পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সমাবেশে পথে পথে বাধা। অবশেষে সকল বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশেস্থলে যোগ দেয় হাজার হাজার নেতাকর্মী।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতি যে আলোচনা শুরু করছেন, সেটি আগামী নির্বাচনে ভোট চুরির একটি প্রক্রিয়ার অংশ। ১৪৪ ধারা আর কোথাও দিয়ে লাভ হবে না। ধারার সময় শেষ হয়ে গেছে। অন্যান্য জায়গার মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও ধারা কাজ হয়নি। জোয়ার শুরু হলে বাধা দিয়ে রাখা যায় না। গতকাল শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের বটতলি বাজরে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এখন নাকি আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রেসিডেন্ট আলোচনা শুরু করেছেন। কীসের আলোচনা ? যারা ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮ তে ভোট চুরি করেছে, সেই চক্র আগামী নির্বাচন ভোট কীভাবে চুরি করবে। সেই আলোচনা চলছে। এই আলোচনাটা মূলত আগামী নির্বাচনের ভোট চুরির প্রক্রিয়ার অংশ। দেশের মানুষ নিবিড়ভাবে ভোট চোরদের পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি আরো বলেন, চোরদের বলতে চাই, সেই পথ থেকে সরে আসুন। বাংলাদেশ জেগে উঠেছে। ভোট চোর ধরতে হবে। যেখানেই এই চোরদের দেখবেন, জনগণের সামনে তুলে ধরবেন। এদের বলবেন তুই চোর-ভোটচোর। এদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়ার দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি। বিশেষ অতিথির বক্তব্য কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এমপি বলেন, বেগম জিয়া কারাগারে হেঁটে গেছেন। এখন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন না। এর দায় সরকারকে নিতে হবে।
সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের। জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক জেলা বিএনপি’র সভাপতি হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এমপি, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল ও সাবেক প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক এ. কে. একরামুজ্জামান সুখন প্রমুখ।
এদিকে, ১৪৪ ধারা জারির পর কার্যত এক প্রকার অচল হয়ে পড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয় নেতাকর্মীরা। তবে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে গত শুক্রবার থেকেই উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। শহরের ফুলবাড়িয়া কনভেনশন সেন্টার এলাকায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা ও মুক্তির দাবিতে মহা সমাবেশ আহবান করে। এজন্য মৌখিক অনুমতিও পায় প্রশাসনের। এর মধ্যে জেলা ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ছাত্র সমাবেশ আহবান করে ওই এলাকায়। গতকাল শনিবার দুপুরে দু’টি সংগঠনের সমাবেশ আহবান করায় উত্তেজনাকর অবস্থার সৃষ্টি হয়।
গত শুক্রবার রাতে জেলা প্রশাসক পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। এর আগেই জেলা বিএনপির শীর্ষ ৩ নেতাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান এবং সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক জহিরুল হক খোকন, সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলামকে।
অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে ৬ শতাধিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয় শহরের ৫২টি পয়েন্টে। জেলার আভ্যন্তরীন গণপরিবহন বন্ধ থাকে। সকাল থেকেই পৈরতলা বাস স্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন বাস কাউন্টারগুলো বন্ধ রয়েছে। শহরের ভাদুঘর পৌর বাস টার্মিনাল থেকেও দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকটি বাস কাউন্টারের কর্মকর্তারা জানান, ভোরে কাউন্টারগুলো খোলা হয়েছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর পুলিশের পক্ষ থেকে কাউন্টার বন্ধ রাখতে বলা হয়। এতে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়ে।
এর আগে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার গাড়ি সমাবেশস্থলে আসার আগে আশুগঞ্জ এলাকায় আটকে দেয় পুলিশ। টোল প্লাজা এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে রুমিন ফারহানা এমপি স্থানীয় উজানভাটি হোটেলে অবস্থান নেন। সেখান থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা পর তারা সমাবেশ স্থলে রওয়ানা হন।
এর মধ্যে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সমাবেশের প্রস্তুতি চলতে থাকে। শহরতলীর ঘাটুরা, মীরহাটি ও বটতলী এলাকায় পৃথক দু’টি স্থান নির্বাচন করে কর্মীরা সেখানে জড়ো হতে থাকে। পরে কেন্দ্রীয় নেতারা বটতলী এলাকায় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিলে দুপুর ২টা থেকে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মানুষ যোগ দেয়। জেলার নাসিরনগর, আখাউড়া, কসবা, সরাইল, বিজয়নগর, নবীনগর, বাঞ্ছারামপুর দলীয় কর্মীরা সমাবেশে যোগ দেয়। সমাবেশে যোগ দিতে আসা পথে পথে নানা ধরনের বাধা বিপত্তি মধ্যে পড়েন তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।