মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
উত্তর কোরিয়ার একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা জাপানকে কিছুটা হলেও ঝাঁকুনি দিয়ে গেছে। তবে এটা ২০১৭ সালের অগাস্টের চেয়ে ভিন্নতর। সে সময় জাপানীদের ঘুম ভেঙ্গে ছিলো সাইরেনের শব্দে। কারণ কোন ধরণের সতর্ক বার্তা ছাড়াই উত্তর কোরিয়া জাপানের উপর দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছিল। জাপানিরা এটিকে চরম ধৃষ্টতা হিসেবে বিবেচনা করে।
এবার উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো স্বল্প পাল্লার এবং সাগরে যেখানে এগুলো পড়েছে, সেটি জাপানি উপকূল থেকে অনেক দূরে। কিং জ-উন মনে হচ্ছে এখনকার জন্য কিছুটা রাশ টেনে ধরেছেন। তবে এটি পরিবর্তন হতে পারে যদি তিনি যা চাইছেন- সেটি অর্জিত না হয়। সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর অর্থ হলো উত্তর কোরিয়া দ্রুত একটি কার্যকর পারমানবিক প্রতিরোধকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
"আমার দৃষ্টিকোণ থেকে এটাই হওয়ার কথা ছিলো," বলছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক একজন নৌ কমান্ডার প্রফেসর কিম ডং ইয়ুপ। "আমি বিস্মিত হচ্ছি, কারণ আমরা উত্তর কোরিয়ার প্রযুক্তিকে ছোট করে দেখেছি। আসলে উত্তর কোরিয়া তার সামরিক সক্ষমতা আমাদের ধারণার চেয়ে বেশি গতিতে এগিয়ে নিচ্ছে।" গত ৫ ও ১০ই জানুয়ারির পরীক্ষার পর পিয়ংইয়ং দাবি করেছে যে তারা সফলভাবে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে।
এর মানে হলো উত্তর কোরিয়া এমন প্রযুক্তি তৈরি করছে, যা ওই অঞ্চল জুড়ে আমেরিকা ও জাপানের ব্যয়বহুল ও জটিল ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাকে হারিয়ে দিতে পারে। দ্য সেন্টার ফর অ্যা নিউ আমেরিকান সেঞ্চুরির দায়েউন কিম বলছেন, "এটা পরিষ্কার যে তারা এমন অস্ত্র তৈরি করতে চায়, যা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাকে জটিল করে তুলতে পারে এবং আমেরিকার পক্ষে চিহ্নিত করা কঠিন হতে পারে।"
প্রফেসর কিম ডং ইয়ুপ এর সাথে একমত পোষণ করে বলেন, "উত্তর কোরিয়া আসলে চাইছে প্রতিপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সিস্টেমকে নড়বড়ে করে দিতে।" তিনি বলেন, তারা এমন পদ্ধতি তৈরিতে সক্ষমতা অর্জন করতে চাইছে, যা একদিকে শত্রুকে আক্রমণ করবে, আবার সেটিই নিজেকে প্রতিরক্ষা দিতে সক্ষম হবে। প্রফেসর কিম বলছেন, উত্তর কোরিয়ার মূল লক্ষ্য হামলা করা নয়, বরং নিজেদের রক্ষা করা এবং দেশটি এই সক্ষমতায় বৈচিত্র্যতা আনতে চাইছে।
উত্তর কোরিয়াকে পর্যবেক্ষণ যারা করেন, তাদের মধ্যে বড় অংশই এই ধারণা পোষণ করেন। তবে দক্ষিণ কোরিয়া কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে হামলা হলে প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাকে কার্যকর প্রতিরোধকে রূপান্তর থেকে বহু দূরেই আছে উত্তর কোরিয়া। যদিও দেশ দুটি বারবার বলেছে উত্তর কোরিয়া বর্তমান শাসকগোষ্ঠীকে উৎখাতের বা হামলার কোন লক্ষ্য তাদের নেই। তাহলে ছোট এই দেশটি কেন তার জিডিপির এক চতুর্থাংশ সামরিক খাতে ব্যয় করে চলেছে?
বিশ্লেষক অঙ্কিত পান্ডা বলছেন যে এমনও হতে পারে যে উত্তর কোরিয়া মনে করে যে নিজেকে রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত অস্ত্র এখনো তাদের নেই। "কিম জং-উন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আমার মনে হয় তিনি চীন বা রাশিয়াসহ কাউকেই বিশ্বাস করেন না। সে কারণেই হয়তো মনে করছেন যে তার সক্ষমতাকে অনেকখানি বাড়াতে হবে যাকে, আমরা যথেষ্ট হিসেবে বিবেচনা করতে পারি।"
তাছাড়া পিয়ংইয়ংয়ের আরো একটি লক্ষ্য আছে। তারা চায় জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাক এবং এজন্য আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের অন্তর্ভুক্তি দরকার। যদিও ঐতিহাসিকভাবে দেখা গেছে সংকট তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছে তারা এবং এখনো কিছু বিশ্লেষক তেমনটিই মনে করছেন। "সুতরাং এটা আমার কাছে ভালো লক্ষণ," বলছিলেন প্রফেসর কিম ইয়াংজুন। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল সিকিউরিটি এডভাইজরি বোর্ডের সদস্য। "শান্তি উদ্যোগের আগে কিম জং-আন সর্বোচ্চ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে চান। তিনি জো বাইডেনকে একটি পূর্ণাঙ্গ রোড ম্যাপসহ সিরিয়াস আলোচনার দিকে ঠেলে দিতে চান।"
সেটি হলে সম্ভবত তাকে হতাশই হতে হবে কারণ মিস্টার বাইডেন এখন ব্যস্ত ইউক্রেন সংকট নিয়ে। আর দ্বিতীয়ত পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো উত্তর কোরিয়ায় নিজেকে জড়িত করার খুব একটা উৎসাহ তার নেই। সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।