Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিএনপির কর্মসূচিতে জনস্রোতে সরকার ভীত : ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

বিএনপির কর্মসূচিতে জনস্রোতে ভীত হয়ে সরকার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আবারো মামলা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সারাদেশে প্রায় ৩২টি জেলায় যে শাস্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দাবি আদায়ের প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছি এতে সরকার ভীত হয়ে পড়েছে। ভীত হয়ে আওয়ামী লীগ এবং এই অনির্বাচিত সরকার গণতান্ত্রিক শক্তির উপরে আক্রমণের পর আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে, হামলা করছে, গুলিবর্ষণ করছে, গায়েবী মামলা দিচ্ছে।

গতকাল রোববার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, এসব কর্মসূচিগুলোর মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, এই দেশের জনগণ একবারও চায় না যে, এই অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকুক এবং এভাবে গণতন্ত্রকে ধবংস করুক। এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, দেশনেত্রীর মুক্তি দেশের মানুষ এই মুহুর্তে চান এবং তার চিকিৎসার জন্য বিদেশে এই মুহুর্তে পাঠাতে চান।

সিরাজগঞ্জ, হবিগঞ্জ, ফেনী, টাঙ্গাইল, ঠাকুরগাঁও, গাজীপুর, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন জেলায় অনুষ্ঠিত সমাবেশগুলোতে পুলিশি বাঁধা, হামলার ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে প্রায় ৩২ জেলায় এই দাবিতে আমরা সমাবেশ করেছি। এই সমাবেশগুলোতে জনগণের যে স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহন এটাতে উদ্বিগ্ন হয়ে ভীত হয়ে আওয়ামী লীগের কর্মী-নেতা এবং সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তারা প্রতিটি কর্মসূচি বাঁধা প্রদান করেছে, চেষ্টা করেছে। কখনো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সরাসরি আক্রমণ, কখনো আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দিয়ে আক্রমণ করে আন্দোলনকে দমন করার চেষ্টা করেছে।

তিনি বলেন, অতীতের মতো নির্যাতন, গুম, খুন, গুলিবর্ষণের মধ্য দিয়ে তারা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার যে সংগ্রাম লড়াই তাকে ব্যাহত করতে চায়। আমরা একথা দৃঢ়তার সাথে স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে এবং তারা রাজপথের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তাদের দাবি আদায় করবে, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করবে, দেশনেত্রীর মুক্তি এবং একই সঙ্গে তাকে সুচিকিৎসার বিদেশে প্রেরণ করতে সক্ষম হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে পরবর্তি কর্মসূচি স্থায়ী কমিটির আজকের বৈঠকে নেয়া হবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের সমাবেশে পত্রিকাগুলোতে এসেছে যে, সমস্ত অস্ত্রগুলো অবৈধ। একটা ছবি দেখলাম যে, ই¤েপ্রার্টেড, চক চক করছে নতুন রিভলবার। দেশী নয়, বিদেশী রিভলবার। এই যে দেশের মধ্যে অস্ত্রধারীরা প্রকাশ্যে এসে গেছে- এটা শুভ লক্ষণ নয়। এই অস্ত্রধারীরা হলো, সিরাজগঞ্জের মধ্যপাড়ার বায়েজিদ, দত্তবাড়ীর সুজয়, কোল গয়লার সুমন ও জনি চারটি পিস্তরল নিয়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে হামলা চালায় যা পত্রিকায় ও মিডিয়াতে ছবি প্রকাশিত হয়েছে। এরা সবাই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সদস্য। অথচ এই অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। সন্ত্রাস করবে তারা, আবার তারা বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। আমরা অবিলম্বে অস্ত্রধারীর গ্রেফতার ও তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আমরা তিন দিন আগে প্রশাসনকে জানালাম অস্ত্রধারীরা অস্ত্র নিয়ে রেডি হচ্ছে-আপনারা ব্যবস্থা গ্রহন করুন। তারা ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। এরপর সমাবেশের দিন মারমারি হলো, জনগণ প্রতিহত করলো। এখন পর্যন্ত ৬টা মামলা হয়েছে আমাদের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে সরকার বাদী হয়ে মামলা করেছে ৪টা এবং আওয়ামী লীগের লোকজন করেছে ২টা। আমরা মামলা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের মামলা নেয়া হয়নি। যারা অস্ত্র নিয়ে সমাবেশের দিন ঘুরে বেড়াল, পত্রিকায় ছবি আসলো তাদের বিরুদ্ধে কেনো মামলা হলো না? যারা আক্রান্ত তাদের বিরুদ্ধে সরকার মামলা করল। এই হচ্ছে সিরাজগঞ্জের অবস্থা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশেরে মানুষ এক মুহুর্ত এই সরকারকে দেখতে চায় না। যদি দেখতে চাইতো তাহলে সেদিন সিরাজগঞ্জে এতো মানুষের ঢল নামতো না। আওয়ামী লীগ দেশটাকে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই সময় এসেছে জনগণকে প্রতিরোধ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মশিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও ঢাকা মহানগরের সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন উপস্থিত ছিলেন।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ