Inqilab Logo

রোববার, ২৩ জুন ২০২৪, ০৯ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বারবার অগ্নিকাণ্ড: পেছনের রহস্য অজানা

বন্ধ হয়ে যেতে পারে তুর্কি সাহায্য

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০২২, ৩:১০ পিএম | আপডেট : ৭:৪৯ পিএম, ১২ মার্চ, ২০২২

গত এক বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন ব্লকে একডজনের বেশী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও অগ্নিকাণ্ডের রহস্যের কোন কিনারা হয়নি। এতে তুর্কি একটি হাসপাতালসহ হাজার হাজার শেড পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আর ক্ষতির সম্মুখীন হয় লাখো রোহিঙ্গা। সর্বশেষ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে গত ৮মার্চ ৫নং ক্যম্পে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বারবার এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা রহস্যজনক বলেই মনে করছেন সচেতন মহল। এর পেছনের রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় হতাশায় ভুগছে সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পের সাহায্য সংস্থা ও উপকারভোগী রোহিঙ্গারা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শুধু তুরস্ক পরিচালিত একটি হাসপাতালসহ বিভিন্ন ব্লকের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এপর্যন্ত ৭বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বিশ্বস্ত সূত্রমতে এসব অগ্নিকাণ্ডের পেছনে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র থাকা অস্বাভাবিক নয়। তুর্কি কর্তৃপক্ষ সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে এব্যাপারে অভিযোগ করলেও কোন কিনারা হয়নি বলে জানা গেছে। এই কারণে তুর্কি কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের অর্থ বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। আগামীতে এভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে থাকলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তুরস্কের সব ধরনের সহযোগিতা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র।
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে থাকলে বাংলাদেশ সরকার মানবিক কারণে উখিয়া টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে তাদের আশ্রয় দেয়। এসময় বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক মহলের সহযোগিতা কামনা করলে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার সাথে এগিয়ে আসে তুরস্ক সরকারও। এমনকি তুরস্কের সরকার প্রধান রিসিপ তাইয়্যেব এরদোয়ানের স্ত্রী এমিলি এরদোয়ান সরাসরি এসে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়ে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন।

২০১৮ সাল থেকেই তুরস্ক সরকার বাংলাদেশ সরকারের সাথে জি টু জি চুক্তির মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিক্ষা, চিকিৎসা, সেনিটেশন ও শেড নির্মানসহ বিভিন্ন মানবিক খাতে মোটা অংকের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি সরাসরি তুর্কি ইন্টেরিয়র মিনিস্ট্রি এবং বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখাশোনা করে থাকে। 'আপাদ' নামে একটি তুর্কি সংস্থা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে থাকে। টিকা, দিয়ানাত এবং কিজলয়া নামের আরো তিনটি তুর্কি সংস্থা জিটুজি চুক্তিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করে যাচ্ছে।
এছাড়াও আই ডবলএইচ, ইয়ারদেমেকী, সাদকা ও বশীর নামে আরো চারটি বেসরকারি তুর্কী সংস্থা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন খাতে মানবিক সহায়তার কাজ করে থাকে।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, ৯ নং ক্যাম্পে ৩০ শয্যার একটি ফিল্ড হাসপাতাল, ৫নং ক্যাম্পে আড়াই হাজার শেড, ৮ডব্লিউ ক্যাম্পে ১৩ শত শেড, ক্যাম্প ১২ তে ৬ শত শেড, ১৬ নং ক্যাম্পে সাড়ে পাঁচ শত শেড ও ৯ নং ক্যাম্পে ১২ শত শেড নির্মাণ করে ওগুলো পরিচালনা করে আসছে তুরস্ক সরকার। অনুসন্ধানে উঠে আসে গত এক বছরে শুধু মাত্র তুরস্ক সরকার পরিচালিত হাসপাতাল ও শেডগুলোতে ৭ বারের মত রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। জানা গেছে, এবিষয়ে ক্যাম্পে কর্মরত তুর্কি কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে ত্রিফলআরসি ও ক্যাম্প ইনচার্জদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বারবার। তবে এব্যাপারে তুর্কি কর্তৃপক্ষ কোন সদুত্তর না পেয়ে হতাশ বলে জানা গেছে।

অবশ্য ত্রিফলআরসির পক্ষ থেকে এবিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানানো হলেও এপর্যন্ত সম্ভব হয়নি অগ্নিকাণ্ডের পেছনের রহস্য উদঘাটন। এতে করে যেমন হতাশায় ভূগছে তুর্কি কর্তৃপক্ষ। একইভাবে হতাশ ভূগছে তুর্কি সহযোগিতায় উপকারভোগী লাখো রোহিঙ্গা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ