Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোরআন ও হাদিসের বিকল্প নেই খুৎবা পূর্ব বয়ান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০২২, ৪:২২ পিএম

চতুর্দিকে শুধু অশান্তি আর বিশৃঙ্খলা। সুতরাং অশান্ত পৃথিবীকে শান্তি পূর্ণ করতে হলে মহান আল্লাহর নাযিলকৃত পবিত্র কোরআন ও হাদিসের সুশিক্ষা প্রতিটি মানুষকে গ্রহণ করে তার আলোকে জীবনযাপন করতে হবে। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোরআন হাদিসের কোনো বিকল্প নেই। আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম এসব কথা বলেন। রাজধানীর মসজিদগুলোতে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় বাইরে রাস্তার ওপর মুসল্লিদের জুমার নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি এহসানুল হক জিলানী আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, ইসলামই সঠিক ধর্ম। যার মধ্যে বাড়াবাড়ি নেই ছাড়াছড়ি নেই এবং কোন বক্রতাও নেই। ইসলাম মানুষের মাঝে মুসলমানের মাঝে বিভক্তিকে অনুমোদন করে না। তাইতো আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন," নিশ্চয়ই সমস্ত মুমিন ভাই ভাই সুতরাং তোমরা তোমাদের ভাইয়ের কল্যাণ কামনা করো আর আল্লাহকে ভয় করো আল্লাহ তায়ালা তোমাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করবেন।" রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, "তোমাদের মধ্যে প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত সে তার নিজের জন্য যেই জিনিসটা ভালোবাসে সেটা তার অপর ভাইয়ের জন্য ভালো না বাসবে"। ইসলাম এমন এক ধর্ম যা গরিব ধনী শক্তিশালী দুর্বল রাজা প্রজা এর মাঝে পার্থক্য পছন্দ করে না। বরং প্রত্যেকের মাঝে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার দাবি রাখে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন," তোমরা ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করো আর এটাই হল তাক্বওয়ার অধিক নিকটবর্তী "। হাদীস শরীফে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, "প্রকৃত মুসলমান সেই যার হাত এবং যবান থেকে অন্যান্য মুসলমান নিরাপদ থাকে "। নিশ্চয় ইসলাম কারো প্রতি জুলুম করে না এবং জুলুমকে সমর্থনও করে না বরং মানুষকে শান্তি দয়া ও মহব্বতের প্রতি আহবান করে। হাদীস শরীফে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ ফরমান, নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা কেয়ামত দিবসে বলবেন, আমার মহব্বতকারীরা কোথায় ? আমার ইজ্জতের কসম, আমি আজকে তাদেরকে আমার আরশের ছায়ার নিচে আশ্রয় দান করব। যেদিন আমার আরশের ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না। " আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ইসলামের প্রকৃত অনুসারী হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমীন।
ঢাকার শেওড়াপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি সিফাতুল্লাহ রহমানি আজ জুমার বয়ানে বলেন, আজ বিশ্ব পরিস্থিতি নাযুক অবস্থায় পৌছেছে। সারা পৃথিবীর মানুষ অশান্তির আগুনে জ্বলে পুড়ে ছারখার হচ্ছে। চতুর্দিকে শুধু অশান্তি আর বিশৃঙ্খলা। সুতরাং অশান্ত পৃথিবীকে শান্তি পূর্ণ করতে হলে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর নাযিলকৃত পবিত্র কোরআন ও হাদিসের সুশিক্ষা প্রতিটি মানুষকে গ্রহণ করে তার আলোকে জীবনযাপন করতে হবে। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোরআন হাদিসের কোনো বিকল্প নেই।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে"এটি (কোরআন) সেই কিতাব যাতে (মহান আল্লাহ থেকে অবতীর্ণ হওয়ার ব্যাপারে) কোনো সন্দেহ নেই। এটি আল্লাহভীরু হতে ইচ্ছুক লোকদের জন্য (সার্বিক বিষয়ে) পথ প্রদর্শনকারী।"(সূরাতুল বাকারা,২)। অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে "এটি রমযান মাস যাতে পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে,যা মানুষের (সার্বিক বিষয়ের)জন্য পথ প্রদর্শক এবং সত্য পথযাত্রিদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় অন্যায়ের মাঝে পার্থক্যকারী।"(সূরা আল বাকারা,১৮৫)। রাসূলে কারীম (সা.) ইরশাদ করেছেন "তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ যিনি কোরআন শিক্ষা করে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয়"। (বুখারি শরিফ)। আলোচ্য হাদিস থেকে বুঝা যায় যে ইহকাল এবং পরকাল উভয় জগতে শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি হলো পবিত্র কোরআনের সুশিক্ষা অর্জন করা। রাসূলে কারীম (সা.) আরো ইরশাদ করেছেন "যে ব্যক্তি বিশুদ্ধভাবে কোরআন পড়লো এবং কোরআনের বিধান অনুযায়ী জীবনযাপন করলো, কেয়ামত দিবসে তার পিতা মাতাকে এমন একটি মুকুট পড়িয়ে দেয়া হবে যার আলো সূর্যের আলোর চেয়েও অধিকতর হবে। যদিও সেই সূর্য তোমাদের ঘরের ভিতরেও থাকে। তাহলে ঐ ব্যক্তির (মর্যাদার) ব্যাপারে তোমাদের কি ধারণা যে ব্যক্তি এই কোরআনের বিধান অনুযায়ী জীবনযাপন করে"। (আহমাদ,আবু দাউদ) সুতরাং আলোচ্য আয়াত ও হাদিসের আলোকে এ কথা প্রতীয়মান হয়েছে যে ইহকাল ও পরকাল উভয় জগতের শান্তি শৃঙ্খলা মুক্তি এবং মর্যাদা নির্ভর করে কোরআন ও হাদিসের সুশিক্ষার ওপর। অন্যথায় উভয় জগতের মানবীয় জীবনে শুধু অশান্তিই সৃষ্টি হবে। মহান আল্লাহ সবাইকে নেক আমলের জিন্দেগি দান করুন। আমীন।



 

Show all comments
  • AbdulHaque Sylhet ৭ জানুয়ারি, ২০২২, ৪:৫৮ পিএম says : 0
    .মাশা আল্লাহ মোবারক খুতবা আল্লাহ যেন সবাই কে আমল করার তৌফিক দান করেন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ