বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) বর্তমান নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো. বখতিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমেছে। জেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে নির্বাহী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও সরকারি টাকা আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ক্ষমতা অপব্যবহার, নিয়ম বর্হিভূত ভাবে একই সময়ে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন, চাকরি নিয়োগে ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন ফাঁসসহ নানা অভিযোগে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন তিনি।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তার স্ত্রী ওয়াহিদা আক্তার কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এপিএস। সে সুবাদে জেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পাঁচজনকে টপকে এ পদ বাগিয়ে নেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিভিন্ন কর্মকা-ে তিনি বেপোরোয়া হয়ে উঠেন। চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে ডক্টর শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার বিভিন্ন ধরণের অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আত্মসাত করেছেন সরকারি টাকা। আর এসব কাজে ঠিকাদার রাজ তার অপকর্মের পরামর্শদাতা বলে বিএআরসিতে জনশ্রুতি রয়েছে।
জানা যায়, সার্ক কৃষি সেন্টারের অফিসের মোজাইক, টাইলস, সিলিং বোর্ড, পর্দা, ফার্নিচার এ সমস্ত কাজের ভূয়া বিল ভাউচার দিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সার্ক কৃষি সেন্টারের পঞ্চম তলা থেকে ষষ্ঠ তলার বর্ধিতর কাজটি একটি প্রতিষ্ঠান সর্বনি¤œ দরদাতা হলেও তাকে কাজ করতে দেয়া হয়নি। বরং পছন্দের ঠিকাদার রাজের প্রতিষ্টানের সাথে চুক্তি করতে বাধ্য করেন তিনি। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কাজে প্রস্তাবিত মূল্য বাড়িয়ে দেয়া হয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নিজস্ব ভবনে রাজ লাইন কনস্ট্রাকশনের একটি অফিস করে দিয়েছেন তিনি । এই ভবনে অগ্রণী ব্যাংকের শাখা থাকায় ব্যাংক কর্মকর্তারা ঠিকাদার রাজের চেম্বার ও বহিরাগতদের কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এছাড়া সার্ক কৃষি কেন্দ্রের পাবলিকেশন প্রিন্টিং এর জন্য তার কাছের একটি প্রেসকে টেন্ডার ছাড়াই কার্যাদেশ দেন। এতে অতিরিক্ত চারগুণ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। এটলাছ ১০০ নামের একটি বই প্রকাশের ক্ষেত্রে কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন।
অন্যদিকে, বিএআরসি’র সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট এবং প্রোগ্রামার গ্রেড পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য পছন্দের দুই প্রার্থীর কাছে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সার্ক কৃষি সেন্টারের পরিচালকের দায়িত্বে থাকাবস্থায় তিনি বিএআরসি’র পরিচালক হিসেবে লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন উত্তোলন করছেন। একই সাথে সার্ক থেকে প্রতিমাসে ৭৫০ ডলার করে ভাতা উত্তোলন করেছেন বলে জানা যায়। সরকারের কাছ থেকে বেতন নেয়ার পাশাপাশি ৬৯ মাসে সার্ক কৃষি সেন্টার থেকে প্রায় ৪৩ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। শোনা যাচ্ছে নির্বাহী চেয়ারম্যানের পদে শেখ মো. বখতিয়ার আরো দুই বছর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হওয়ার পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছেন। এতে কৃষিবিজ্ঞানীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এমন অপকর্মের ফলে ফুলে ফেপে উঠতে থাকে তার সম্পত্তির পরিমাণ। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে একটি, উত্তরায় একটি, দিয়াবাড়িতে রাজউকের তৃতীয় ফেজ ব্লক ১৮তে একটি প্লট। এছাড়াও তাদের স্বামী স্ত্রীর নামে আরও তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানা যায়। গাজীপুরের টিএনটি অফিস সংলগ্ন ৫ কাঠা প্লট ক্রয় করেছেন। তথ্য গোপন করে প্রতারণার মাধ্যমে উত্তরা রাজউক এর ৫ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন।
বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, শুধু আমি নই আমার পূর্বে যারা সার্কের পরিচালক ছিল সকলেই দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন নিয়েছে। অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে নির্বাহী চেয়ারম্যান করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করে জেনে নিন কেন আমার নামের প্রস্তাব পাঠাতে বলেছে। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি মিটিংয়ের কথা বলে সংযোগ কেটে দেন।
এ ব্যাপারে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেবাহুল ইসলামের মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।