পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভরা শীতের মাঘ মাস প্রথম সপ্তাহ অতিক্রম করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর থেকে আসা মেঘমালা ও জলীয়বাষ্পের সাথে বৃষ্টিপাতের ঘনঘটা তৈরি হয়েছে। সেই সাথে মাঝারি থেকে কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশা পড়ছে। ঘন কুয়াশাপাতের কারণে দিনের বেলায়ও যানবাহনের হেড লাইট জ¦ালাতে হচ্ছে। অব্যাহত কুয়াশায় ফল-ফসল, শাক-সবজি ক্ষেতে কোল্ড ইনজুরির শঙ্কা বেড়ে গেছে। এ সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে হিমালয় ছুঁয়ে আসা হিমেল হাওয়া বইছে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কি.মি. বেগে। উত্তরাঞ্চলসহ দেশের অনেক এলাকায় জেঁকে বসেছে শীত। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায়ও তাপমাত্রার পারদ নেমে আসে ১৪ ডিগ্রিতে।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম জেলাসমূহের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। তবে কিছু এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ কমে আসতে পারে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও বৃষ্টিপাত হয়নি। এ সময়ে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৭.৮ এবং ঢাকায় ২৪.৪ ডিগ্রি সে.। চট্টগ্রামের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৪.৫ এবং সর্বনিম্ন ১৫.৪ ডিগ্রি সে.।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান জানান, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এরপরের ৫ দিনে সারা দেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
পশ্চিমা লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ ভারতের বিহার ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা জানান, উত্তর সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ। কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে মানুষজন। সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত শুরুর পরই জেলা জুড়ে নামছে শীতের পারদ। ঘন কুয়াশায় হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। শীত ও কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন খেটেখাওয়া, দিনমজুরসহ নিম্ন আয়ের মানুষজন। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই।
শীতবস্ত্রের অভাবে ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়ছেন চর ও দ্বীপ চরের শিশু ও বৃদ্ধরা। একই অবস্থা নদ-নদী সংলগ্ন বাঁধে আশ্রয় নেয়া মানুষজনেরও। শীতে গবাদি পশুগুলোকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। শীত উপেক্ষা করেই জীবন জীবিকার সন্ধানে ছুটে চলছেন শ্রমজীবীরা। সরকারি ও বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ভোর থেকেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে পথ-ঘাট। এদিকে শীতের কারণে কাজে যোগ দিতে ঘর থেকে বের হওয়া শ্রমজীবীরা পড়েছেন বিপাকে।
সকাল থেকেই কাজের সন্ধানে শহরমুখী রিকশা শ্রমিক, ভ্যান শ্রমিক, ঘোড়ার গাড়ি চালক, দিনমজুর ও ব্যবসায়ীদের কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করেই শহরে আসতে দেখা গেছে। শীতবস্ত্রের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন চরাঞ্চলসহ বাঁধসমুহে আশ্রয় নেয়া মানুষজন।
সদরের পাঁচগাছি ইউনিয়নের রিকশা চালক শমসের আলী বলেন, ‘এই ঠান্ডার মধ্যে রিকশা চালতে খুব অসুবিধা হয়। ঠান্ডার মধ্যে অসুবিধা হইলে আর কি করি পেট বাঁচা নাগবে।’
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই সরকার জানান, সরকারিভাবে জেলার নয়টি উপজেলার জন্য বরাদ্দের ৩৫ হাজার ৭শ’ কম্বল ও ১ কোটি ৮ লাখ টাকার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বেসরকারি সংগঠনগুলো যেসব শীতবস্ত্র দিয়েছে সেগুলোরও বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
আদমদীঘি (বগুড়া) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গত কয়েকদিনের ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে পশ্চিম বগুড়ার আদমদীঘি, সান্তাহার ও এর আশপাশ এলাকার মানুষ কাবু হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশা আর হাড় কাঁপানো তীব্র শীতে দেখা দিয়েছে জনদুর্ভোগ। শীতের তীব্রতা বাড়ায় এসব এলাকার শিশু, নারী, পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সের ব্যক্তিরা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এসব রোগীরা স্থানীয় ক্লিনিক ও চিকিৎসালয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত তিন চার দিন এসব এলাকায় সূর্য়ের দেখা মেলেনি। তীব্র শীতের সঙ্গে ঘন কুয়াশার কারণে গতি কমেছে ট্রেন বাসসহ যাত্রী পরিবহনের। ফলে যাত্রী এবং সর্বসাধারণ ও শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছে দুর্ভোগে। চাকরিজীবী ও প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাসাবাড়ি থেকে বাহিরে বের হচ্ছে না কেউ। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে শহরের দোকান পাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শহরগুলো হয়ে পড়ছে জনশূন্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।