পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকার, সরকারি দলের বাধা-বিপত্তির উপেক্ষা করে সাম্প্রতিক সময়ে জনগণ বিএনপির সমাবেশে অংশ নিয়ে সফল করে তুলেছে। জনগণের এই স্বত:স্ফূর্ত প্রতিরোধ আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে সরকার করোনাভাইরাস ও ওমিক্রনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। ঘরোয়া পরিবেশে সভা-সমাবেশের সুযোগ রেখে, হাট-বাজার, শপিংমল, স্কুল-কলেজ পরিচালনার অনুমতি দিয়ে শুধু উন্মুক্ত স্থানে সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সমাবেশ নিষেধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বলেও মনে করে বিএনপি। গত সোমবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির সভায় এসব কথা বলা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ওই সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরে গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ এবং ওমিক্রনের বিস্তার প্রতিরোধের কথা বলে ১০ জানুয়ারি সরকার যে নির্দেশাবলী জারী করেছে তাতে ঘরোয়া পরিবেশে সভা সমাবেশের সুবিধা বহাল রেখে উম্মুক্ত স্থানে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে বিএনপি স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের সরকারি অপপ্রয়াস বলে মনে করে। কারণ জাতিসঙ্ঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেখানে বদ্ধ স্থানের চেয়ে উম্মুক্ত স্থানে ওমিক্রন ও কোভিড-১৯ এর বিস্তারের সম্ভাবনা কম বলেছেÑ সেখানে হাট, বাজার, শপিংমল, স্কুল-কলেজ ইত্যাদি স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দিয়েÑ স্বাস্থ্যবিধি মেনে উম্মুক্ত স্থানে সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সমাবেশ নিষেধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। চলমান নির্বাচনী প্রক্রিয়া অব্যহত রেখে রাজনৈতিক সমাবেশ বন্ধ রাখা অগ্রহণযোগ্য।
সভায় সম্প্রতি জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে সরকার প্রধানের জনগণের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার দাবীকে হাস্যকর ও নিম্নমানের রসিকতা হিসাবে উল্লেখ করে বলা হয় যে, বিশেষ করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের তথাকথিত নির্বাচনী প্রহসনের বিষয়টি দেশে-বিদেশে বহুলভাবে সমালোচিত এবং সমানভাবে প্রত্যাখ্যাত। এসব নির্বাচনে হয় উল্লেখযোগ্য দলগুলো অংশ নেয়নি কিম্বা নির্বাচনের আগের রাতেই ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হয়েছে এবং এসব অপকর্ম গোপন রাখার জন্য সরকার আন্তর্জাতিক নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের আসতে না দিয়ে ভূঁয়া পর্যবেক্ষক আনার অপচেষ্টা চালিয়ে বিশ্বব্যাপী নিন্দিত হয়েছে। এসব নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী সরকারের প্রধান যখন এটাকে জনগণের ভোটে নির্বাচিত বলে দাবী করেন তখন এটা স্পষ্টই বোঝা যায় যে, এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে আগামী নির্বাচনগুলোও এমনই কিম্বা তার চেয়েও খারাপ হবে।
সরকারের প্রধান তার বক্তৃতায় তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করলেও সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু এই জন্যই বলেননি যেÑ তা’হলে জনগণ প্রকৃত তথ্য জেনে যাবে। বাস্তবতা হচ্ছে- বছরের পর বছর ধরে এই সরকার প্রকাশ্যে জনগণের মৌলিক মানবাধিকার হরণ করে চলেছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অগণতান্ত্রিক পন্থায় দমনের জন্য গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যা, নিপীড়ন, মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার ও হয়রানী এবং নির্যাতন চালিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন আমাদের মাতৃভূমিকে আতংকের জনপদে পরিণত করেছে। সারা বিশ্ব সরকারের এই অব্যাহত নির্মম ও অগণতান্ত্রিক আচরণ প্রত্যক্ষ করেছে এবং প্রতিবাদ জানিয়েছে। নানা বিধিনিষেধ সত্ত্বেও বাংলাদেশের গণমাধ্যমের একাংশ এবং মানবাধিকার সংগঠন সমূহ সরকারের অগণতান্ত্রিক, অমানবিক ও দমনমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে খবর ও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। দেশের গণতান্ত্রিক সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি ক্রমাগত এসবের প্রতিবাদ জানিয়েছে, প্রতিকার চেয়েছে। এমনকি জাতিসংঘের কমিটি ফর এনফোর্সড ডিসএ্যাপায়রেন্স বার বার এ ব্যাপারে রিপোর্ট পেশ করে তা বন্ধ করার আহ্বানে ব্যর্থ হয়ে তদন্ত করার জন্য বাংলাদেশে আসতে চাইলে তাদের আসার অনুমতি দেয়া হয়নি। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট ও কংগ্রেসের দ্বি-দলীয় যৌথ গ্রুপ, যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটি, টম ল্যানটস হিউম্যান রাইটস কমিশন, বৃটিশ ও অষ্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টসহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক সংগঠন ও গণতান্ত্রিক বিশে^র বহু দেশের সংসদে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি, বিরুদ্ধ মতাবলম্বীদের দমনে অমানবিক কঠোরতা, গুম, খুন এবং নির্বাচনী প্রহসনের বিষয়ে আলোচনা ও সুপারিশ করা হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং এ্যামেনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল’এর মত বিশ^খ্যাত মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান এবং এসোসিয়েটেড প্রেসসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম অসংখ্য জরিপ রিপোর্ট ও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কিন্তু সরকারের আচরণে কোন পরিবর্তন ঘটেনি বরং স্বৈরাচারী সরকার ক্রমান্বয়ে ফ্যাসীবাদী হয়ে উঠেছে।
সভার সিদ্ধান্ত আরও বলা হয়, যে নাগরিকদের গুম, খুন, নির্যাতন করা হচ্ছে Ñ সেই নাগরিকদের অর্থ দিয়েই এই সরকার একাধিক লবিষ্ট নিয়োগ করে ব্যর্থ হয়েছে। আর এই ব্যর্থতার ক্ষোভ থেকেই সরকার প্রধান এখন জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য ষড়যন্ত্রের কথা বলছেন।
দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, বিএনপি মনে করে যে, ক্ষমতার মোহে বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকারই ষড়যন্ত্র করে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সমূহ ধ্বংস করেছে; দূর্নীতি, অর্থপাচার এবং অপশাসনের দ্বারা জনগণকে ক্রমবর্দ্ধমান ঋণের বেড়াজালে আবদ্ধ করেছে এবং ক্রমাগত জনগণের মৌলিক মানবাধিকার সমূহ হরণ করে বিশ^ দরবারে দেশের মর্যাদা ধ্বংস করে দিয়েছে।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।