মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
উত্তর কোরিয়া গত দু'সপ্তাহের মধ্যে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। কিন্তু জানুয়ারি মাসে ঘন ঘন এধরণের পরীক্ষা কোন স্বাভাবিক ঘটনা না।
উত্তর কোরিয়ার সরকার সাধারণত এধরণের মিসাইল পরীক্ষা চালায় দেশটির রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলিকে সামনে রেখে। যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়া যখন একসাথে সামরিক মহড়া চালায় তখনও উত্তর কোরিয়া এধরণের ক্ষেপণাস্ত্র আকাশে উড়িয়ে নিজের শক্তি সম্পর্কে জানান দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান কার্নেগী এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এ কাজ করেন অংকিত পান্ডা। উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে তিনি একজন বিশেষজ্ঞ। তিনি বলছেন, এই মুহূর্তে উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি বেশ নাজুক অবস্থায় আছে। দেশের জনগণের মনোবলকে চাঙ্গা রাখতে এসব মিসাইল পরীক্ষা চালানো হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।
"কিম জং উনকে দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির কথাও বিবেচনা করতে হচ্ছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মাধ্যমে (জনগণকে) তিনি দেখাতে চাইছেন যে অর্থনৈতিক সঙ্কট থাকা সত্ত্বেও জাতীয় প্রতিরক্ষার বিষয়টিকে তারা গৌণ করে দেখছেন না," বিবিসিকে বলেন তিনি। উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ছে আর সে দেশে শুরু হয়েছে খাদ্য সঙ্কট। এর কারণ, কোভিড মহামারি ঠেকাতে পিয়ংইয়াং সরকার নিজেই দেশের ওপর অবরোধ আরোপ করেছে।
রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে তার প্রধান মিত্র দেশ চীনের সাথে কোন বাণিজ্য হচ্ছে না। তবে এটা খুব শীগগীরই আবার চালু হবে বলে মনে করা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী কিম জং উন সম্প্রতি স্বীকার করেছেন যে, তার দেশ এক "জীবন-মরণ সঙ্কটের' মুখোমুখি হয়েছে। শব্দের চেয়েও দ্রুতগতিসম্পন্ন হাইপারসোনিক মিসাইল তৈরিসহ উত্তর কোরিয়ার সামরিক শক্তি বাড়ানো হবে বলে তিনি অঙ্গীকার করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে উত্তর কোরিয়ার সাথে আলোচনা বন্ধ রয়েছে। আমেরিকা চায় উত্তর কোরিয়া তার পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ করুক। কিন্তু একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর জন্য বাইডেন সরকার গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ফলে সোমবার যে মিসাইল পরীক্ষা চালানো হয়েছে সেটি হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একটি জোরালো প্রতিক্রিয়া হতে পারে বলে মনে করছেন এউহা ওম্যানস ইউনিভার্সিটির উত্তর কোরিয়া বিষয়ক অধ্যাপক পার্ক ওন-গন। "তারা দেখাতে চায় যে যুক্তরাষ্ট্রের পেশী-শক্তিকে উত্তর কোরিয়া মোটেই ভয় পায় না," বলছেন তিনি।
উত্তর কোরিয়া এমন এক সময়ে এসব ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাচ্ছে যখন মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরে চীনে শুরু হতে যাচ্ছে বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিকস। এটি চীনের জন্য একটা চরম মর্যাদার বিষয়। "আমি ধারণা করতে পারি বেইজিংয়ে অলিম্পিকস শুরুর ঠিক আগে নিজের দোরগোড়ায় এধরনের মিসাইল পরীক্ষায় চীন সরকার খুব একটা খুশি হবে না," বলছিলেন উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে একজন বিশ্লেষক চ্যাড ও'ক্যারল।
টুইটারে এক পোস্টে তিনি মন্তব্য করেছেন, "এরকম ঘটনা যদি আরও ঘটে তাহলে এটা ধরে নেয়া অসম্ভব হবে না যে কোন কারণে উত্তর কোরিয়া চীনের প্রতি বিরক্ত।" তবে অংকিত পান্ডা মনে করেন, এসব ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে বেইজিং সরকার নাখোশ হলেও তারা আপাতত সহ্য করে যাবে, যদি উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র কিংবা দীর্ঘ-পাল্লার মিসাইল পরীক্ষা না চালায়।
"এটা চীনের জন্য লাল দাগে ঘেরা সীমানা," বলছেন তিনি। "চীনের সাথে যে কৌশলগত সুসম্পর্ক তাতে বেইজিং অলিম্পিক শুরু হওয়ার আগেই উত্তর কোরিয়া তার সামরিক মহড়া এবং মিসাইল পরীক্ষার কাজগুলো সম্পন্ন করতে চাইছে। "আর এসব পরীক্ষার জন্য এই সময়টাকে বেছে নেয়ার পেছনে কারণ হচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে উত্তর কোরিয়া চুপ থাকতে চায় না এবং দেখাতে চায় না যে উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি এখন লাইফ সাপোর্টে রয়েছে।" সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।