Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুইস ব্যাংকের ১৮ হাজারের বেশি হিসাবের তথ্য ফাঁস, আতঙ্কে গ্রাহকরা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১০:৫১ এএম

বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুনাম রয়েছে সুইজারল্যান্ডের ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের যা সুইস ব্যাংক নামেই বেশি প্রচলিত। হিসাবের তথ্য গোপন শুধু নয়, হিসাবধারীর পরিচয় বা অন্য কোনো তথ্যের সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষায় তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই সুইস ব্যাংকের ১৮ হাজারের বেশি হিসাবের তথ্য ফাঁস হয়েছে। এসব ব্যাংক হিসাবের ক্ষেত্রে নানা সতর্কবার্তা থাকলেও তা গ্রাহ্য করা হয়নি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্যমতে, বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের সম্পদ গচ্ছিত রাখার পাশাপাশি এ সম্পদ অর্জনের পথ সবই গোপন রাখে সুইস ব্যাংক। সুইজারল্যান্ডের এই ক্রেডিট সুইস ব্যাংক বিশ্বের অন্যতম আইকনিক ব্যাংক। মূলত তথ্য গোপন রাখার কারণেই তারা বেশি আলোচিত। এখন এই ব্যাংকের গ্রাহকদের সম্পর্কে তথ্য ফাঁস হলো, যেখানে বেরিয়ে এল বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে গোয়েন্দা কর্মকর্তা, নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন ব্যবসায়ী, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী থেকে শুরু করে অনেকেই।
এই তথ্য ফাঁস করেছেন ব্যাংকটির এক স্বঘোষিত হুইসেল-ব্লোয়ার। তিনি ব্যাংকটির ১৮ হাজারের বেশি হিসাব সম্পর্কিত তথ্য জার্মান সংবাদমাধ্যম সুডয়চে যায়টংকে দেন, যেখানে জমা রয়েছে মোট ১০ হাজার কোটি ডলারের বেশি অর্থ। সংবাদপত্রটি এই তথ্য সংবাদ বিষয়ক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রোজেক্টসহ (ওসিসিআরপি) আরও ৪৬টি সংবাদমাধ্যমকে দেয়, যার মধ্যে রয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ফাঁস হওয়া এই তথ্যের মধ্যে ১৯৪০-এর দশক থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত সময়ের তথ্য রয়েছে। ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের যে গ্রাহকদের তথ্য ফাঁস হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ এবং মিসরের সাবেক একনায়ক হুসনি মোবারকের দুই ছেলে। রয়েছেন পাকিস্তানের গোয়েন্দা প্রধান, যিনি ১৯৮০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ থেকে শত শত কোটি ডলার আফগানিস্তানের মুজাহিদীনদের পাঠিয়েছিলেন। রয়েছে ভেনেজুয়েলার সরকারি কর্মকর্তাদের নামও।
ফাঁস হওয়া তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, শুধু অতি ধনীদেরই সেবা দিচ্ছে না ক্রেডিট সুইস ব্যাংক। তারা এমনকি নানা মাধ্যম থেকে সতর্কতা জারি করার পরও বিভিন্ন মানুষকে সেবা দিয়ে গেছে, যাদের নাম শুনলে যে কেউ তাদের সঙ্গে লেনদেনের সম্পর্ক তৈরিতে দুবার ভাববে। কিন্তু সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে ভাবার প্রয়োজন বোধ করেনি।
এ বিষয়ে সুইজারল্যান্ডের অর্থপাচার বিষয়ক সংস্থার সাবেক প্রধান ডেনিয়েল থেলেসক্লাফ নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি বা এমন উৎস থেকে পাওয়া অর্থ জমা করার ক্ষেত্রে সুইস ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু এই আইন সাধারণত অনুসরণ করা হয় না।
এ সম্পর্কিত এক বিবৃতিতে ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের মুখপাত্র ক্যানডিস সান বলেন, ‘এ ধরনের সব অভিযোগ ক্রেডিট সুইস পুরোপুরি অস্বীকার করছে। একই সঙ্গে উদ্দেশ্যমূলক কিছুর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগও খারিজ করে দিচ্ছে।’ তাঁর ভাষ্যমতে, ফাঁস হওয়া ব্যাংক হিসাবগুলোর অধিকাংশই কয়েক দশক আগের, যখন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাওয়া এবং এ সম্পর্কিত আইন, বিধি ও চর্চা এখনকার চেয়ে একেবারেই আলাদা ছিল। সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সুইস ব্যাংক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ