বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
এ বছর আলুর ফলন ভালো হলেও মূল্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর কৃষকেরা। উপজেলার মাঠে মাঠে আগাম জাতের আলু উত্তোলন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। অনুকূল আবহাওয়া আর সময়মতো সার-বীজ ও কৃষি অফিসের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানের কারণে এ বছর আলুর ফলন ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি অধিদপ্তর। কিন্তু বাজারে আলুর আমদানি বেশি হওয়ায় দাম কমে গেছে। এতে আলুর দাম ভালো না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এলাকার আলু চাষিরা।
আলু চাষিদের সাথে কথা বললে তারা জানান, যারা আগে আলু তুলেছেন তারা বেশ ভালো দাম পেয়েছে। বর্তমানে যারা আলু তুলে বিক্রি করছেন, তাদের মোটা অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে। চাষাবাদ, সার, বীজ, সেচ, শ্রমসহ সব খরচ বাদ দিয়ে লাভ তো দূরের কথা, আসল টাকাও টিকছে না। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর বাজার প্রতি মণ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত কমে গেছে। এভাবে কমতে থাকলে আগামী সপ্তাহে যারা আলু তুলবেন, তাদের আরও বেশি লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার পলিপাড়া, গোয়ালপাড়া, শিবনগর, পলিশিবনগর, বুজরুক শিবনগর, পাঠকপাড়াসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে চাষিরা নাওয়া-খাওয়া ভুলে আগাম জাতের আলু তুলতে ব্যস্ত, যেন দম ফেলার ফুরসত নেই।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে প্রতিমণ ক্যারেট আলু ৩৬০, গ্যানোলা আলু ২৪০, কাটিনাল ৩৬০, লাল পাটনাই ৪০০, সাদা পাটনাই ৪৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহ খানেক আগেও প্রতি মণ ক্যারেট আলু ৪৪০, গ্যানোলা আলু ৪০০ টাকা, কাটিনাল ৫২০ টাকা, লাল পাটনাই ৬০০ টাকা, সাদা পাটনাই ৭০০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। পৌর বাজারের পাইকার নবিউল ইসলাম ও দীপক কুমার জানান, কাঁচামালের মূল্য সঠিকভাবে বলা যায় না। এটা নির্ভর করে আমদানির ওপর। আমদানী বেশি হলে দাম কমে যায়।
উপজেলার পাঠকপাড়া গ্রামের আলুচাষি নিপিন চন্দ্র বাবলু মিয়া বলেন, রোপণের ৬০ দিন বয়সে আলু তুলেছেন। এক বিঘা জমিতে ফলন হয়েছে ৭০ মণ। ফসলের উৎপাদন খরচ হয়েছে ২৩ হাজার টাকা। ৩০৫ টাকা মণ দরে আলু বিক্রি করে হয়েছে সাড়ে ২১ হাজার টাকা। তাতে লোকসান হয়েছে প্রায় দেড় হাজার টাকা। মাঠে তার আরও আলু রয়েছে। দশ-পনেরো দিন পর সেগুলো তুলতে হবে। কিন্তু বাজারে দাম পড়ে যাওয়ায় ব্যাপক লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন তিনিসহ অন্যান্য আলু চাষিরা।
ফুলবাড়ী কোল্ডস্টোরেজ ম্যানেজার হাসনাত জানান, এ বছর ৫৫ কেজির বস্তায় এক লাখ ৬০ হাজার ২০০ বস্তা আলু মজুদ রাখা হয়, যা এক মাস আগেই স্টোর থেকে বের হয়ে গেছে। বর্তমানে স্টোরে কোন আলু মজুদ নেই।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এ বছর এক হাজার ৯৯৪ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪৪২ হেক্টর জমির ৯ হাজার ৪০ মেট্রিকটন আলু তোলা হয়েছে । তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অধিক জমিতে আলুর চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার জানান, উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শে এ বছর এই উপজেলায় আলুর ফলন ভালো হয়েছে। গত বছরের কিছু মজুদ আলু থাকায় আগাম জাতের আলুর দাম কম। সেগুলো শেষ হলেই নতুন আলুর চাহিদা ও দাম দুটোই বাড়বে। এতে চাষিদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।