বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও তজুমদ্দিন উপজেলার ১টি ইউনিয়নে চতুর্থ ধাপে রোববার ভোট। ইতিমধ্যে তজুমদ্দিন উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ওই পদে ভোট হচ্ছে না। শুধুমাত্র ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে সদস্য এবং সংরক্ষিত আসনের সদস্য পদে ভোটগ্রহণ হবে।
বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ভোট হবে ৭টি ইউনিয়নে। ইতিমধ্যেই ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা থাকলেও প্রশাসন বলছেন ইউপি নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। সেই লক্ষ্যে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে প্রশাসন। দুই ইউনিয়নের অধিকাংশ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে তজুমদ্দিন উপজেলায় সোনাপুর ইউনিয়নের একটি বিচ্ছিন্ন ও দুর্গম চর চর জহিরউদ্দিনে ৫টি ওয়ার্ডের ৫টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, তজুমদ্দিন উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে মোট ৬৩ জন সদস্য এবং সংরক্ষিত আসনের সদস্য প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১৭ হাজার ১০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৫০ ও নারী ভোটার ৮ হাজার ৫৬ জন।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে মোট ৪৩৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৮ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৩১৪ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৮১ জন।
এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৮৪ হাজার ৩৭৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৬ হাজার ৭১৪ জন ও নারী ভোটার ৭১ হাজার ৬৬৩ জন।বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাধারণ ভোটাররা জানান, এবারের ইউপি নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও উপজেলার সব ইউনিয়নেই রয়েছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী। তারা মনে করছেন, অনেক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সাথে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর ভোটের লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি।
তারা আরও জানান, গণসংযোগ নিয়ে এর আগে কয়েকটি ইউনিয়নে দফায় দফায় সংঘর্ষ-সংঘাত, হামলা-পাল্টা হামলা ও সহিংসতা হওয়ায় ওই সব ইউনিয়নগুলোতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাই রোববার ভোটের দিন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ভোট নিয়ে চিন্তিত ভোটাররা।
এদিকে, বোরহানউদ্দিন উপজেলার পক্ষিয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) চেয়ারম্যান প্রার্থী যুবলীগ নেতা আলাউদ্দিন সরদার, দেউলা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) চেয়ারম্যান প্রার্থী আ.লীগ নেতা এডভোকেট একেএম আসাদুজ্জামান বাবুল, টগবী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিমউদদীন হাওলাদার এবং একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী শাহাবুদ্দিন (তালা প্রতীক)সহ অধিকাংশ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
তবে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। তারা জানিয়েছে, নির্বাচনী এলাকায় নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। মাঠে থাকবে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা। এ ছাড়া থাকবে স্টাইকিং ফোর্স, মোবাইল টিম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
রোববারের ইউপি ভোট নিয়ে শনিবার বোরহানউদ্দিন থানায় আয়োজিত এক ব্রিফিং প্যারেডে ভোলার পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলামও জানান, ভোট হবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ। এর জন্য যা যা করার তার সব ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। জনগণের ভয়ের কোনো কারণ নেই। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আগেরদিন শুক্রবার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ৭ ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুর রহমান জানান, ২৬ ডিসেম্বর অবাধ নিরপেক্ষ ও শতভাগ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে ওই উপজেলায় ১৫ জন ম্যাজিস্ট্রেট, ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, র্যাবের ৫টি টিম, বিজিবি ৭টি টিম ও ৭০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একইভাবে তজুমদ্দিন উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের সব ভোটকেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।