Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক শুরু, প্রদীপের পদক বাতিলসহ আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২২, ১১:৩৫ পিএম

পুলিশের গুলিতে নিহত মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু হয়েছে রোববার। সব ধরনের সন্দেহের ঊর্ধ্বে উঠে প্রসিকিউশন চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করেছেন। তাই আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করেছেন আইনজীবীরা। দিনব্যাপী অসমাপ্ত যুক্তিতর্কে প্রথম বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রপক্ষের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।

এর আগে সকাল পৌনে ১০টার দিকে কঠোর নিরাপত্তায় সাবেক ওসি প্রদীপসহ ১৫ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। জেলা জজ ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে বাদি পক্ষে যুক্তিতর্কে আরো অংশ নেন ঢাকা থেকে আগত সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান।

তিনি সাক্ষীদের জবানবন্দি ও আইনের বিভিন্ন রেফারেন্স উল্লেখ করে আদালতের কাছে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘সব ধরনের সন্দেহের ঊর্ধ্বে উঠে প্রসিকিউশন চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করেছেন, তাই আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে- আইন ও পদ্ধতির আলোকে সর্বোচ্চ শাস্তি তথা ন্যায় বিচার কামনা করছি।’

দীর্ঘ বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ‘আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে মেজর সিনহাকে হত্যা করেছে। পুলিশের কিছু বিপথগামী সদস্য দেশের একজন মেজরকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে- এতে সার্বিকভাবে সমগ্র পুলিশের কোনো দোষ নেই।

সৈয়দ রেজাউর রহমানের দাবি, মামলা দায়ের থেকে শুরু করে তদন্ত, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ, অভিযোগপত্র দায়েরসহ সবকিছুই আইন ও পদ্ধতি মোতাবেক যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

তিনি ছাড়াও রাষ্ট্রপক্ষে আরো বক্তব্য রাখেন কক্সবাজারের সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও মোহাম্মদ মোস্তফা।

রাষ্ট্রপক্ষের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম আদালতে তার বক্তব্যের শুরুতে মেজর সিনহা হত্যায় অভিযুক্ত ওসি প্রদীপের সমস্ত রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ও পদক বাতিলের ব্যবস্থা নিতে মৌখিকভাবে আবেদন জানিয়েছেন। তিনি জানান, ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে ২০৪ জনের বেশি নিরীহ মানুষকে বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম আরো বলেন, এই মামলায় ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাদের জেরা শেষ হওয়ার পর ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর ফৌজদারি কার্যবিধি ৩৪২ ধারায় ১৪ জন আসামি আদালতে তাদের লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে মেজর সিনহাকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় পুলিশ তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করে। ঘটনার পর গত বছরের ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলীসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।

আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা ও র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের তৎকালীন দায়িত্বরত সহকারী পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম ওসি প্রদীপসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

রোববার দিনব্যাপী যুক্তিতর্ক অসামাপ্তভাবে আসামি পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ জাকারিয়া ও অ্যাডভোকেট শামসুল আলমের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ