Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাভারে ২৭ চেয়ারম্যান প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০২২, ৮:০৭ পিএম

সাভার উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত ১ জনসহ ২৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী তাদের জামানত হারিয়েছেন। নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী, মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট না পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। সাভার উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৫২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এদের মধ্যে ২৭ জন প্রার্থী কাঙ্খিত ভোট না পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে গত ৫ জানুয়ারী ওই ১০টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। উপজেলার ১১ ইউপির মধ্যে ৯টিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। বাকি ২ ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের দুই বিদ্রোহী প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। সাভার উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফখর উদ্দিন শিকদার বলেন, ইউপি নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রত্যেক প্রার্থীকে সরকারি কোষাগারে পাঁচ হাজার টাকা করে জামানত দিতে হয়। সেই জামানতের টাকা ফেরত পেতে ওই ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্রগুলোতে মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ পেতে হয়। যেসব প্রার্থী এই পরিমাণ ভোট পাবেন না, তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে।

গত বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, উপজেলার বিরুলিয়া ও শিমুলিয়া ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পাঁচজন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী- কাউন্দিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মেছের আলী ও মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাহাবুদ্দিন কবিরাজের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তাদের প্রাপ্ত ভোট নৌকা ৮৫৮ ও মোটর সাইকেল ১১৬ ভোট। জামানত বাঁচাতে হলে চেয়ারম্যান পদের একেকজন প্রার্থীকে সর্বনিম্ন ১ হাজার ৭৩৪টি ভোট পেতে হতো এ ইউনিয়নে। আমিন বাজার ইউনিয়নে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকের প্রার্থী মাওলানা শফিকুর রহমানের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তার প্রাপ্ত ভোট ৪১৯ ভোট। জামানত বাঁচাতে হলে সর্বনিম্ন ২ হাজার ৩৫৭টি ভোট পেতে হতো এ ইউনিয়নে।

ভাকুর্তা ইউনিয়নে ৪ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এদের মধ্যে সতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকে নাছির উদ্দিন ৫৪ , মোটর সাইকেল প্রতীকে নুরুল আমিন ৭৯৮, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকের মাহমুদুল হাসান ১৫২৬ ও টেবিল ফ্যান প্রতীকের শহিদুল ইসলাম ৮৫ ভোট। জামানত বাঁচাতে হলে সর্বনিম্ন ২ হাজার ২৮৪টি ভোট পেতে হতো এ ইউনিয়নে। বনগাও ইউনিয়নে ২ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকের মোক্তার হোসেন ৪৩৪ ও সতন্ত্র প্রার্থী চশমা প্রতীক নিয়ে সাইফ উদ্দিন পেয়েছেন ২৪৫৬ ভোট। জামানত বাঁচাতে হলে চেয়ারম্যান পদের একেকজন প্রার্থীকে সর্বনিম্ন ২ হাজার ৫৩২টি ভোট পেতে হতো এ ইউনিয়নে।

সাভার সদর ইউনিয়নে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকের আর মাহমুদ বিশ্বাস ৫৯০ ভোট পেলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। জামানত বাঁচাতে হলে চেয়ারম্যান পদের একেকজন প্রার্থীকে সর্বনিম্ন ২ হাজার ৫৪৬টি ভোট পেতে হতো এ ইউনিয়নে। বিরুলিয়া ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এদের মধ্যে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে উজির মাহমুদ ১৮৩ ভোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকে ২১৩৯, সতন্ত্র প্রার্থী এ ইউনিয়নে বিজয়ী চেয়ারম্যান সেলিম মন্ডলের আপন ছোট ভাই ঘোড়া প্রতীকে মহসীন মন্ডল ১৮, মোটর সাইকেল প্রতীকে গিয়াস উদ্দিন ৭৭৪, চশমা প্রতীকে শাহীন মিয়া ৩৩৭ ভোট। জামানত বাঁচাতে হলে চেয়ারম্যান পদের একেকজন প্রার্থীকে সর্বনিম্ন ২ হাজার ৩২৮টি ভোট পেতে হতো এ ইউনিয়নে।

পাথালিয়া ইউনিয়নে জামানত হারিয়েছেন ৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী। এদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকে আলফাজ উদ্দিন সিরনিয়াবাত ১৩৪৭, জাকের পার্টি মনোনীত গোলাপ ফুল প্রতীকে ২৭৪ ও সতন্ত্র প্রার্থী চশমা প্রতীকে ৪০৭ ভোট। জামানত বাঁচাতে হলে চেয়ারম্যান পদের একেকজন প্রার্থীকে সর্বনিম্ন ৪ হাজার ৪৪৪টি ভোট পেতে হতো এ ইউনিয়নে। আশুলিয়া ইউনিয়নে জামানত হারিয়েছেন ২ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকে আব্দুল কাইয়ুম ৩ হাজার ৩৪ ভোট ও জাকের পার্টি মনোনীত গোলাপ ফুল প্রতীকে বদরুল আলম ২১১ ভোট। জামানত বাঁচাতে হলে চেয়ারম্যান পদের একেকজন প্রার্থীকে সর্বনিম্ন ৫ হাজার ৭৬টি ভোট পেতে হতো এ ইউনিয়নে।

ইয়ারপুর ইউনিয়নেও জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে ২ জনের। এদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকে মোকলেছুর রহমান ৩ হাজার ১৪৪ ও জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে আর কামরান পেয়েছেন ৮৯৩ ভোট। জামানত বাঁচাতে হলে চেয়ারম্যান পদের একেকজন প্রার্থীকে সর্বনিম্ন ৫ হাজার ৬২৯টি ভোট পেতে হতো এ ইউনিয়নে। সর্বশেষে শিমুলিয়া ইউনিয়নে সবোর্চ্চ ৫ জন প্রার্থী তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এরা হলেন, সতন্ত্র প্রার্থী টেলিফোন প্রতীকে জাকির হাসান ৭৬৯, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকে ফয়েজ হোসেন ৬২৫, সতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকে ইকবাল হোসেন ৩৬৮, টেবিল প্রতীকে জিয়াউর রহমান ৩০ ও অটোরিক্সা প্রতীকে সাইদুর রহমান ভোট পেয়েছেন ৩০ টি। জামানত বাঁচাতে হলে চেয়ারম্যান পদের একেকজন প্রার্থীকে সর্বনিম্ন ৪ হাজার ৫৬৮টি ভোট পেতে হতো এ ইউনিয়নে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউপি নির্বাচন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ