Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলার অনুমতি আদালতের

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২২, ১:২১ পিএম | আপডেট : ১:৩৯ পিএম, ১৩ জানুয়ারি, ২০২২

ব্রিটিশ প্রিন্স অ্যান্ড্রু একজন নারীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দেওয়ানি মামলার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। ২০০১ সালে যখন তিনি যৌন নির্যাতন করেছিলেন বলে অভিযোগ, সে সময় ওই নারীর বয়স ছিল ১৭ বছর।

ভার্জিনিয়া জিউফ্রে নামের ওই নারী প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে করা মামলায় দাবি করেছেন যে, তিনি ২০০১ সালে তাকে অপব্যবহার করেছিলেন। তবে অ্যান্ড্রুর আইনজীবীরা বলেছেন যে, অভিযোগটি খারিজ করা উচিত। তারা ২০০৯ সালের একটি চুক্তির উল্লেখ করেন যেটি জিউফ্রে দোষী সাব্যস্ত যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টেইনের সাথে স্বাক্ষর করেছিলেন। কিন্তু নিউইয়র্কের একজন বিচারক রায় দিয়েছেন, এই মামলা চলতে পারে।

যুবরাজ ধারাবাহিকভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। বাকিংহাম প্যালেস বলেছে যে, তারা চলমান আইনি বিষয়ে মন্তব্য করবে না। নিউইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্টের ইউনাইটেড স্টেটস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক লুইস এ কাপলানের ৪৬ পৃষ্ঠার সিদ্ধান্তে মামলাটি খারিজ করার প্রস্তাবটি বাতিল করা হয়েছে। এর অর্থ হল ৬১ বছর বয়সী ডিউক অফ ইয়র্কের বিরুদ্ধে মামলা এই বছরের শেষের দিকে আদালতে শুনানি হতে পারে।

বিচারক কাপলান বলেছেন যে, তার রায় মিসেস জিউফ্রের অভিযোগের ‘সত্য বা মিথ্যা’ নির্ধারণ করেনি। জিউফ্রে বলেছিলেন, তিনি ‘সন্তুষ্ট’ যে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর মামলাটি খারিজ করার প্রচেষ্টা অস্বীকার করা হয়েছিল এবং ‘তার বিরুদ্ধে তার দাবির বিষয়ে এখন প্রমাণ নেওয়া হবে’। তার আইনজীবী ডেভিড বয়েস দ্বারা জারি করা একটি বিবৃতি যোগ করেছে: "তিনি সেই দাবিগুলির যোগ্যতার বিচারিক সিদ্ধান্তের জন্য উন্মুখ।"

আদালতের নথিতে, মিসেস গিফ্রে বলেছিলেন যে তিনি প্রয়াত বিলিয়নেয়ার ফাইন্যান্সার এপস্টেইনের যৌন পাচার এবং অপব্যবহারের শিকার হয়েছেন। তার অপব্যবহারের একটি অংশ অন্যান্য প্রভাবশালী পুরুষ দ্বারা তাকে নিপীড়িত হতে দেওয়া বলে সে অভিযোগ করে। রানির দ্বিতীয় পুত্র প্রিন্স অ্যান্ড্রু, ২০১৯ সালে বিবিসি নিউজনাইটের সাথে একটি সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন যে ভার্জিনিয়া জিউফ্রের সাথে কখনও দেখা করার কথা তার মনে নেই এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা যুক্তরাজ্যে তাদের মধ্যে কোন যৌন সম্পর্ক ‘ঘটেনি’।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে প্রিন্স অ্যান্ড্রু বন্ধু এপস্টেইনের সাথে ভার্জিনিয়া রবার্টসের (বর্তমানে ভার্জিনিয়া জিউফ্রে নামে পরিচিত) একটি বন্দোবস্ত চুক্তি হয়। অর্থের বিনিময়ে করা এই চুক্তির মাধ্যমে ‘অন্য যেকোন ব্যক্তি বা সত্তার’ জন্য জিউফ্রের সকল অভিযোগ থেকে তাদের দায় মুক্তি প্রদান করা হয়েছে।

জিউফ্রে গত আগস্টে অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে মামলা করেন। তার অভিযোগ, দুই দশকেরও বেশি সময় আগে প্রিন্স অ্যান্ড্রু তাকে যৌন সম্পর্ক করতে বাধ্য করেছিলেন। তার বয়স তখন ১৭ বছর ছিল। সে সময় তিনি লন্ডনে এপস্টাইনের সাবেক সহযোগী গিসলাইন ম্যাক্সওয়েলের বাড়িতে ছিলেন। জিউফ্রে বলেছেন যে, প্রিন্স অ্যান্ড্রু এপস্টাইনের দুটি বাড়িতেও তার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপণ করেছেন।

এপস্টাইনের সাথে সম্পন্ন মীমাংসা চুক্তির মাধ্যমে জিওফ্রেকে ৫ লাখ ডলার প্রদান করা হয়েছিল। অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে ম্যানহাটনের ফেডারেল আদালতে দায়ের করা তার দেওয়ানী মামলার অংশ হিসাবে এই চুক্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। চুক্তিতে জিউফ্রের অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়েছে যে, এপস্টাইন তাকে কিশোরী হিসেবে ফ্লোরিডার পাম বিচে তার এস্টেটে ‘যৌন দাসী’ হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন।

প্রিন্স অ্যান্ড্রু মামলা খারিজ করার জন্য যুক্তি দিয়েছিলেন যে, এপস্টাইন এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার মাধ্যমে জিউফ্রে ‘অর্থ’ চাইছেন। বর্তমানে ৩৮ বছর বয়সী জিওফ্রে অ্যান্ড্রুর কাছ থেকে অনির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

প্রসঙ্গত, নারী পাচারের দায়ে অভিযুক্ত জেফরি এপস্টাইনের সাথে মেলামেশার কারণে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ডিউক অব ইয়র্ক প্রিন্স অ্যান্ড্রু। যার জেরে নভেম্বর ২০১৯-এ অনেক রাজকীয় দায়িত্ব ছেড়ে দিতে তিনি বাধ্য হয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, এপস্টাইনের সাথে তার মেলামেশা ‘আমার পরিবারের কাজে বাধা’ হয়ে উঠেছে। সূত্র: বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাজ্যে


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ