বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
লক্ষ্মীপুরে আমন পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও শ্রমিকরা। গত মৌসুমে আমন ধানের ভাল দাম পাওয়ায় চলতি মৌসুমে ফের আমনেই যেন স্বপ্ন বপন করেছে কৃষকরা। ধান গাছের পরিচর্যায় যেন দম ফেলার সময় নেই তাদের।
তবে মেঘনা উপক‚লীয় এলাকা রামগতি, কমলনগর, রায়পুর ও সদরের চররমনী মোহন এলাকায় জোয়ারের পানির তোড়ে কয়েক হাজার একর জমির ধানের চারা নষ্ট হয়ে অনেক কৃষকের স্বপ্ন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায়। যদিও স্থানীয় কৃষি বিভাগ এটাকে তেমন ক্ষতি হিসেবে দেখছে না। চররমনী মোহন ইউনিয়নের মাতবরহাট এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মো. দুলাল হোসেন বলেন, তার এলাকার বেড়িবাঁধের পাশ্চিম পাশে থাকা নদীর তীরবর্তী কয়েক একর জমির রোপা আমন নষ্ট হয়ে গেছে। মেঘনার অতিরিক্ত জোয়ারের পানির তোড়ে ধানের চারা বিনষ্ট হয়েছে এবং জমিতে লোনা পানি জমে থাকার কারণে ধানের চারা পঁচে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, গত মৌসুমে জেলায় আমন ধানের আবাদ হয়েছে ৮১ হাজার ৭৫৫ হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদন হয়েছে ৩ লাখ ৫১ হাজার ৮২৮ মেট্রিক টন। চলিত বছর আমন ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ২৯ হাজার ৬৬৪ মেট্রিক টন। ধানের আবাদ হয়েছে ৮১ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে। জেলায় দুই লাখ ৬৩ হাজার ৬০০ জন ধান চাষি রয়েছে। এদের মধ্যে মাত্র দুই হাজার ৮০০ কৃষককে সরকারিভাবে কৃষি প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে আড়াই হাজার জনকে ৫ কেজি করে উফসী ধানের বীজ, ড্যাপ সার ১০ কেজি ও এমওপি সার ১০ কেজি করে দেয়া হয়েছে। আর বাকী তিনশ জনকে দুই কেজি করে হাইব্রিড জাতের ধান বীজ ও ২০ কেজি ড্যাপ সার এবং ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে প্রদান করাসহ প্রান্তিক এবং ক্ষুদ্র কৃষকদের বিভিন্ন প্রনোদনা দেয়ার কথা জানায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জমিতে ধানের চারা লাগানো হয়ে গেছে। এ মুহূর্তে সার ও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ছিটানোর পাশাপাশি ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন আমন চাষিরা। যারা বর্ষার শুরু থেকে আমন ধানের চারা রোপণ করেছেন, তাদের প্রায় জমির ধানগাছ অনেকটা বড় হয়ে গেছে। ধানের জমিতে ফসল ভালো ফলনের জন্য ইউরিয়া সার ছিটাচ্ছেন। আবার প্রায় জমিতে পোকামাকড় মারতে কীটনাশক স্প্রে করছেন। বাতাসে দোল খাচ্ছে সবুজ গাছগুলো আর সেই তার সাথে দুলছে যেন আমন চাষিদের স্বপ্ন।
সদর উপজেলার চর আলী হাসান গ্রামের কৃষক মো. সফিক উল্যা জানান, তিনি চলতি মৌসুমে এক একর জমিতে আমন ধানের চারা লাগিয়েছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ৫০ মনের অধিক ধান উৎপাদন হবে বলে আশাবাদ তার। একই এলাকার কৃষক মো. শাহ আলম বলেন, তিনি প্রায় দেড় একর জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন। জমিতে সার এবং ওষুধ প্রয়োগ করেছেন। তার জমিতেও অধিক ধান উৎপাদনের প্রত্যাশা করেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন বলেন, কৃষকরা যাতে আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষ করে সে জন্য প্রনোদনা প্রদান করা হচ্ছে। সঠিক পদ্ধতিতে একজন চাষি চাষাবাদ করলে তার আশেপাশে যে সকল কৃষক রয়েছে তারা তা দেখে উৎসাহিত হবে।
তিনি আরও বলেন, সঠিক পরার্মশ নিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে ধানের ফলন ভালো হয়। তাই মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে থাকে। ধানের ফলন বেশি হওয়ার জন্য কৃষকদের সঠিক সময়ে বীজ বপন, সঠিক নিয়মে মানসম্মত ধানের চারা লাগানো, নিয়ম অনুযায়ী সার ব্যবহার ও সঠিক পরিচর্যার পরামর্শ প্রদান করা হয়। এছাড়া পোকা দমনে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে পোকা দমনের জন্য পরামর্শ প্রদান করি। যাতে কৃষকের চাষাবাদ খরচ কম পড়ে এবং পরিবেশের ক্ষতি না হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।