পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইউক্রেন আর রাশিয়ার মধ্যেকার যুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান ‘জাতিসংঘ সনদের পরিপন্থী’ উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল শুক্রবার গুলশানস্থ বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই নিন্দা জানান।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই আক্রমণকে ইউক্রেনের উপর চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ এবং তার স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের সুস্পষ্ট লংঘন বলে মনে করে বিএনপি। এই ধরনের আধিপত্যবাদী ও সস্প্রসারণবাদী তৎপরতা জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী অপরাধ। এই আক্রমণ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের উপর হুমকি। বিএনপি মনে করে দেশবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত জনমত গোটা বিশ্বের গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার বিষয়ক মূল স্রোতের সাথে মিশে আছে। কিন্তু দেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার তার ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে দেশবাসীর জনমতের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘের প্রস্তাবের পক্ষে ভোটদানে বিরত থেকেছে। যা বাংলাদেশের সংবিধান ঘোষিত গণতন্ত্র ও মানবিক মূল্যবোধের নীতিমালা পরিপন্থী।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি জাতিসংঘের নেতৃত্বে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার পক্ষে প্রবাহমান বিশ্বজনমত ও মূল্যবোধের পক্ষে বিশ্বের সকল শক্তিকে সুদৃঢ় অবস্থান গ্রহণের প্রত্যাশা ব্যক্ত করছে। যুদ্ধরত দুই দেশের চলমান আলোচনার ধারাবাহিকতায় যুদ্ধ বন্ধ করে অবিলম্বে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের প্রতি বিএনপি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছে।
গত ৭ দিন ধরে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার ‘অমানবিক’ আক্রমণে ১০ লাখ মানুষ উদ্বাস্ত এবং শত শত নিরিহ ইউক্রেনবাসীর সঙ্গে একজন বাংলাদেশী নাবিক নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করে ইউক্রেন যুদ্ধে দলের অবস্থান পরিষ্কার করেন মহাসচিব।
বিএনপির নেতা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ইউক্রেনসহ যেকোনো দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের মৌলিক অধিকারকে শ্রদ্ধা করে এবং তার সীমা লংঘনকে বিরোধিতা করে। বিএনপি সবসময়ই সকল দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পক্ষে, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থে প্রবাহমান বিশ্বজনমতের পক্ষে।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নির্মূল করা এবং মানবাধিকার লংঘনে জাতিসংঘের নিন্দা প্রস্তাবের ক্ষেত্রেও সরকার একইভাবে দেশবাসীর আশা আকাংখার বিপরীতে ভূমিকা নিয়েছিল। রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা জনগনের আশা-আকাংখা পূরণে কার্যকরী অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের কর্মকাণ্ডে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে যা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকিতে ফেলছে।
ইউক্রেনের প্রবাসী বাংলাদেশীদের দুরাবস্থা ও পোল্যান্ডের সীমান্তে শরণার্থী শিবিরে অবস্থান সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ সরকার যে অবস্থান নিয়েছে সেই অবস্থান থেকে দেখতে পারছি তাতে মনে হয় না যে, তাদের দৃষ্টিতে এই বিষয়গুলো বিবেচনায় আছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আটক করে রাখার কৌশল নিয়েছে। খালেদা জিয়াকে ভয় পায় বলে তাকে মুক্তি দিচ্ছে না। বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে, গ্রেপ্তার নির্যাতন করে আর শেষ রক্ষা হবে না।
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ভালোভাবে বিদায় নিতে চাইলে দুর্নীতি বন্ধ করুন, নয়তো জনগণ জবাব দেবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে সরকারের রক্ষা হবে না। খালেদা জিয়া যদি বাইরে আসেন ও গাড়ির ভেতর বসে অন্তত হাত দেখান, তাহলে এদেশের মানুষকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। সাহস থাকলে তাকে ছেড়ে দেন, বাইরে আসতে দেন।
নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রস্তুতির আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করতে হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সরকারকে একটা নিরপেক্ষ-নির্দলীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।