Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খাবারের সাথে মাইগ্রেনের সম্পর্কখাবারের সাথে মাইগ্রেনের সম্পর্ক

| প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০২২, ১১:৫৭ পিএম

আমাদের দেশে মাথা ব্যথা তথা মাইগ্রেনে আক্রান্ত রোগীর সঠিক কোন পরিসংখ্যান না থাকলেও এটা সহজে বলা যায় যে অনেক মানুষ এদেশে মাইগ্রেনে আক্রান্ত। মাইগ্রেনের ব্যথা বেশ কষ্টকর এবং অনেকেই মাইগ্রেনের ব্যথায় দিনের পর দিন, মাসের পর মাস কষ্ট পাচ্ছেন। যদিও ভালো চিকিৎসা বর্তমানে আছে। আবার একটু সচেতন হলেই আমরা মাইগ্রেন অ্যাটাক অনেকটাই প্রতিরোধ করতে পারি।

অনেক গবেষনায়ই বিভিন্ন খাবারের সাথে মাইগ্রেনের সম্পর্ক পাওয়া গেছে। এসব খাবার খেলে মাইগ্রেনের অ্যাটাক শুরু হতে পারে। মাইগ্রেনের ব্যথা সাধারণত ৪ ঘন্টা থেকে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছে এই ব্যথা থেকে থেকে হচ্ছে। তাই মাইগ্রেনের ব্যথা যাতে বারবার না হয় সে জন্য খাবারের প্রতিও বিশেষ যত্নবান হতে হবে।

১. যে খাবারগুলো খেলে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে সেই সব খাবার মাইগ্রেনের রোগীদের অবশ্যই বর্জন করতে হবে। যাদের মাইগ্রেন আছে তাদের ক্যাফেইন জাতীয় খাবার বর্জন করতে হবে। চা এবং কফিতে ক্যাফেইন থাকে। যাদের মাইগ্রেন আছে তারা চা এবং কফি বেশি খেতে পারবেন না, যখন তখন খেতে পারবেন না। বুঝে পরিমিত মাত্রায় খাবেন। এ ধরনের খাবার বেশী খেলে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে।

২. কৃত্রিম মিষ্টি আমাদের দেশে ভালই জনপ্রিয় হয়েছে। অনেকেই ওজন সচেতনতার কারণে এধরনের আর্টিফিশিয়াল মিষ্টি গ্রহণ করে থাকেন। ওজন বাড়বে না, সুগার খাওয়া হলনা ঠিক আছে কিন্তু এই ধরনের খাবার কারও কারও মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে।

৩. অ্যালকোহল অনেকেরই মাইগ্রেনের এটাক বাড়াতে সাহায্য করে। অ্যালকোহল গ্রহণের প্রবণতা আমাদের দেশে বাড়ছে। অ্যালকোহল খাওয়ার পর পরই মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে।

৪. চকলেটও মাইগ্রেন রোগীদের বর্জন করা উচিত। কারও কারও চকলেট খাওয়ার পরই মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে। চকলেটে ক্যাফেইন থাকে এবং আরো নানা উপাদান আছে যেটা মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়িয়ে দেয়।

৫. প্রসেস করা বিভিন্ন মাংস আমাদের দেশের মানুষ সময়ে সময়ে গ্রহণ করছে। এসব খাবার এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সসেজ এবং হট ডগ জাতীয় খাবার। বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়াজাত করা মাংস খেলেও মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়তে পারে।

৬. পনির খেলে কারও কারও মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে। তাই যাদের মাইগ্রেন আছে তারা পনির জাতীয় খাবার অবশ্যই বর্জন করবেন।

৭. ফ্রোজেন ফুড আমাদের দেশের অনেক মানুষ খেয়ে থাকেন। ফ্রোজেন ফুড মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে। যাদের মাইগ্রেন আছে তারা অবশ্যই এসব খাবার বর্জন করবেন।

৮. খাবারে লবণ বেশি খেতে আমাদের দেশে অনেক মানুষ পছন্দ করেন। যাদের মাইগ্রেন আছে তারা দয়া করে এই কাজটি করবেন না। বিভিন্ন লবণ জাতীয় খাবার বেশি খেলে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে।

মাইগ্রেনের ব্যথা খুব কষ্টকর। যাদের আছে তারাই এর যাতনা বুঝতে পারে। যাদের ব্যথা আছে তারা উপরোক্ত খাবার অবশ্যই বর্জন করবেন। বারবার ব্যথা উঠার অভ্যাস থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করবেন। কারণ মাইগ্রেন প্রতিরোধে বিভিন্ন ভাল ওষুধ বাজারে আজকাল বেশ সহজলভ্য। এসব ওষুধ সঠিক ভাবে খেলে মাইগ্রেনের ব্যথার অ্যাটাক থেকে অনেকটা বেঁচে থাকা যায়। তবে শুধু ওষুধের ওপর নির্ভর করলে হবেনা। ডাক্তারের পরামর্শমত দৈনন্দিন নিয়ম মানতে হবে। যেসব খাবার মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়িয়ে দেয় সেসব খাবার অবশ্যই বর্জন করতে হবে।

ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল
রেজিষ্ট্রার, মেডিসিন বিভাগ,
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খাবারের সাথে মাইগ্রেনের সম্পর্ক
আরও পড়ুন