মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ছোট-বড় সব বয়সের মানুষেরই পিকনিক করতে মজা লাগে। ঘাসের উপর চাদর বিছিয়ে সবাই মিলে খাবার খাওয়ার আনন্দই আলাদা! সুইজারল্যান্ডের দুই শিল্পী বিশাল চাদর তৈরি করে গোটা শহরের মানুষকে নিয়ে ‘বিগনিক’-এর মজা নিচ্ছেন।
শিল্পের খাতিরে বিশাল এক পিকনিকের চাদর তৈরি করা হয়েছে। ‘বিগনিক’ নামের প্রকল্পের আওতায় সুইজারল্যান্ডের উত্তর-পূর্বে সেন্ট গালেন জেলায় মানুষের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সুইস কনসেপ্ট আর্টিস্ট হিসেবে ফ্রাংক ও পাট্রিক রিকলিন নামের দুই যমজ ভাইয়ের মাথায় এই আইডিয়া এসেছিল। প্রকল্পের প্রেরণার উৎস ব্যাখ্যা করে ফ্রাংক বলেন, ‘‘আসলে দাদি আমাদের এমন পিকনিকের্ প্রেরণা দিয়েছিলেন। তিনি সবসময় লাল-সাদা নক্সার চেকার্ড টেবিলক্লথের উপর রাতের খাবার পরিবেশন করতেন। আমাদের সেটা খুব ভালো লাগতো। গত দশ বছর ধরে সেই টেবিলক্লথের নতুন রূপ দেবার চেষ্টা করছি এবং প্রকৃতির কোলে, শহরের মাঝে পেতে দিচ্ছি।’’
ভাই পাট্রিক রিকলিন এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য আরো ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘বিশেষ করে ‘বিগনিক’ প্রকল্পের প্রেক্ষাপটে আমরা সচেতনভাবে সীমা ভাঙতে চাই। শুধু দুটি গ্রীষ্মে নয়, দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে এই উদ্যোগ চালিয়ে যাবার পরিকল্পনা রয়েছে।’’
২০১২ সালে ‘বিগনিক'-এর স্বপ্নের সূত্রপাত ঘটেছিল। জেলার সব মানুষের জন্য একটি করে চাদরের ব্যবস্থা করাই লক্ষ্য। সম্ভবত ২০৪০-এর দশকের শেষের মধ্যেই সেটা সম্ভব হবে। সেই চাদর তখন ১০০টি ফুটবল মাঠের সমান বড় হবে।
১৯৯৯ সালে দুই যমজ ভাই ‘স্টুডিও ফর স্পেশাল ওয়ার্কস’ গড়ে তোলেন। তারা একেবারে অভিনব আর্ট অ্যাকশনের জন্য বিখ্যাত। যেমন খোলা আকাশের নীচে ‘জিরো স্টার হোটেল’ তৈরি করে তারা ভোগবিলাসের নতুন মাত্রা দিতে চেয়েছিলেন। সামাজিক আদানপ্রদানের লক্ষ্যে তারা জুরিখ শহরে পানীয় জলের ফোয়ারা তৈরি করেন।
অতিকায় পিকনিকের চাদরও গভীর স্তরের এক কনসেপ্ট আর্ট। পাট্রিক রিকলিন মনে করেন, ‘‘আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে সরাসরি রাজনৈতিক বার্তা রাখছি না। কিন্তু নিজের একান্ত বৃত্ত ছেড়ে প্রকাশ্যে কাজ করলে অরাজনৈতিক থাকাও সম্ভব নয়। এই চাদরের উপর এমন অপ্রচলিত সমাবেশ সব সীমারেখা ভেঙে দিচ্ছে। সবাই সমান হয়ে উঠছে।’’
শুধু ‘বিগনিক' নয়, সেই প্রকল্পের প্রস্তুতি পর্বেও সেন্ট গালেনের মানুষের অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এত চাদর জোগাড় করতে দুই শিল্পী প্রায়ই স্থানীয় মানুষের বাসায় বেল বাজান। প্রায় সব সময়েই ভাগ্য ভালো থাকে, সবাই তাদের ভিতরে আসতে বলেন। এখনো পর্যন্ত তারা প্রায় ৩,০০০ চাদর সংগ্রহ করেছেন। প্রতি বছর সেই সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
স্কুল, স্টেশন এবং পথচারীদের জন্য নির্দিষ্ট এলাকায় সেই সব চাদর সেলাই করে জোড়া দেওয়া হয়। কেউ কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই কাজে হাত লাগান, বাকিরা পেশাদার দরজি। চারটি করে চাদর জুড়ে দুই দিকেই এক মিটার চল্লিশ সেন্টিমিটার মাপের বড় মডিউল তৈরি করা হয়। তারপর প্রতিটি কোণে আঠালো ভেলক্রো স্ট্রিপ লাগানো হয়। এভাবে সব টুকরো জুড়ে বিশাল অতিকায় এক চাদর সৃষ্টি হয়। সেই কর্মযজ্ঞের আওতায় স্থানীয় মানুষও পরস্পরের সান্নিধ্যে আসেন। ফ্রাংক বলেন, ‘‘নতুন এক সামাজিক ঐতিহ্য সৃষ্টি করাই বিগনিকের লক্ষ্য। কোনো এক সময় এই সৃষ্টিকর্ম সাংস্কৃতিক মূলধন হিসেবে স্বীকৃতি পাবে বলে আমরা নিশ্চিত।’’ জনপ্রিয় এই প্রকল্প সত্যি এক ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। সূত্র: ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।