Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকা চায় নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক কিন্তু নিরাপত্তা জোটের মাধ্যমে নয়

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৩ এএম

বাংলাদেশ নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক চায় কিন্তু নিরাপত্তা জোটের মাধ্যমে এটি অর্জিত হোক - তা চায় না, বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি গণমাধ্যমে বলেন, আমরা নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক চাই কিন্তু এর মানে এই নয় যে এটি নিরাপত্তা জোটের মাধ্যমে অর্জিত হবে। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরের দেশগুলোর মধ্যে কেউ বাদ যাক এটি বাংলাদেশ চায় না এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক দেখতে চায় ঢাকা।

তিনি বলেন, এই এলাকার দেশগুলোর সবারই ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে একটি স্বার্থ আছে এবং সেটার প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমাদেরকে চিন্তা করতে হবে। যদি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নয়, এমন ক্লাবের প্রতিষ্ঠা হয়, তাহলে অনেকেই বাদ পড়ে যাবে কিন্তু আমরা বাদ দেওয়ার পক্ষে না।

কিভাবে সবাইকে নিয়ে অগ্রসর হওয়া যায় সেটিই আমাদের চিন্তা এবং আমরা এটাই চাই জানিয়ে তিনি বলেন, সবাইকে নিয়ে চলতে কোনো অসুবিধা হলে সেটি নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।
ইন্দো-প্যাসিফিক সংক্রান্ত অনেক বিষয়ে বাংলাদেশের মতের মিল রয়েছে এবং সাধারণ নিয়ম-কানুন প্রতিষ্ঠিত হলে দেশটির কোন সমস্যা নেই। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, শান্তিপূর্ণ ইন্দো-প্যাসিফিক, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, উন্মুক্ত চলাচল, দূষণমুক্ত মহাসাগর এবং একক কোন শক্তি এখানে যাতে প্রাধান্য বিস্তার করতে না পারে, এগুলোর সবগুলোই আমরা চাই।

ওইসব বিষয়ে আমাদের অনেকগুলো মিল আছে জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ইন্দো প্যাসিফিককে কেন্দ্র করে যদি কোনো উন্নয়ন কার্যক্রম বা নতুন পরিকল্পনা হয়, তবে সেটি আমরা অবশ্যই বিবেচনায় নিব এবং সেটিতে আমাদের কি লাভ আছে সেটা আমরা দেখব। তবে সেটি করতে গিয়ে যদি দেখা যায় যে টেনশন বেড়ে যাচ্ছে বা কাউকে মাইনাস করার চেষ্টা করা হচ্ছে তাহলে সেটি আমাদের জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হবে না।
বাংলাদেশের আকাক্সক্ষা : ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে বাংলাদেশের আকাক্সক্ষা কি তা নির্ধারণ করে লিপিবদ্ধ করার কাজ চলছে। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এটি আমরা করে ফেলব। আমাদেরকে প্রথম থেকেই কাজ করতে হচ্ছে। আগে এ বিষয়ে একটি প্রাথমিক ধারণা ছিল এবং ওইটির উপর ভিত্তি করে আমরা এর ব্যাপ্তি বাড়াবো।

এই অঞ্চলে বিভিন্ন শক্তির সঙ্গে বাংলাদেশ কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চীনের বিআরআই (বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ) এর সঙ্গে আছি আবার জাপানের বিগ বি-য়ের সঙ্গেও আছি। জাপানিজরা এখানে বড় আকারে বিনিয়োগ করতে চায় এবং সেক্ষেত্রে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে যে স্বার্থ রয়েছে সেটিকে এর সঙ্গে এক করতে হবে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, এজন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের কানেক্টিভিটি উদ্যোগ বাংলাদেশ-নেপাল-ভারত (বিআইএন) যোগাযোগ বা ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড হাইওয়ে সবগুলোতেই ঢাকার আগ্রহ রয়েছে।
কোয়াড : ইন্দো-প্যাসিফিক ও কোয়াড নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে এবং এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এছাড়া ইন্দো-প্যাসিফিককে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত-জাপান-অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে গঠিত কোয়াডে যুক্ত হওয়ার জন্য বাংলাদেশকে কেউ অনুরোধ করেনি। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘কোয়াডে আমাদেরকে কেউ যোগ দিতে বলেনি। কোয়াড নিয়ে এখনও একটি ধোঁয়াশা কাজ করছে এবং এখানে বাংলাদেশের ভূমিকা কি সেটি আমাদের দেখতে হবে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে এখনও অন্যান্য দেশগুলো কাজ করছে এবং তারাও তাদের সব ধারণা এখন পর্যন্ত প্রকাশ করেনি। ইন্দো-প্যাসিফিক যদি শুধু নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে কিছু হয় তাহলে সেটি আমরা গভীরভাবে বিবেচনা করবো বলে তিনি জানান।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ