্গে একটি সুস্থ পরিবেশের মৌলিক অধিকারকে মেলাতে পারবেন না। স¤প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে উপস্থাপন করা এ প্রতিবেদনে বয়েড বলেন, কভিডের প্রথম ১৮ মাসে মহামারীর চেয়ে দ্বিগুণ অকালমৃত্যুর কারণ হয়েছে দূষণ। সে সময়ে দূষণের কারণে মৃতের সংখ্যা ৯০ লাখে পৌঁছেছে। বিশ্বে ছয়জনের মধ্যে একজনের মৃত্যু দূষণজনিত রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ হার এইডস, ম্যালেরিয়া ও য²ার মৃত্যুর চেয়ে তিন গুণ এবং সমস্ত যুদ্ধ, হত্যা ও সহিংসতায় মৃত্যুর চেয়ে ১৫ গুণ বেশি। প্রতিবেদনটিতে সতর্ক করা হয়েছে, বিশ্বে বিষাক্তকরণ তীব্রতর হচ্ছে। কিছু ক্ষতিকারক রাসায়নিক নিষিদ্ধ করা সত্তে¡ও ২০০০-১৭ সালের মধ্যে রাসায়নিক সামগ্রীর উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে। ২০৩০ সাল নাগাদ এ উৎপাদন আবারো দ্বিগুণ হতে যাচ্ছে। এ সময়ে দূষণের কারণে প্রত্যেক মানুষের জীবনই কোনো না কোনোভাবে প্রভাবিত হয়েছে। তবে কিছু স¤প্রদায় অন্যদের তুলনায় বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। বয়েড গার্ডিয়ানকে বলেন, দূষণ প্রতিটি মানুষের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তবে আপনি যদি সংকটপূর্ণ অঞ্চলগুলো দেখেন, তাহলে বুঝতে পারবেন, এটি কিছু লোককে সত্যিই চরমভাবে অন্যায্য ও অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত করছে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ এবং সমস্ত মানব ইতিহাসের ধনী দেশগুলোর একটিও। পাশাপাশি দেশটিতে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ সংকটপূর্ণ অঞ্চলগুলোর একটি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার একটি এলাকাকে ‘ক্যান্সার অ্যালি’ (ক্যান্সারের গলি) বলা হয়। সেখানে শতাধিক জ্বালানি তেল শোধনাগার, পেট্রোকেমিক্যাল কারখানা রয়েছে। তবে এটি কোথায় জানেন? দরিদ্র কৃষ্ণাঙ্গ স¤প্রদায়ের মধ্যে। অথচ দূষণে তাদের অবদান নেই বললেই চলে। জাম্বিয়ার কাবওয়েতে ৯৫ শতাংশ শিশুর রক্তে সিসার উচ্চমাত্রা পাওয়া গেছে। এটি তাদের আজীবন বুদ্ধিবৃত্তিক বৈকল্যের ঝুঁকিতে ফেলেছে। রোমানিয়ার পাটা রাট ল্যান্ডফিলে বসবাসকারী হাজার হাজার রোমা মানুষ আর্সেনিক, সিসা, পারদ ও অন্যান্য দূষণকারী পদার্থের সংস্পর্শে আসে। এছাড়া ফরাসি বিদেশী অঞ্চল ক্যারিবীয় অঞ্চলের গুয়াদেলুপ ও মার্কিনিকের ৯০ শতাংশ লোকের রক্তে কার্সিনোজেনিক কীটনাশক ক্লোরডেকোন পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনটিতে এ দূষণের পেছনে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়ী করা হয়েছে। এ অবস্থায় ডেভিড বয়েড দূষণ সৃষ্টিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে সরকারগুলোকে আরো কঠোর হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দূষণ

২৫ জানুয়ারি, ২০২৩
২৮ ডিসেম্বর, ২০২২
৪ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ