নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
নির্ধারিত ৭ দিনের কোয়ারেন্টিন অপ্রত্যাশিতভাবে হয়ে গিয়েছিল ১১ দিন। সেখানেও দেখা দিয়েছিল অজানা শঙ্কা। সব পার করে নিউজিল্যান্ডে এখন মুক্ত হাওয়ায় বাংলাদেশ দল। রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়ায় প্রথম দিনের অনুশীলনে দলের মধ্যে দেখা মিলল ফুরফুরে আমেজ। টানা কয়েকদিনের বন্দি অবস্থা থেকে বেরিয়ে প্রাণভরে নিঃশ্বাস আর মুক্তির আনন্দ যেমন হয় সবার শরীরী ভাষাতে ছিল সেটাই। এমনিতে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেও গত কয়েকদিনে একঘেয়ে বিরক্তি ভর করছিল ক্রিকেটারদের। তাসকিন আহমেদ, ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বিদের কুশল জানতে চাইলেও সেসব বিরক্তির কথাই বারবার উল্লেখ্য করছিলেন। আপাতত সব বিরক্তি উধাও।
গতকাল সকালে ক্রাইস্টচার্চে মূল অনুশীলনের আগে ফুটবল কিংবা ভলিবল খেলে বাংলাদেশ দল। নিজেদের মধ্যে দুই দলে ভাগ হয়ে সেই খেলায় থাকে বিস্তর খুনসুটির পরিবেশ। সেসবের দেখা মিলল এবারও। টিম ডিরেক্টরকেই দেখা গেল ক্রিকেটারদের সঙ্গে সেই খুনসুটির মধ্যমণি হিসেবে। তাইজুল ইসলামের পর নেটে মুশফিকুর রহিমকে বল করতে এলেন খালেদ মাহমুদ সুজন। বিসিবির পাঠানো ভিডিওতে দেখা গেল সুজন বলছেন, ‘নেট বোলার নেই, কি আর করা!’
নিউজিল্যান্ডের চমৎকার প্রাকৃতিক পরবেশ আর সহায়ক আবহাওয়ায় এবার টেস্ট সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুত হওয়ার পালা। প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও জানালেন সেসব কথা। ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশের কোচ জানান, ধীরলয়ে অনুশীলনের তীব্রতা বাড়াবেন তারা, ‘১১ দিন রুমে থাকা খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। এখন পরিষ্কার আকাশের নিচে রৌদ্রজ্জ্বল পরিবেশে ছেলেরা বেশ ফুরফুরে আছে। আগামী এক-দুই দিন কিছুটা হালকা অনুশীলন হবে। ছেলেরা আবার ব্যাটিং-বোলিং শুরু করবে। এরমধ্যে আমরা তাওরাঙ্গা চলে যাব। প্রথম টেস্টের আগে ছয়দিনের একটা কঠোর অনুশীলন চলবে। আশা করছি ছেলেরা তখন টেস্ট ম্যাচের যে ইনটেনসিটি আছে তা ফিরে পাবে।’
পরে প্রধান ডমিঙ্গো আর ব্যাটিং কোচ অ্যাশওয়েল প্রিন্সের সঙ্গে গোল হয়ে বসেছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল হক, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদুল হাসান জয়, সাদমান ইসলাম ও লিটন দাস। তারা সবাই যার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন তিনি মুশফিক। নিউজিল্যান্ডে ব্যাটসম্যানদের কি করলে সফল হওয়া যাবে সেটাই ছিল আলোচনার বিষয়বস্তু। অবসাদ ঝেড়ে ফেলে এখন ক্রিকেটের লড়াইয়ে মন দেওয়ার সময়। সামনে অপেক্ষা করছে যে কঠিন চ্যালেঞ্জ তাতে সফল হওয়ার উপায় তো খুঁজতে হবে।
বাংলাদেশ দলে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিক। অনুমিতভাবে নিউজিল্যান্ডের মাঠেও দলের হয়ে সবচেয়ে খেলার অভিজ্ঞতা তার। সম্ভবত কোচদের কেউই তাকে নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন নিয়ে দলের জুনিয়রদের পরামর্শ দিতে অনুরোধ করেছিলেন। মুশফিক মেলে ধরলেন তার অভিজ্ঞতার ঝুলি। এমনিতে পেস ও বাউন্সি উইকেটে উপমহাদেশের ব্যাটসম্যানদের তীব্র চ্যালেঞ্জ থাকলেও মুশফিক জানালেন, নিউজিল্যান্ডের উইকেটে আছে প্রচুর রান। তা পেতে হলে দেখাতে হবে নিবেদন, ধরতে হবে ধৈর্য, ‘নিউজিল্যান্ডে সাদা বল ও লাল বলে বেশ বড় তফাৎ আছে। লাল বলে শুরুতে বোলারদের জন্য কিছু না কিছু থাকে। কিন্তু কেউ যদি থিতু হতে পারে তাহলে অনেক রান আছে। কারণ এখানকার উইকেটে ভালো বাউন্স থাকে। বল সুন্দর করে ব্যাটে আসে।’
নিউজিল্যান্ডের মাঠে এখন পর্যন্ত ৪ টেস্ট খেলে ৮ ইনিংসে ৩১.৭১ গড়ে মুশফিক করেছেন ২২২ রান। আছে এক সেঞ্চুরি। ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে করেছিলেন ১৫৯ রান। ১৫৯ রানের সেই ইনিংসটাই ম‚লত নিউজিল্যান্ডে মুশফিকের গড়কে করেছে ভদ্রস্থ। ওয়েলিংটনে সেই টেস্টে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৮ উইকেতে ৫৯৫ রানের পাহাড় গড়ে ইনিংস ঘোষণা করেছিল। মুশফিকে ছাপিয়ে আরেকজন ছিলেন সফল। ২১৭ রান করা সাকিব আল হাসান এই সিরিজে নেই।
প্রথম ইনিংসে এত বড় রান করেও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যর্থতায় ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশ। নিউজিল্যাডের মাঠে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে সব সংস্করণ মিলিয়ে ৩৩ ম্যাচ খেলেও জয় নেই বাংলাদেশের, এমনকি কোন টেস্ট ড্রও করতে পারেনি। এবার ভিন্ন কিছু করতে হলে ব্যাটসম্যানদেরই নিতে হবে মূল দায়িত্ব। মুশফিকের কথা মেনে নিউজিল্যান্ডের মাঠে রান বের করার পথে মুমিনুলরা হাঁটতে পারেন কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
আগের সূচি অনুযায়ী, এ সফরে খেলার কথা ছিল দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ- প্রথমটি নিজেদের মধ্যে ভাগ হয়ে, পরেরটি নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে। নববর্ষে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে প্রথম টেস্টের পর দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে ৯ জানুয়ারি, ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে। এর মাঝে তাওরাঙ্গায় একটি অনুশীলন ম্যাচ খেলার কথা মুমিনুলদের। এ সিরিজের জন্য আগামী বৃহস্পতিবার দল ঘোষণা করতে পারে নিউজিল্যান্ড। কনুইয়ের পুরোনো চোটের কারণে খেলতে পারবেন না অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।