Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অব্যবস্থাপনায় হারাচ্ছে ঐতিহ্য দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন

টেকনাফ (কক্সবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্পট হলেও অব্যবস্থাপনার কারণে দ্বীপটি তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে । প্রতিবছর পর্যটন মৌসুমে হাজার হাজার দেশি-বিদেশী পর্যটকের সমাগম হয়। টেকনাফের দমদমিয়া থেকে ৬টি জাহাজে পর্যটকরা যাতায়াত করে আসছে। প্রবাল দ্বীপটি আকর্ষণীয় স্পট হলেও স্থানীয়ভাবে তেমন অবকাঠামো দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। পর্যটকদের এ নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করতে শোনা যায়। টেকনাফ টু সেন্টমার্টিন নৌরুটে দিক নির্দেশনামূলক বয়া না থাকায় স্রোতের টানে মিয়ানমারের নৌসীমায় চলে যায় এবং অনেক সময় যাতায়াতকারী জাহাজ চোরাবালিতে আটকে পড়ে। সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বলেছেন, সামনে পর্যটন মৌসুম শুরু হবে এবং দেশি-বিদেশী পর্যটকরা আগমন করবে। এমতাবস্থায় ভগ্ন জেটি মেরামত ও সংস্কার অতীব প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। গেল প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জেটির মাথার একাংশ ভেঙে গেলে জেটিতে ওঠানামা ও ব্যবহার করা একটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের জন্য দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় স্থান হচ্ছে ছেড়াদিয়া দ্বীপ।
পরিবেশ অধিদফতর পর্যটক ও স্থানীয়দের ছেড়াদিয়া দ্বীপে পরিভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করায় পর্যটকের সংখ্যা কমে যাবে। অন্যদিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের একমাত্র আয়ের উৎস ও জীবন-জীবিকায়ণের পথ অনেকাংশে বন্ধ হয়ে যাবে। এমন আশঙ্কা স্থানীয়দের। প্রবালদ্বীপের বসবাসরত জীবিকায়ণের নাফ নদী ও সাগরের মাছ আহরণ বন্ধ এবং বছরে ৪ মাস পর্যটন খাত ছাড়া বিকল্প কোন আয়ের পথ নেই। তাও আবার পর্যটক পরিভ্রমণে পরিবেশ অধিদফতরের ধরা বাধা নিয়মের কারণে দ্বীপবাসী হতাশাগ্রস্ত। এমতাবস্থায় দ্বীপবাসী যাবে কোথায়? এছাড়াও সেন্টমার্টিন দ্বীপের উন্নয়ন এবং স্থানীয়দের গৃহ নির্মাণ ও টয়লেট নির্মাণে সামগ্রী, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন নিয়ে যাওয়ার পথে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পদে পদে তল্লাশির নামে অযথা হয়রানি শিকার হয়ে আসছে। সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ সীমান্তের একটি অংশবিশেষ বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ হলেও দেশের অন্যান্য স্থানের নাগরিকের মতো প্রবালদ্বীপের বসবাসরত মানুষেরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা এবং মৌলিক নাগরিক অধিকার নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সড়কসহ অভ্যন্তরীণ উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা থেকেও মুক্তি পাচ্ছে না। অপরদিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং সাগরের লোনা পানির উচ্চতা বৃদ্ধিতে সেন্টমার্টিন দ্বীপ এখন রীতিমতো হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাগরের ভাঙন থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে রক্ষা করতে দ্বীপের চতুর্দিকে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে। অন্যথায় সেন্টমার্টিন দ্বীপ অচিরেই সাগরে বিলীন হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। এ নিয়ে অভিজ্ঞ মহল এবং পরিবেশবাদীরা এ তথ্য ও উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করেছে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ জানান, সেন্টমার্টিন দ্বীপের উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা দ্বীপবাসীর প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করছে। পর্যটকদের জন্য অবকাঠামো নির্মিত হলেও স্থানীয়রা বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করতে গেলে পরিবেশ অধিদফতরের বাধা চলে আসে। এ নিয়ে স্থানীয়রা মৌলিক নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সেন্টমার্টিন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ