Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মানুষের মল ব্যবহার হবে জ্বালানির কাজে, দাবি বিজ্ঞানীদের

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০২১, ২:০১ পিএম

মানুষের মল যে সারের কাজে লাগে, সে কথা সকলেই জানে। কিন্তু সেই একই বর্জ্য পদার্থ যে শক্তির উৎস হয়েও দাঁড়াতে পারে, এ কথা গোড়াতে অনেকেরই বিশ্বাস হয়নি। কিন্তু শেষমেশ পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেল, মানুষ, মুরগি এবং টার্কির মল হয়ে দাঁড়াতে পারে ফুয়েলের উৎস।

এমন দাবি করেছেন ইসরাইলের বেন-গুরিয়ন ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক বিজ্ঞানী। মাঠে একটি শৌচাগারও তৈরি করে ফেলেছেন তারা, বিস্তারিত পরীক্ষা চালাবার জন্য। তাদের গবেষণা আসলে শুরু হয়েছিল পোলট্রি থেকে পাওয়া বর্জ্য পদার্থ, অর্থাৎ মুরগির মল দিয়েই। তাতে প্রচুর পরিমাণে কার্বন ও নাইট্রোজেন থাকে, যা শক্তি উৎপাদনের জন্য দুটি জরুরি উপাদান। পরে তারা মানুষের মলকেও তাদের গবেষণার অন্তর্ভুক্ত করেন।

প্রথমে মলকে অটোক্লেভে উত্তপ্ত করে এর জীবাণু দূর করে ফেলা হয়, এবং তারপর শুকনো অবস্থায় এনে গুঁড়ো করে ফেলা হয়। পাউডারের মতো করে ফেলে এই মলকে পানিতে মিশিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। সব শেষে নটি ৫০ মিলিলিটার মাপের ল্যাব রিঅ্যাকটরে তা পুরে দেওয়া হয়েছিল। এই রিঅ্যাকটরগুলি উচ্চ চাপ ও তাপে কাজ করতে সক্ষম।

১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বিভিন্ন তাপমাত্রা স্থির করে দেখা হয়েছিল শেষমেশ ওই মলের কী পরিণতি হয়। পানি থাকলেও অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে পুরো প্রক্রিয়াটি ঘটানো হয়, বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে এইচটিসি বা হাইড্রোথার্মাল কার্বোনাইজেশন বলে। এর ফলে পানি ও পুড়ে যাওয়া জৈব অণু মিলে তৈরি হয় বাদামি রঙের এক পদার্থ, বিজ্ঞানীরা যাকে বলেন হাইড্রোচার।

জানা যাচ্ছে, এই হাইড্রোচারকে কয়লার মতো ব্যবহার করা যেতে পারে। কয়লা পুড়িয়ে শক্তি উৎপাদন করে যেসব বিদ্যুৎ প্রকল্প চলে, সেইসব বাণিজ্যিক ফার্নেসেও এটি ব্যবহার করা চলবে বলে জানিয়েছে একটি রিপোর্ট। বিজ্ঞানীরা হিসেব করে জানিয়েছেন, শিল্পে যে পরিমাণ কয়লা ব্যবহার করা হয়, তার অন্তত ১০ শতাংশকে প্রতিস্থাপন করতে পারবে পোলট্রির বর্জ্য।

মানুষের বর্জ্য মুরগি, টার্কি ইত্যাদি পাখির বর্জ্যের তুলনায় আরও বেশি কার্যকরী। কারণ বিভিন্নরকম খাবার খাওয়ার ফলে মানুষের বর্জ্য পদার্থে বেশি পরিমাণে তেল থাকে, যা একে আরও দাহ্য করে তোলে। বিজ্ঞানীদের দাবি যথাযথ হলে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর চাপ অনেকটাই কমিয়ে দেবে এই বিকল্প জ্বালানি। সূত্র: পপুলার সায়েন্স।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসরাইল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ