Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারত ফের ‘পানি চুক্তি’ কলা ঝুলালো

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৪ এএম

বাংলাদেশের সামনে আবারও তিস্তার পানি চুক্তির কলা ঝুঁলালো ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা এই কলা ঝুঁলানোর বার্তা দেন। ভারতের হিমাচল রাজ্যের রাজধানী শিমলায় ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সংলাপে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে এ তথ্য দেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব। বেসরকারি সংস্থা ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এই সংলাপে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল যোগ দেন। সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতৃত্ববৃন্দ, ভারতে নিযুক্ত সাবেক হাই কমিশনার, কূটনীতিক ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা এই দলে আছেন।
সংলাপে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন চুক্তি চূড়ান্ত করতে দুই দেশ যৌথভাবে কাজ করছে। এ ছাড়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও লবণাক্ততা নিয়ে দুই দেশ অভিজ্ঞতা বিনিয়ম করছে।

তবে শ্রীংলা তিস্তা নদীর পানিবণ্টনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো তথ্য দেননি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতার কারণে এক দশকের বেশি সময় ধরে এই চুক্তি ঝুলে আছে।
হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের অভিন্ন ৫৪টি নদী দুই দেশের অভিন্ন সম্পদ ও দায়িত্ব। গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। আমরা এখন অন্যান্য অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন চুক্তি চূড়ান্ত করতে কাজ করছি।

এর আগে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত করেছিল বাংলাদেশ ও ভারত। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং ঢাকা সফরে এসে চুক্তিতে সই করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতার কারণে সেই চুক্তি আর হয়নি। তিস্তা চুক্তি নিয়ে এখন পর্যন্ত আগের অবস্থানেই আছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। মাঝখানে ভারত তিস্তা চুক্তি ঝুলিয়ে রেখেই বাংলাদেশের ফেনি নদীর পানি চুক্তি করে ত্রিপুরায় নিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে ভারত সফর শেষে ঢাকা ফিরেছেন সরকার ও আওয়ামী লীগের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল। তিন দিনের সফর শেষে তারা ঢাকা ফেরেন। প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। প্রতিনিধি দলের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক চোখের চিকিৎসার জন্য চেন্নাই গিয়েছেন। এছাড়া সবাই ঢাকা ফিরেছেন।

এই প্রতিনিধি দলে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদ অসীম কুমার উকিল এমপি, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মি আহমেদ, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর রিজিওনাল স্টাডিজ এর চেয়ারম্যান এ এস এম শামসুল আরেফিন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী, ভারতের সাবেক হাই কমিশনার তারেক এ করিম, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। সংসদ সদস্যদের মধ্যে ছিলেন নাহিম রাজ্জাক, তানভীর শাকিল জয়, পঙ্কজ দেবনাথ, আশিক উল্লাহ রফিক, আদিবা আঞ্জুম মিতা, ইকবাল হোসেন, আয়েন উদ্দিন, মনোরঞ্জনশীল গোপাল, আখতারুজ্জামান বাবু, সাবেক এমপি ও যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হারুণ অর রশীদ, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার মো. নুরুল ইসলাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন ভুইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর সাবেক পরিচালক সৈয়দ ফরহাদ আনোয়ার। সোবহান মাহবুব সাহাবুদ্দিন, শারমীন আক্তার পপি, প্রফেসর ডা. মেসবাউল করিম রুবেল, মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম, সিনিয়র সংবাদিক শিবলী নোমান, নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এ এম আবদুল্লাহ, আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলঅম লিটন, সাবেক মেয়র গোলাম রাব্বানী, ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষিকা চৈতালী হালদার, ফরহার ইউসুফ হোসাইন প্রমিথ, তুষার কান্তি, মেহের নাজ আক্তার।

দুই দিনব্যাপী ১০ম পর্বের এই সংলাপের লক্ষ্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পর্যালোচনা করা এবং দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়াও আঞ্চলিক নিরাপত্তা, চরমপন্থা এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর রিজিওনাল স্টাডিজ এবং ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে উভয় দেশের নীতিনির্ধারক, কূটনীতিক এবং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে ‘বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছে।



 

Show all comments
  • বাশীরুদ্দীন আদনান ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১:৫৯ এএম says : 0
    এই সরকারের আমলে আমরা ওই কলা ঝুলানো দেখবো
    Total Reply(0) Reply
  • সফিক আহমেদ ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১:৫৯ এএম says : 0
    আমাদের আর পানি চুক্তির দরকার নেই
    Total Reply(0) Reply
  • হুমায়ূন কবির ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ২:০০ এএম says : 0
    এক কলা দেখিয়ে ভারত তাদের সকল স্বার্থ আদায় করে নিয়ে
    Total Reply(0) Reply
  • গোলাম কাদের ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ২:০০ এএম says : 0
    কবে যে আমাদের শুভ বুদ্দির উদয় হবে?
    Total Reply(0) Reply
  • সৈয়দ নজরুল হুদা ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১:৪৬ পিএম says : 0
    ভারত সবসময় আমাদেরকে তার অঙ্গরাজ্য মনে করে।সে শুধু নিতে জানে,দিতে জানেনা।প্রকৃতপক্ষে তারা শোষক ও সম্প্রসারনবাদী।
    Total Reply(0) Reply
  • Tareq Sabur ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:০১ পিএম says : 0
    শুধুমাত্র হর্ষবর্ধন শ্রিঙ্লা একেলাই যথেষ্ট... অযোগ্য কৃতদাশদের দিয়ে গঠিত পুরা প্রতিনিধি দলকে বেওকুফ বানিয়ে ভারতের স্বার্থ বাগিয়ে নেওয়া। কারণ এই হারামখোরের দলের সবাই কৃতদাশ। তারা দেশের জন্য চিন্তা করবে না। পক্ষান্তরে হর্ষবর্ধন তার দেষকে ভালবাসে তাই সে তাকে দেওয়া তার দেশের দায়িত্ব পালন করছে। তার প্রতিপক্ষ মীর জাফরের বংশধর হলে তাতে তার কি যায় আসে?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ