মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গোটা বিশ্বে ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যবহার বেড়েই চলেছে। আপাতত এশিয়ার কয়েকটি দেশ এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও ইউরোপ দ্রুত গবেষণা ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা সম্বল করে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা নিতে চায়।
ইলেকট্রিক গাড়ির জয়যাত্রা থামার কোনো লক্ষণ নেই। জার্মানিতে এমন গাড়ির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শুধু গত বছরেই প্রায় দুই লাখ ইলেকট্রিক গাড়ি পথে নেমেছে, যা একটা রেকর্ড। সেই প্রবণতা বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা ২০৩০ সালে ইউরোপে নতুন গাড়ির প্রায় তিন-চতুর্থাংশই বিদ্যুৎ শক্তিতে চলবে।
এমন পূর্বাভাসের কারণে জার্মানির গাড়ি শিল্পও নড়েচড়ে বসছে। পর্শে কোম্পানির কর্মকর্তা মিশায়েল স্টাইনার বলেন, ‘‘চলতি দশকে আমরা সম্পূর্ণ ও আংশিক ইলেকট্রিক গাড়ির অনুপাত উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়াতে চাই। তবে শেষ পর্যন্ত ক্রেতারাই পছন্দের গাড়ি বেছে নেবেন। আমাদের শুধু ক্রেতাদের প্রত্যাশা পূরণ করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।'' অর্থাৎ ‘কাস্টমার ইজ কিং' মূলমন্ত্র সম্বল করে ‘মেড ইন জার্মানি' ছাপের প্রতি প্রত্যাশা অনুযায়ী সেরা মান নিশ্চিত করতে হবে। সে কারণে পর্শে জার্মানিতেই ব্যাটারি উৎপাদন করতে চায়।
সেই লক্ষ্যে এই কোম্পানি কাস্টমসেল্স নামের ব্যাটারি প্রস্তুতকারকের সঙ্গে জোট বেঁধে ২০২৪ সাল থেকেই ব্যাটারি উৎপাদন শুরু করতে চায়। সেলফোর্স গ্রুপের সিটিও টর্গে ট্যোনেসেন বলেন, ‘‘আমরা শুধু ‘স্টেট অফ দ্য আর্ট'-এর তুলনায় আরও উন্নত ব্যাটারি প্রযুক্তি সৃষ্টি করতে চাই না। সেইসঙ্গে উৎপাদন প্রযুক্তিও আরও সাশ্রয়ী করে তুলতে চাই, যাতে জার্মানিতেও ন্যায্য মূল্যে ব্যাটারি সেল উৎপাদন করা সম্ভব হয়।''
এখনো পর্যন্ত এশিয়ার কোম্পানিগুলিই এ ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে। কিন্তু সেই পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। জার্মানির সব বড় গাড়ি কোম্পানি দেশের মধ্যে এবং সম্ভব হলে নিজস্ব কারখানায় উৎপাদনের ঘোষণা করেছে। সেই প্রক্রিয়া আরও তরান্বিত করতে জার্মানির ফেডারেল সরকারও প্রায় ৩০০ কোটি ইউরো ব্যয় করে ব্যাটারি সেল গবেষণা ও উৎপাদনের লক্ষ্যে জোরালো মদত করছে।
ইয়ুলিয়ান শ্ভেনৎসেল ২০ বছর ধরে নতুন ব্যাটারি প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করছেন। তার মতে, ‘‘অন্য দেশগুলিও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ব্যাটারি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতির মুখ দেখছে। তাই গতি নিশ্চিত করা জরুরি।'' গোটা বিশ্বে ব্যাটারি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা তুঙ্গে উঠেছে। জার্মানিও সেই দৌড়ে শামিল হয়েছে। তবে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকতে হলে জার্মানিকে এশিয়ার অপেক্ষাকৃত সস্তার ব্যাটারির তুলনায় অনেক উন্নত ও শক্তিশালী প্রযুক্তি সৃষ্টি করতে হবে।
জার্মানির উত্তরে ইউনিভার্সেল নামের কোম্পানি বর্তমানে ব্যাটারির ফয়েল তৈরি করছে। প্রতিযোগীদের তুলনায় সেই মোড়ক আরও ভালোভাবে শক্তি ধারণ করতে পারছে। এভাবে ব্যাটারি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। ফলে ইলেকট্রিক গাড়ির রেঞ্জ আরো বেড়ে যাবে।
কোম্পানির প্রতিনিধি স্টেফান পের্মিয়েন মনে করেন, ‘‘সেটার জন্য আরও উদ্ভাবনী শক্তির প্রয়োজন। বিশেষ করে ইউরোপেই সেই প্রক্রিয়ার গতি আরও বাড়াতে হবে। কারণ বর্তমানে কোরিয়া, চীন ও জাপানের মতো এশিয়ার দেশগুলিতেই ইলেকট্রোমিবিলিটির জন্য প্রয়োজনীয় সেল তৈরি হচ্ছে, ইউরোপে নয়। তবে মনে রাখতে হবে, যে আমরা এশিয়ায় তৈরি পণ্য নকল করছি না। আমরা এখানে উদ্ভাবনের মাধ্যমে রসায়ন, প্রযুক্তি ও উৎপাদন প্রক্রিয়ার প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রগতি আনতে চাই।''
আবার পর্শে কোম্পানিতে ফেরা যাক। অন্য গাড়ি প্রস্তুতকারকের মতো এই স্পোর্টস কার কোম্পানিও মৌলিক পরিবর্তনের মুখে দাঁড়িয়ে। কোম্পানির কর্মকর্তা মিশায়েল স্টাইনার বলেন, ‘‘ইলেকট্রোমিবিলিটির তাৎপর্য সম্পর্কে আমাদের মনে কোনো সংশয় নেই। আমরা ধাপে ধাপে আরও ইলেকট্রিক গাড়ি বাজারে আনবো। ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের ৮০ শতাংশ ক্রেতা ইলেকট্রিক গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নেবেন বলে মনে করছি।''
মোটকথা গাড়ি শিল্পের ভবিষ্যৎ ইলেকট্রিক প্রযুক্তিসর্বস্ব হতে চলেছে। জার্মানি এই বিশাল রূপান্তরের শুধু অংশ হতে চায় না, এ ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকাও রাখতে চায়। ব্যাটারি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এশিয়ার কোম্পানিগুলি আপাতত এগিয়ে থাকলেও সে ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে পারে। সূত্র: ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।