পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আপনার পারফরম্যান্স নেগেটিভ! আদালতের আদেশ না মানলে আপনার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে! আপনি এই ঝুঁকিতে যাবেন না। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মামুনুর রশিদের প্রতি এমন কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন হাইকোর্ট।
গতকাল বুধবার বিচারপতি জেবিএম হাসান এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের ডিভিশন বেঞ্চ তাকে কঠোর ভর্ৎসনা করে এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকার অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে হাইকোর্টের দেয়া একাধিক নির্দেশনা প্রতিপালন না করায় আদালত অবমাননা মামলার বিচারে এমন মন্তব্য করেন আদালত। এ সময় আদালতে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন ডিসি মামুনুর রশিদ। তারপক্ষে আইনজীবী ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন ফকির।
ডিসির পক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, আমরা কখনো ঢালাওভাবে কারও বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনি না। তাকে (ডিসি মামুনুর রশিদ) অনেকবার সুযোগ দেয়া হয়েছে। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাকে আদালতের মনোভাব জানিয়েছেন। এরপরও তিনি সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ প্রতিপালন করেননি। এ কারণে তাকে আমরা তলব করেছি।
ডিসির উদ্দেশে আদালত বলেন, কক্সবাজারকে সারাবিশ্বের মানুষ চেনে। আপনি সেই কক্সবাজারের ডিসি। কক্সবাজারের সৌন্দর্য রক্ষায় ভূমিকা রাখুন। আপনাকে সারাবিশ্বের মানুষ চিনবে।
আদালত বলেন, উচ্ছেদ করে আমরা তাদের বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিতে বলছি না। আপনি সুন্দর ব্যবস্থাপনা করুন। মানুষ আপনাকে মনে রাখবে। আমরা প্রতিদিন পত্রিকা-টিভি খুলে দেখি, আপনি কী করছেন। কিন্তু আপনার পারফরম্যান্স জিরো তো নয়ই বরং নেগেটিভ।
এ সময় ডিসি মামুনুর রশিদ আদালতকে বলেন, আমি কিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। এখন আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করব।
এ পর্যায়ে আদালত বলেন, শুধু করব বললে হবে না। আপনাকে করতেই হবে। আদালতের আদেশ না মানলে আপনার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। তখন ডিসি মামুনুর রশিদ বলেন, আমি আদালতের আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। পরে আদালত তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন। সেই সঙ্গে ৯ নভেম্বরের মধ্যে তাকে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন।
এর আগে সকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক সৈকত এলাকার অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদ সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশনা না মানার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে হাইকোর্টে হাজির হন মামুনুর রশিদ। আদালতের আদেশ না মানায় তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
প্রসঙ্গত: গত ২৫ আগস্ট আদালত অবমাননার অভিযোগের এক আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করে ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে তাকে তলব করেন। যে ৫ জনের বিরুদ্ধে রুল জারি করা হয়েছে, তারা হলেনÑ কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে: কর্নেল (অব:) ফোরকান আহমেদ, উপ-পরিচালক, নগর পরিকল্পনাবিদ তানভির হাসান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ, পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মজিবর রহমান।
আদালত অবমাননার শুনানিতে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেছিলেন, কক্সবাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আদালতের নির্দেশনা পর সেটা উচ্ছেদও করা হয়েছিল। কিন্তু ইদানীং একশ’র মতো দোকান স্থাপন করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৪ মাস আগে আমরা আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। এরপর দীর্ঘ শুনানির পর বারবার সময় নেয়ার পরও জেলা প্রশাসক ওইসব স্থাপনা উচ্ছেদ করেননি। যে কারণে জেলা প্রশাসকসহ সকলের ওপর আদালত অবমাননার অভিযোগে একটা রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এর আগে ৭ ফেব্রুয়ারি একটি আইনি নোটিশ দেয়া হয়েছিল। হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পীস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ এ নোটিশ দেন।
নোটিশে বলা হয় যে, কক্সবাজার সৈকত এলাকার প্রাতৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুণ্ন রাখতে সেখান থেকে সকল অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদ করার আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থে এইচআরপিবি আদালতে রিট মামলা দায়ের করলে আদালত রায় দেন। রায়ে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকার অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য নির্দেশনা দেন। জনস্বার্থ বিবেচনা করে হাইকোর্ট ২০১১ সালের ৭ জুন বিবাদীদের কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকার অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দিলেও এখনও তা সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করা হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।